শেখ হাসিনা সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে গিয়ে শহীদ হন লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা উপজেলার সুজন হোসেন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী সন্তান সুজনকে হারিয়ে সুজনের পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছেন। পরিবারের সচ্ছলতা ফেরাতে বাড়ি ছেড়ে ঢাকা আশুলিয়ায় একটি গার্মেন্টসে চাকুরি করতে যাওয়া সুজন। গত ৫ই আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় মিছিলে যোগ দেন এবং পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
শহীদ সুজনের স্বজনেরা জানায় ঢাকার আশুলিয়ায় গত ৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দিয়ে মিছিলে যায় সুজন। সেখানে পুলিশের গুলিতে আহত হলে সহযোদ্ধারা তাকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে নেওয়ার পথে পথেই সুজনের মৃত্যু হয়। পরদিন(৬ জুলাই) শহিদ সুজন হোসেনের মৃত দেহ গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল থেকে তার নিজ গ্রামে নেওয়া হয়। সন্তানের মৃত্যুর খবরে পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়ে। পুরো এলাকা জুড়ে শুরু হয় শোকের মাতম। ঐ দিন বাদ আছর তার জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়।
শহিদ সুজন হোসেনের গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবী গ্রামে। সহিদুল ইসলাম ও রিজিয়া বেগম দম্পত্তির একমাত্র পুত্র সন্তান সুজন হোসেন। শারীরিক প্রতিবন্ধী বাবা শহিদুল ইসলাম বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়ে আছেন। একমাত্র উপার্জনক্ষম সুজন হোসেনের এমন মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে।
সুজনের বাবা সহিদুল ইসলাম বলেন,পাঁচজনের অভাবী সংসারের হাল ধরেছিল একমাত্র ছেলে, পুলিশের গুলিতে কলিজা ছেড়া ধন সেই ছেলে নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর পুরোপুরি থেমে গেছে সেই সংসারের চাকা। ছয় আগস্ট সুজনের মরদেহ বাড়িতে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত খেয়ে না খেয়ে দিন কাটিয়েছে তার পরিবারের বাকি সদস্যরা। কম বয়সে সংসারের হাল ধরে দুই বোনের বিয়ে দিয়েছিল সুজন। বাড়িতে রয়েছে তার আরও একটি ছোট বোন। যৌতুকের টাকা দিতে না পারায় এক বোন তার সন্তানসহ আবার ফিরে এসেছেন বাবার বাড়িতে। হতবিহ্বল মা-বাবা ও বোনদের পাশে স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন প্রতিবেশীরা। দেশের দায়িত্ব দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও স্থানীয় বিত্তশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতা পেলে কিছুটা হলেও কষ্ট কমবে বিধ্বস্ত এই পরিবারের। অসচ্ছল পরিবারটির পাশে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যক্তি বা দল দাঁড়ায় নাই। শহিদ সুজন হোসেনের শহিদী মর্যাদা নিশ্চিত হবে কিনা এ নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছে পরিবারটি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর