দ্রব্যমূল্যের ক্রমবর্ধমান ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে। চাল থেকে শুরু করে প্রতিটি পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। বাজারে যথাযথ তদারকি না করার ফলে পণ্যের দাম দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে একের পর এক কারফিউ জারি এবং ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে ক্রেতারা এ সমস্যায় পড়েছেন।তাই এবার নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বিভিন্ন বাজারে শিক্ষার্থীরাই মনিটরিং শুরু করেছে।
সোমাবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এ কার্যক্রম পরিচালনা করে। এসময় শিক্ষার্থীদের সাথে কয়েকজন শিক্ষকও এ কাজে মাঠে নামে। শিক্ষার্থীদের এ কার্যক্রমকে সাধারণ মানুষ স্বাগত জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, তারা প্রতিটি বাজারে টিম গঠন করে মনিটরিং চালাচ্ছে, যাতে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না বাড়াতে পারে। সোমবার সকালে তমালতলা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, মাংসের বাজারে মূল্যতালিকা দেখছেন। তালিকা অনুযায়ী ঠিক দামে বিক্রি হচ্ছে কিনা তাও দেখেন শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বাজারের সব বিক্রেতাকে বলে আসেন তারা যেন কোনো ধরনের চাঁদাবাজি না করেন, নিজেরাও যেন কাউকে চাঁদা না দেন। এ সময় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য পাইকারি বাজারের সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন বিক্রেতারা। এ ছাড়া চিনি স্টক করে রাখা, মাছ ও মুরগির ওজনে কারচুপি, বাজারে চাঁদাবাজি এবং রাস্তার ওপর দোকানপাট, সিএনজিচালিত অটোস্ট্যান্ড পর্যবেক্ষণ করা হয়।বাজারের ভোক্তারা শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। তরুণ প্রজন্মের এই উদ্যোগ আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আশাব্যঞ্জক। তাদের এ ধরনের কার্যক্রম দেখে আমরা মুগ্ধ। পরিচ্ছন্নতা অভিযান, ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, মন্দির পাহারা দেওয়া, এবং আজকের বাজার মনিটরিং কার্যক্রম দেখে আমার বেশ আনন্দিত হয়েছি। আমরা এমন উদ্যোমী শিক্ষার্থীদের নিয়েই আগামীর বাংলাদেশ গড়তে চাই।ব্যবসায়ীরা বলেন, শিক্ষার্থীরা আজ বাজারে এসে আমাদের দোকান ঘুরে ঘুরে মনিটরিং করেছে। কেউ যদি অতিরিক্ত মূল্যে পণ্য বিক্রি করে, তবে তাকে বয়কটের কথা জানিয়েছেন তারা। এছাড়া কেউ যদি কোথাও চাঁদাবাজি করতে আসে, তাদের (শিক্ষার্থীদের) সঙ্গে যোগাযোগ করতেও বলা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।
শিক্ষার্থীরা জানান, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা কাঁচাবাজার, মাছ বাজার, আড়ৎ, পাইকারি এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন পণ্যের মূল্য পর্যবেক্ষণ করছি। সাধারণ মানুষের সবচেয়ে বড় ভোগান্তির জায়গা হলো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। এ কারণেই আমরা উপজেলার সবকটি বাজারে মনিটরিং চালাচ্ছি। আড়ৎদার, পাইকারি এবং খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে দ্রব্যের দাম নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, এখন থেকে সীমিত মুনাফায় বিক্রি করবেন।
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, মূল্য নির্ধারণ এবং সিন্ডিকেট মোকাবিলায় তারা সদা তৎপর। ব্যবসায়ী, ক্রেতা, বিক্রেতারা এই বিষয়ে তাদের সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর