
৮ দফা দাবি নিয়ে রাজপথে এসে দাঁড়িয়েছেন পটুয়াখালীর সনাতনী নাগরিক ও ছাত্র জনতা। রবিবার (১১ আগস্ট) বেলা ১১ টায় পটুয়াখালীর শহীদ হৃদয় চত্বরে (সাবেক ঝাউবন) ৮ দফা দাবি নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন পটুয়াখালীর সনাতনী নাগরিক ও ছাত্র জনতা। ধর্ম-বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে পটুয়াখালীর শান্তিপ্রিয় সকল মানুষ এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
ছাত্র-জনতার প্রবল বিক্ষোভের মুখে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। মুজিব কন্যার দেশত্যাগের পরে সারাদেশ জুড়ে অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়।
বিশেষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চিরকাল যেকোন রাজনৈতিক সংকটকালীন সময়ে বলির পাঁঠা হতে দেখা গিয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের।
তারই প্রতিবাদে রবিবার (১১ আগস্ট) মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সনাতনীরা।
মানববন্ধনে বক্তারা এসব হামলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অতিদ্রুত এর তদন্ত সাপেক্ষে বিচার কার্যকর করার ঘোষণা দেন। যদি তা করা না হয় তবে কঠিন অবস্থানে যাবার কথাও বলেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, একটা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, বাসা বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাচ্ছে। যাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সম্পদ সহজেই ভোগ দখল করে নিতে পারে। আমরা এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই দেশের নাগরিক তবে আমার কেন হামলার শিকার হবো। আমরা এই হামলা ও ভাংচুরের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। আর যদি সারাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপর এই হামলা, ভাঙচুর বন্ধ না হয় তবে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবো বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
“তুমি কে? আমি কে? বাঙালি বাঙালি। আমার দেশ, তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ। সনাতনীদের উপর হামলা কেন? জবাব চাই জবাব চাই। আমার মন্দির ভাঙলো কেনো? জবাব চাই জবাব চাই। আমার মাটি, আমার মা, এদেশ আমি ছাড়বো না। কুরুক্ষেত্রের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেক বার।” এমন নানা স্লোগানে স্লোগানে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সনাতনীদের পাশে থেকে দেশব্যাপী হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলাম ধর্মাবলম্বীর মানুষেরা। এছাড়াও সনাতনীদের এই মানববন্ধন ও ৮ দফা দাবিকে সমর্থন জানিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা।
মানববন্ধন শেষে একটি শান্তিপূর্ণ মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে গিয়ে উপস্থিত হয়ে সনাতনী নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠন করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান, সনাতনী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও সনাতনী বিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করাসহ ৮ দফা দাবিতে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. নূর কুতুবুল আলম ও জেলা পুলিশ সুপার আব্দুস ছালাম এর নিকট ৮ দফা দাবি আদায়ে একটি স্মারক লিপি প্রদান করেন সনাতন অধিকার আন্দোলন এবং ছাত্র জনতা।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর