জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলকৃত হল উদ্ধার আন্দোলনে নামবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য কাজ করবেন তাঁরা।
সোমবার (১২ আগস্ট) দুপুর দুইটায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয় নুর নবী এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ট্রেজারার মহোদয় তিনি তার স্বপদে বহাল থাকবেন। তার নেতৃত্বে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হল আন্দোলনের কার্যক্রম শুরু হবে। ইতোমধ্যেই ট্রেজারার মহোদয়ের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি শিক্ষারর্থীদের ১৩ দফা দাবি শুনেছেন। তিনি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, ট্রেজারার মহোদয় শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা বাস্তবায়ন করবেন।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এই আন্দোলনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের ১৩ দফা দাবিগুলো হলো;
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রক্টর সহ সম্পূর্ণ প্রক্টরিয়াল বডি, হল প্রভোস্ট ও ছাত্র কল্যান দপ্তরের প্রধান এবং রেজিস্টারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ক্যাম্পাসের ভিতরে লেজুড় ভিত্তিক ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। (ক্যাম্পাসের বাহিরে তার রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারে। এটা যে কারো ব্যক্তি গত ব্যাপার। কিন্তু, ক্যাম্পাসের ভিতরে সবাই সাধারণ ছাত্র।)
৩. শহীদ ও আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সার্বিক খরচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বহন করতে হবে।
৪. আগে ছাত্রলীগের পদধারী ছিল এবং এর উপর ভিত্তি করে ক্যাম্পাসে চাকরি পেয়েছে তারা ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সহ যারা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত, শহীদ ও আহত সহযোদ্ধাদের নিয়ে ঠাট্টা টিটকারি করেছে, তাদের আগামী ২ দিনের মধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে হবে৷
৫. আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে জকসুর নীতিমালা প্রণয়ন করে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. দখল করা হলগুলো অবিলম্বে দখল মুক্ত করতে হবে। এবং মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দিতে হবে।
৭. দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। (সেক্ষেত্রে সেনাবাহিনীকে ক্যম্পাসের বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করতে হবে)।
৮. শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে ।
৯. ক্যাফেটেরিয়ার জন্য বাজেট বরাদ্দ রেখে খাবারের মান উন্নত করতে হবে। এবং অতি শীঘ্রই নতুন ক্যাফেটেরিয়া নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
১০. নারী শিক্ষার্থীদের কমন রুমের মান উন্নত করতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে শক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে।
১১. ক্যাম্পাসের আশেপাশে চাঁদাবাজি, রাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি বন্ধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে।
১২. পোষ্য কোটা বাতিল এবং রাজনৈতিক নিয়োগ-বাণিজ্য আজীবনের জন্য বন্ধ করতে হবে।
১৩. গুচ্ছ পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে স্বান্ত ভর্তি পরীক্ষা নিতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের রূপ দিতে হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর