• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৭ ঘন্টা পূর্বে
আহসান হাবীব
জাবি থেকে
প্রকাশিত : ১৯ আগস্ট, ২০২৪, ০৯:৩০ রাত
bd24live style=

কে হচ্ছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী উপাচার্য?

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতনের পর গত ৭ আগস্ট পদত্যাগ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম। এছাড়া উপ-উপাচার্য (শিক্ষা), উপ-উপাচার্য (প্রশাসন), রেজিস্ট্রার, কোশাধ্যক্ষ ও প্রক্টর পদে থাকা আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরাও পদত্যাগ করেছেন। উপাচার্যের পদ সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় থমকে আছে অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম।

গত ১১ আগস্ট থেকে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু করার ঘোষণা দেয়া হলেও শীর্ষ পদগুলোতে শূন্যতা থাকায় স্বাভাবিক হয়নি শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে দ্রুত উপাচার্য নিয়োগ সময়ের দাবি।

এরই মধ্যে নতুন উপাচার্য পদে আলোচনায় রয়েছে আট শিক্ষকের নাম। এছাড়া তালিকায় অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন শিক্ষকের নামও রয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। তবে অবসরপ্রাপ্তদের উপাচার্য হিসেবে চান না বলে জানিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা শিক্ষক হিসেবে সৎ, প্রশাসক হিসেবে দক্ষ ও যোগ্য, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া পূরণে সমর্থ একজন ব্যক্তি যেন উপাচার্য নির্বাচিত হন। নতুন উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ নজর দেবেন বলেও প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কেমন উপাচার্য চান জানতে চাইলে দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আমিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে এমন একজন সৎ, যোগ্য ও শিক্ষার্থী বান্ধব শিক্ষককে চাই যিনি সকল ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন। আধুনিক,নিরাপদ, সবুজ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এক সুন্দর ক্যাম্পাস আমাদের উপহার দিতে পারবেন এমন একজন দক্ষ, নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন শিক্ষককেই আমরা উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই।

উপাচার্য হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা যাদের:-

জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর ১১(১) ধারা অনুযায়ী উপাচার্য পদে সিনেটে সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে তিন সদস্যের প্যানেল নির্বাচন করা হয়। সেই প্যানেল থেকে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য যেকোনো একজনকে চার বছরের জন্য নির্ধারিত শর্তাবলি সাপেক্ষে নিয়োগ দেন। একই ব্যক্তি এই পদে পুনরায় আরো চার বছর দায়িত্ব পালনের যোগ্য হবেন। এছাড়া অ্যাক্টের ১১(২) ধারা অনুসারে যদি ছুটি, অসুস্থতা, পদত্যাগ বা অন্য কোনো কারণে উপাচার্যের পদে শূন্য হলে আচার্য উক্ত পদে দায়িত্ব পালনের ব্যবস্থা করবেন। তবে রেজিস্ট্রার না থাকায় উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের সুযোগ নেই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে নতুন উপাচার্য হিসেবে আলোচনায় এসেছে আট শিক্ষকের নাম। যেহেতু প্যানেল নির্বাচনের সুযোগ নেই, তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই এ পদে নিয়োগ দিবেন বলে জানা গেছে। তবে এ তালিকায় প্রাধান্য পাবে শিক্ষার্থীদের পছন্দ। অন্যথায় ফের আন্দোলনের আভাস রয়েছে।

আলোচনায় থাকা শিক্ষকরা হলেন- পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন রুনু, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক শামছুল আলম, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, এবং গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের ডিন আব্দুর রব। এদের মধ্যে সোহেল আহমেদ আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। এছাড়া গোলাম রব্বানী ব্যতীত বাকিরা বিএনপিপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত।

আলোচিত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। তিনি পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি, নির্বাচিত সিনেট সদস্য, প্রকৃতি সংরক্ষণ উদ্যোগ ফোরামের উপদেষ্টা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার ১৯টি গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের দায়িত্ব পালন করেছেন। যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশেও তাকে দেখা গেছে।

প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সোহেল আহমেদের নামও আছে আলোচনায়। তিনি বর্তমানে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে প্রক্টর, হল প্রভোস্ট এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে তিনি ৪৫টি গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে ছিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশে। সর্বশেষ কোটা সংস্কার আন্দোলনেও শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে দেখা গেছে তাকে। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন এবং কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন সময়ে ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে কাজ করেছেন।

রয়েছেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান। বিএনপিপন্থি হিসেবে পরিচিত হলেও জাবির এই অধ্যাপক যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে সুনাম ও আস্থা কুড়িয়েছেন। তিনি শিক্ষকদের সংগঠন ‘জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম’ জাবি শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতির পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক ও টক-শো ব্যক্তিত্ব হিসেবেও তার পরিচিতি রয়েছে। তিনি বাংলাদেশ ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক, জাবি শিক্ষক সমিতির সম্পাদকসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট, সিন্ডিকেট, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মেম্বার, হল প্রাধ্যক্ষসহ প্রশাসনিক দায়িত্বও পালন করেছেন।

আলোচনায় আরও আছেন ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মাফরুহি সাত্তার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেটের নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। পাশাপাশি তিনি শিক্ষক সমিতির সম্পাদক, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, বিভাগীয় সভাপতিসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি বাংলাদেশ জার্নাল অফ লাইফ সায়েন্সের সম্পাদকীয় বোর্ডে ছিলেন। তিনি এডি সায়েন্টিফিক ইনডেক্স র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশে ৭৮ তম স্থান অর্জন করেছেন। এছাড়া যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলন-সংগ্রামে শিক্ষার্থীদের পাশে তাকে দেখা গেছে।

রয়েছেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে বিএ (অনার্স), এমএ, এমফিল এবং নয়া দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি পূর্ববঙ্গের অর্থনৈতিক ইতিহাস (মধ্যযুগীয়),বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ইতিহাস, সভ্যতার ইতিহাস, বাংলাদেশের উত্থান এবং দক্ষিণ এশীয় বিষয়ক বিষয়ে পড়ান। তিনি বর্তমানে নির্বাচিত সিনেটর এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অফ অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য। এছাড়া তিনি জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের সহ-সভাপতি, আনন্দন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও উপদেষ্টা এবং রোটারাক্ট ক্লাব অফ জাহাঙ্গীরনগর এর সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছেন।

আলোচনায় আছেন আরেক অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের প্রভোস্ট, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান, পরিবহণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক, উচ্চ শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য এবং নির্বাচিত সিনেটর ও সিন্ডিকেট সদস্য সহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশেও থেকেছেন। এছাড়া তার অসংখ্য গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে।

আলোচনায় রয়েছেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানাও। সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বিভাগের কার্যালয় থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলে তিনি বেশ আলোচিত হয়েছেন। অধ্যাপক শামীমার ১৪ টি গবেষণা প্রবন্ধ এবং একটি গ্রন্থ রয়েছে। এছাড়া হল প্রভোস্ট, ওয়ার্ডেন সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি সিনেটে নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধি।

এদিকে অবসরপ্রাপ্ত কয়েকজন অধ্যাপকের নামও আলোচনায় উঠেছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, আমির হোসেন প্রমুখ। তবে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকদের উপাচার্য হিসেবে চান না শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ।

গত ১৫ জুলাই শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে গিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও বহিরাগত সন্ত্রাসীর হামলায় আহত শিক্ষক অধ্যাপক লুৎফুল এলাহি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মতামত দিতে গিয়ে জানান, ‘অবসরে যাওয়াদের ভিসির দায়িত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি ঐ সব ভিসিদের কোনো দায়িত্ববোধ থাকে না। কেননা তাদের মেয়াদ শেষ হলেই তারা শিক্ষকদের মধ্যে আর ফিরে আসবেন না। ফলে দুর্নীতি, লুটপাট আর নিয়োগ বাণিজ্যের দিকেই তাদের মনোযোগ থাকে। আবার একজনকে একাধিকবার দায়িত্ব দেয়ায় তারা যেমন স্বেচ্ছাচারী হয়ে ওঠে, তেমনি স্বৈরাচারী সিন্ডিকেট গড়ে তুলে দুর্নীতির বলয়কে আরো প্রশস্ত করে তোলে। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অবসরপ্রাপ্তদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্ব না দেওয়াই শ্রেয়।’

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com