
শিক্ষকদের সঠিক সময় প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় পর্যবেক্ষণ জন্য বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো ব্যবহারের জন্য বগুড়ার ধুনট উপজেলায় সরকার ৪০ লাখ টাকা ব্যয় করে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো ক্রয় করেছে। এগুলো ব্যবহার না হওয়ায় ২০২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য কেনা সেই প্রায় ৪০ লাখ টাকার বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো বিকল হয়ে পড়ে আছে। ফলে সকারের সম্পূর্ণ টাকাই গচ্চা গেছে বলে অভিযোগ পওয়া গেছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার ২০২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের হাজিরা পর্যবেক্ষণ করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো ক্রয় করে তা বসানোর নির্দেশ দেয়। ফলে ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কক্ষে হাজিরা যন্ত্রগুলো স্থাপন করা হয়। তবে হাজিরা যন্ত্র ক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।
তৎকালীন শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক সমিতি ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সিন্ডিকেট করে কমমূল্যে নিম্নমানের প্রতিটি হাজিরা যন্ত্র করে ক্রয় করেন। অথচ বাৎসরিক স্লিপ ফান্ডের টাকা থেকে প্রতিটি প্রায় ২০ হাজার টাকা ব্যয় করে এসব যন্ত্র বসানো হয়েছে বলে খরচ দেখানো হয়। তাতে মোট খরচ হয় ৪০ লাখ ৪০ হাজার টকা। তবে এসব হাজিরা মেশিনের কার্যক্রম চলে এক থেকে দুই মাস।
এরপর দীর্ঘদিন ধরে হাজিরা যন্ত্রের ব্যবহার বন্ধ। শিক্ষকদের দাবি, যন্ত্রগুলো নষ্ট হওয়ায় ব্যবহার করা যাচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসতে দেরি করেন। অনেকে দুপুরে ছুটি দিয়ে দেন।
এ জন্য যন্ত্রের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে সঠিক সময়ে উপস্থিত ও ছুটির সময় হাজিরা মেশিনে আঙুলের ছাপ দেবেন। শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই সরকার এ পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে অভিযোগ আছে, অনেক শিক্ষকই চান না বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো চালু থাকুক।
কারণ প্রায় প্রতিদিনই শিক্ষা অফিসের নাম ভাঙিয়ে অনেক শিক্ষক রাজনৈতিক, সামাজিক অনুষ্ঠান ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সময় কাটান। ফলে তাদের মধ্যে অনেকেই এসব মেশিন কৌশলে নষ্ট করছেন। এছাড়া কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও সঠিক তত্ত্বাবধানের কারণেও দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো।
শিক্ষকরা জানান, শিক্ষা কর্মকর্তার চিঠি পেয়ে ডিজিটাল বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো বসিয়েছেন। কিন্তু কখনোই কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হয়নি। শিক্ষা কর্মকর্তারাও বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো চালু রাখা ও তার তথ্য সংরক্ষণ করার তাগিদ দেননি। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার কারণে এখন যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গেছে।
ধুনট উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বলেন, বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো কেনার সময় আমি এই কর্মস্থলে ছিলাম না। তবে এখানে যোগদানের পর জানতে পেরেছি প্রতিটি বিদ্যালয়ের বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্রগুলো নষ্ট হয়ে আছে। বর্তমানে শিক্ষা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলতে পারবেন বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর