বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে ও প্রশাসনের পক্ষে থেকে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান করার অভিযোগ এনে শহীদ সালাম—বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু কে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। 

গতকাল শনিবার (১০ আগস্ট) রাত সোয়া ১১টায় শহীদ সালাম—বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা একটি মিছিল নিয়ে শিক্ষক কোয়ার্টারে গেলে ও সেখানে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি। উপস্থিত শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টকে আজ দুপুর ১২টার মধ্যে পদত্যাগ করার আল্টিমেটাম দিলে তিনি পদত্যাগ পত্র জমা দেন। সেখানে তিনি পারিবারিক নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করে পদত্যাগ করেছেন বলে জানান। 

এছাড়া গতকাল রাতে শিক্ষার্থীদের মিছিল নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে শহীদ সালাম—বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু বলেন, এই পদত্যাগের জন্য আমি পূর্ব থেকেই প্রস্তুত ছিলাম। আওয়ামী প্রশাসনের যে অবস্থা এবং দেশের যে পরিস্থিতি তাতে মূলত এটাই আমাদের কাম্য ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীরা যে মিছিল নিয়ে আসলো এভাবে না হয়ে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমেও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত আসতে পারতো। শিক্ষার্থীরা মিছিল ও স্লোগান নিয়ে আসলো এটা উচিত হয়নি। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে আজকে যে শিক্ষার্থীরা এসেছিল তারাই কি পুরো হলের প্রতিনিধিত্ব করে? 

প্রভোস্টের প্রশ্নের জবাবে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের হলের প্রভোস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন। তিনি হলের প্রভোস্ট হয়েও শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নেননি, শিক্ষার্থীদের বিপদে সাহায্য করে নি, শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব নেননি। শিক্ষার্থীরা যখন অনিরাপদ ঠিক তখনই নিজের বাসায় রাতে দুইজন গার্ড রাখতেন আর সম্পূর্ণ হল পাহারা দেওয়ার জন্য রাতে একজন গার্ড রাখতেন। সুতরাং তিনি তার প্রভোস্টের দায়িত্বে থাকার নৈতিক দিক হারিয়েছেন। 

এদিকে প্রভোস্টের পদত্যাগ পত্রে উল্লিখিত বক্তব্যের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা জানান, প্রভোস্ট হলে থাকাকালীন যে নিয়োগ বাণিজ্য করে গেছেন এবং বৈষম্যের পক্ষে ছিলেন সেই অপরাধ ঢাকতে প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছেন এবং মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন। পদত্যাগ পত্রে উল্লিখিত কারণের কোন ভিত্তি নেই।

এছাড়াও প্রভোস্টের বিরুদ্ধে হলের অবকাঠামোগত উন্নয়নে ছিল না তার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ। ছাত্রলীগের সাথে সমঝোতা করে নিয়োগ বাণিজ্য করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

শাকিল/সাএ