ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন কারখানার ঝুট দখল চেষ্টাকালে স্থানীয়দের তোপের মুখে পরে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মাফ চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার (১৪ই আগস্ট) সাভারের বাড়ইপাড়া তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেড নামের কারখানা এলাকায় গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়। এব্যাপারে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মোহনের ছবি সম্বলিত একটি পোস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওই পোস্টে লেখা হয়, আসাদুজ্জামান মোহন ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারী আর আওয়ামী লীগের দালালের সহযোগিতায় বাড়ইপাড়া টেক্সটাইলে ওয়েস্টেজ নেওয়ার জন্য আসে। আসার পরে এলাকাবাসী তাকে তিনঘণ্টা আটকে রাখে। পরে ক্ষমা চেয়ে তিনি এলাকা থেকে বিদায় হন। এরকম নেতা দলের জন্য ক্ষতিকর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে এই কারখানার ঝুট ব্যবসা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গেল নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাইফুল ইসলাম সংসদ সদন্য নির্বাচিত হওয়ার পর একটি পক্ষ ঝুট ব্যবসা দখলে নেয়। তবে ৫ই আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের মুখে সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। সেই সুযোগে কারখানা দখলে চেষ্টা চালাচ্ছেন বিএনপির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন। গত ১৩ই আগস্ট বিকেলে কারখানার ঝুট অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু করেন। এখবর ছড়িয়ে পরলে কারখানার ভিতরের অবরুদ্ধ করে রাখে স্থানীয়রা। প্রায় তিনঘন্টা পর ক্ষমা চেয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে মোহন।
স্থানীয়রা বলেন, গত কয়েক বছর ধরেই এই কারখানার ঝুট নিয়ে অনেক দ্বন্দ্ব ও দখল চেষ্টা চলছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে নতুন করে কোন হতাহত চান না তারা। এতে যে কেউ আসলেও এখন আর বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না। এলাকাবাসী সবাই এক রয়েছে যেকোনো বিশৃঙ্খলা প্রতিরোধ এলাকাবাসীই করবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোর্শেদ বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে কারখানার ভিতরের প্রবেশ করে স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন ও তার সহযোগীরা। পরে কারখানা নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঝুট বের করার প্রস্তুতি নেন তিনি। এতে অপর এক দল হামলার প্রস্তুতি নেয়। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে স্থানীয়রা এক হয়ে কারখানার সামনে অবস্থান নেন। এসময় আসাদুজ্জামান মোহন ভিতরে আটকা পরেন। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এলাকা থেকে চলে যান তিনি।
দখল চেষ্টার ঘটনা জানতে যোগাযোগ করা হলে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান মোহন বলেন, আমি কারখানার এক কর্মকর্তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য গিয়েছিলাম। কোন ধরনের ঝুট ব্যবসা দখল চেষ্টা আমি করি নাই। আর এধরনের ঘটনাও ঘটে নাই। আমি তো সাক্ষাৎ শেষে সেখান থেকে চলে এসেছি। আসার পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে তানজিলা টেক্সটাইল লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আমি ব্যাংকে রয়েছে। ১০ মিনিট পরে আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সচিব নাজমুল হাসান অভি বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে দলের ভাবমূর্তি নষ্টের প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর