পঞ্চগড়ে স্কুলের জমি দাবী করে ইটের দেওয়াল নির্মাণকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ছাত্রী এবং জমির মালিকদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা হাড়িভাষা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটে। এতে করে পাঁচজন ছাত্রী এবং একজন শিক্ষক এবং জমির মালিকানা দাবিদারদের একজন মহিলা আহত হয়েছেন।
আহত ছাত্রীরা হলেন লিপি, মিথিলা, জুঁই, জ্যোতি, দোলা। তারা সবাই বিদ্যালয়টিতে নবম দশম শ্রেণিতে পড়–য়া। বর্তমানে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন । সেই সাথে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক শামস কিবরিয়া। জমি দাবী করা নওশের আলী খাঁ এর ভাইয়ের বউ আনোয়ারা বেগমকে ১০ থেকে ১২ জন কিল ঘুসি সহ মারধর করায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ কিছুদিন থেকে নওশের আলি খা পক্ষের ২২ শতক জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি নওশের আলী স্কুলের দখল করা ২২ শতক জমি নিজেদের দাবী করে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের সালিশি বৈঠক হওয়ার কথা। সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়টির দেওয়াল নির্মাণের জন্য প্রস্তুতি নেন।
এ সময় নওশের আলী ও তার পরিবারের লোকজন দেওয়াল নির্মাণে বাঁধা দেন। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কিবরিয়া ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হলে। বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা প্রধান শিক্ষক কে বাঁচাতে আসেন। দুই পক্ষের মধ্যে ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং মারামারির ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনার পরপরই উত্তপ্ত হয়ে উঠে ওই এলাকা। বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা। এক পর্যায়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে মাইনপোতা নামক এলাকায় গিয়ে হাড়িভাসা-পঞ্চগড় সড়ক অবরোধ করে তারা। পরে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বায়ক ফজলে রাব্বী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
হাড়িভাষা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামস কিবরিয়া প্রধান জানান, প্রথমে আমি নওশের আলী পক্ষের কাছে হামলার স্বীকার হয়েছি। আমার ছাত্রীদের উপরও হামলা করা হয়েছে। সরকারিভাবে দেওয়াল নির্মাণ কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিকাদারের লোকজন। এ সময় হামলা করা হয়েছে। বর্তমানে পঞ্চগড় সদর থানায় নওশের আলিকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, স্কুলের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসছি। শিক্ষার্থীদের কথা শুনেছি, সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতের কথা বলে ছাত্রীদের আশ্বস্ত করা হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর