
ভোলার চরফ্যাশনে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক হত্যায় জড়িত যুবলীগ নেতা লোকমান মাতাব্বর'কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মহিপুর মৎস্য আড়ত থেকে আটক করে মহিপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন স্থানীয়রা।
আটককৃত লোকমান মাতাব্বর উপজেলার হাজারীগঞ্জ ইউনিয়ন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নান্নু মাতাব্বরের ছেলে এবং সে শশীভূষণ থানা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
নিহত আবদুর রাজ্জাক উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়ন ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত হোসেন মিয়ার ছেলে। রাজ্জাক ২০১৫ সালে উপজেলা যুবদলের সভাপতি ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কোরবানির ঈদের দিন রাত সাড়ে ১১ টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের দিকে যাচ্ছিলেন চরফ্যাশন উপজেলা যুবদলের সভাপতি রাজ্জাক।
চেয়ারম্যান বাজার পৌঁছালে যুবলীগ নেতা লোকমান মাতাব্বরের নেতৃত্বে একদল অস্ত্রধারী তার পথ আটকে বেড়িবাঁধের ওপরে তাকে নৃশংসভাবে পিটিয়ে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ঘটনাস্থলে ফেলে দেয়। পরে আহত অবস্থায় যুবদল নেতা রাজ্জাককে স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার অবস্থা বেগতিক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভোলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে গত ২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ হত্যা মামলা দায়ের করা হলে লোকমান মাতব্বর আওয়ামীলীগ করায় এবং ক্ষমতার দাপটে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে নাই।
আরও জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ত্যাগের পর গা-ঢাকা দেন যুবলীগ নেতা লোকমান মাতব্বর। গত ১৫ আগস্ট বৃহস্পতিবার তিনি মহিপুর একটি মৎস্য আড়ৎদে আত্মগোপনে আছেন এমন খবরের ভিত্তিতে সেখানকার স্থানীয়রা ওই মৎস্য আড়ৎটি ঘেরাও করে তাকে আটকের পর মহিপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, আওয়ামীলীগের ক্ষততার আমলে যুবলীগ নেতা লোকমান পুরো শশীভূষণ থানা এলাকা সহ হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মাদক ব্যবসা সহ বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়াতেন। কেউ এসবের প্রতিবাদ করলে তার হাতে লঞ্চিত হতে হয়েছে অনেকেই। তার ক্ষমতার দপটে কেউই প্রতিবাদ করতে সাহস পাননি। তার ক্ষমতার দাপটে অত্র এলাকায় দুর্নীতির আখড়া তৈরি করেছেন। এবং রীতি মতো লোকমান মাতব্বর আঙুল ফুলে গলা গাছ হয়েছেন। তার কঠিন বিচার হাওয়ার দাবী জানিয়েছেন তারা।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, লোকমান মাতাব্বর'কে মহিপুর একটি মৎস্য আড়ত থেকে স্থানীয়রা আটকের পর পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। শুক্রবার সকালে ভোলার চরফ্যাশন থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাখাওয়াত হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসামী লোকমান মাতব্বরের বিরুদ্ধে একটি নিয়মিত মামলা রুজি করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর