
কক্সবাজারের উখিয়ায় পিতৃহীন অসহায় এক পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। এই ঘটনায় শনিবার রাতে চবির ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী আশরাফুননেছা তানিয়া বাদী হয়ে উখিয়া থানায় ১১ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে।
হামলায় আহতরা হলেন, উপজেলার পালংখালীর রহমতের বিল এলাকার মৃত মো. হারুনের স্ত্রী হাফিজা বেগম (৪৯), তার দুই মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ফারিহা ফারহানা পুষ্প (২১) ও মামলার বাদী আশরাফুননেছা তানিয়া (২৩)।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড রহমতেরবিল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
মামলার আসামিরা হলেন, রহমতেরবিল এলাকার মৃত মুজিবুল হকের ছেলে আতাউর রহমান (৪০), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪০) ও মেয়ে আতেকা (২১); ফজলুর রহমান (৪২), তার স্ত্রী মাইমুনা বেগম (৪২), ছেলে মো. তুহিন (২২) ও মেয়ে হাকিমা (২২); একই এলাকার মৃত মো. সাকেরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩০); টেকনাফ উপজেলার লম্বরি এলাকার আনোয়ারের ছেলে মো. ইসমাঈল (৪৫), তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) ও মেয়ে পুতু মনি (২৩)। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে স্থানীয়রা দাবি করেছেন।
এজাহারে ভুক্তভোগীরা উল্লেখ করেছে, পূর্ব শত্রুতার জেরে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্র, দা-ছুরি ও লোহার রড দিয়ে চবির দুই শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের উপর এলোপাতাড়ি হামলা হামলা চালানো হয়। এতে তারা মারাত্মকভাবে আহত হয়। এ সময় মারধরের ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করতে চাইলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত একটি স্মার্টফোন ছিনিয়ে নিয়ে টেনেহিঁচড়ে মারধর করে শ্লীলতাহানি করে। এসময় তারা চিৎকার চেঁচামেচি করলে প্রাণে মেরে লাশ গুম করার হুমকি ধামকি দিয়ে চলে যায় অভিযুক্তরা।
স্থানীয় জুলিয়া আক্তার, শামশুল আলমসহ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে অভিযুক্তরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানোর পাশাপাশি চবির দুই শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পারিবারিক দুর্বলতাকে পুঁজি করে ভুক্তভোগীদের ওপর হামলা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হামলাকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব ও দাপট দেখিয়ে দখলবাজি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে তারা। পিতৃহীন অসহায় একটি নিরীহ পরিবারের নারী সদস্যের ওপর হামলা চালাতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। অভিযুক্তরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তোয়াক্কা করে না বলে মন্তব্য করেন এই জনপ্রতিনিধি।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন। তিনি জানান, এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
এদিকে এই হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি করেছে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর সহপাঠী, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও উখিয়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর