বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে প্রবাসে এনআইডি সেবার সকল কার্যক্রমে এসেছে ধীরগতি।এর ফলে নতুন করে উদ্বোধন ও কার্ড বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে প্রবাসে এনআইডি প্রদানের সকল কার্যক্রম এখন প্রায় স্থগিত হয়ে আছে।আবার প্রবাসীদের আবেদনও কমেছে, এক সঙ্গে নিরাপত্তার কারণে আবেদনের তদন্ত করতে পারছে না মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
জানাগেছে, গত ২৩ জুলাই সৌদি আরবের রিয়াদে ও ২৪ জুলাই জেদ্দায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধন করার ছিল। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বলে সকল প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে কর্মসূচি বাতিল করা হয়। এছাড়া পরিকল্পনার আওতায় নেওয়া অন্যান্য দেশেও কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্দান, সিংগাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ ও কানাডাতে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন,আমাদোর প্রবাসে এনআইডি সেবার সকল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট দূতাবাস নির্ভর পরিচালনা করা হয়। এখন সরকার পরিবর্তন ফলে ওই সব দূতাবাসগুলোতে নানা রকম পরিবর্তন আসছে এতে করে অনেক দেশ থেকে কূটনৈতিকদের নিজ দেশে ফেরত আসতে বলা হয়েছে। এতে করে প্রবাসে এনআইডি সেবার কার্যক্রম আবার কবে স্বাভাবিকভাবে চালু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
জানাগেছে, প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশেই জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ কার্যক্রমে আবেদন পড়েছে ২২ হাজারের মতো। এর মধ্যে তদন্ত শেষে অনুমোদিত আবেদনের পাঁচ হাজারের মতো। এদের মধ্যে বিরাট অংশের তদন্ত এখনো সম্পন্ন হয়নি।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগটি হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনের ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মাঝে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছর ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থারত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আবর, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়।
সে সময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সতত্যা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।
কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জাতীয় এর সর্বশেষ খবর