জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) আইন অনুষদের সহযোগী অধ্যাপক জনাব তাপস কুমার দাস ও সুপ্রভাত পালের পদত্যাগ দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো সমাবেশ ও দেয়াল লিখন কর্মসূচি পালন করেছে অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এসময় গতকাল গণমাধ্যমে প্রকাশিত বক্তব্যে তাপস কুমার দাস তার অব্যাহতি দাবিকে 'ধর্মীয় কারণ' বলায় শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখান করে এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেন।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল ১১ টায় সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে জড়ো হয়ে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে করেন এবং দেয়াল লিখন কর্মসূচি শুরু করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীরা সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও আইন অনুষদের সামনে দেয়াল লিখন কর্মসূচি পালন করেন। সমাজবিজ্ঞান অনুষদের বিভিন্ন তলায় দেয়ালে "তাপস- সুপ্রভাত নিপাত যাক, আইন বিভাগ মুক্তি পাক; স্বৈরচার হটাও, আইন বিভাগ বাঁচাও ; জবাব চাই সুপ্রভাত, কেন দিলেন গায়ে হাত; তাপস সুপ্রভাত হটাও, আইন বিভাগ বাঁচাও; আইনের আয়নাঘর, এবার তোরা বন্ধ কর" প্রভৃতি নানা স্লোগান দেয়ালে লিখতে দেখা যায়।
সমাবেশে অংশ নিয়ে ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাদাত কাভী বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থীরা সবসময় জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সর্বক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ছিল। তারা কখনো কোনো সাম্প্রদায়িকতাকে সমর্থন করে নি। আইনের শিক্ষার্থীবৃন্দ সবসময় অসাম্প্রদায়িক অবস্থান বজায় রেখে চলেছে। অন্যায়, অবিচার, জুলুম, নির্যাতন ও ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে সবসময় সোচ্চার ছিল।
৫১ব্যাচের শিক্ষার্থী মালিহা ফেরা বলেন, আমরা এখানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি সেই যে ধর্মেরই হোক না কেনো অন্যায়ের সাথে কোনো আপস নেই। তাপস কুমার দাস স্যার যে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন আমরা তা ঘৃণ্য ভাবে প্রত্যাখান করছি, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
এর আগে, আজ মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাসের বক্তব্যকে 'মিথ্যাচার' বলে উল্লেখ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন আইনের শিক্ষক হিসেবে তিনি এরকম মিথ্যাচার করে শিক্ষকতা পেশাটাকেই কলঙ্কিত করেছেন। তার বক্তব্য ঘৃণাভরে আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম এবং উনাকে অনুরোধ করছি এরকম বিভ্রান্তিকর এবং অসত্য বিবৃতি ফিরিয়ে নেওয়ার। একই সাথে এরকম মিথ্যাচার করা থেকে যাতে বিরত থাকেন। আমরা আইনের শিক্ষার্থী সবসময় অসাম্প্রদায়িক এবং ন্যায়ের পক্ষে। অন্যায়কারী যেই হোক, যে ধর্মেরই হোক, তার বিরুদ্ধে আমরা সবসময় সোচ্চার।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জড়িত শিক্ষার্থীদের হেনস্তা, তাদেরকে দুষ্কৃতকারী হিসেবে আখ্যা দেওয়া, শিক্ষার্থীর গায়ে হাত তোলা, ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন, টুপি, বোরকা ও পর্দা করলে তাদের নানা ভাবে হেনস্তা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সাথে বিরূপ আচরণ, পরিকল্পিতভাবে ফলাফল কমিয়ে দেওয়াসহ নানা অভিযোগে দুই শিক্ষকের পদত্যাগ দাবিতে গত রোববার থেকে আন্দোলন শুরু করেন আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর