• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০২ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৬ ঘন্টা পূর্বে
সাজ্জাদুল আলম শাওন
জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২৪, ০৮:৫৮ রাত
bd24live style=

স্বামী শিক্ষক, স্ত্রী আয়া: কর্মস্থলে উপস্থিত না হয়েই নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

স্বামী শিক্ষক আর স্ত্রী আয়া। আওয়ামী লীগের দাপটে মাসের পর মাস দায়িত্ব পালন না করেই নিয়মিত উত্তোলন করে আসছেন বেতনভাতা। সুপারের যোগসাজশে একইসাথে চলছে নানা অনিয়ম ও বহিরাগত ক্যাডার দিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের হয়রানি। এমনই ঘটনার অভিযোগ মিলেছে জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের পাটাবুগা দাখিল মাদরাসায়। ধুরন্ধর শিক্ষকের নাম মো. রমজান আলী। তার স্ত্রী আঞ্জুমনোয়ারা একই মাদরাসার চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী (আয়া)।

অভিযুক্ত ওই দুইজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে দুইদিন ধরে ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে মাদরাসায় সরেজমিনে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, পাটাবুগা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক রমজান আলী ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটির সদস্য (শিক্ষক প্রতিনিধি) হওয়ার সুবাদে প্রভাব খাটিয়ে তার স্ত্রী আঞ্জুমনোয়ারাকে একই মাদরাসায় আয়া পদে নিয়োগ দেন। এরপর প্রায় দুই বছর ধরেই আয়া আঞ্জুমনোয়ারা তার স্বামীর প্রভাব ও সুপারিনটেনডেন্ট আইয়ুব আলীর যোগসাজশে মাদরাসায় উপস্থিত না হয়েই নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করে আসছেন। তিনি মাসে মাত্র ১-২ দিন উপস্থিত হয়ে হাজিরা খাতায় পুরো মাসের স্বাক্ষর একসাথে দিয়ে যান।

অভিযোগ রয়েছে, আয়ার স্বামী ও শিক্ষক রমজান আলী পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে তিনিও মাদরাসায় নিয়মিত পাঠদান করান না। স্বামী-স্ত্রীর উগ্র আচরণের ফলে তাদের এহেন কার্যকলাপের প্রতিবাদ করাও সাহস নেই কারও। রমজান আলী বহিরাগত ক্যাডার নিয়ে নিরীহ শিক্ষক-কর্মচারীদের হুমকি ধামকি, মিথ্যা মামলা আসামি, জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায়সহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছে।

এদিকে বিষয়টি একাধিকবার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের দৃষ্টিগোচর হলে মৌখিকভাবে সতর্ক করে কর্তৃপক্ষ। সুপার আইয়ুব আলী, শিক্ষক রমজান আলী ও আয়া বারবার আদেশ অমান্য করায় গত ১১ আগস্ট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক মাদরাসার সুপারকে লিখিত সতর্কীকরণ নোটিশ দেন। এরপর আয়া প্রতিদিন মাদরাসায় আসলেও শুধু হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে অফিসকক্ষে বসে থাকেন এবং দুপুরের দিকে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে চলে যান। আয়ার কাছে কাঙ্ক্ষিত সেবা চাইলে গেলে শিক্ষার্থীদের ওপর তারা চড়াও হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে দুইদিন ধরে ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আপেল, আল-আমিন, শাকিল, রাকিব, মেহেদি, স্বাধীনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, আয়া মাদরাসায় আসেন না, আসলেও তার সাথে কথা বলা যায় না। তাকে খালা ডাকলে রেগে যান, ম্যাডাম ডাকতে বলেন। কক্ষ পরিষ্কার করা তার দায়িত্ব হলেও তিনি কখনোই তা করেন না, এসব কাজ ছাত্রদের দিয়েই করান। কেউ পানি খেতে চাইলেও তার স্বামী রমজান স্যার এসে ছাত্রদের ভয় দেখান, পরীক্ষার ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

এই আয়া এবং শিক্ষক রমজান আলীর অপসারণসহ শাস্তি দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা

মাদরাসার নিরাপত্তাকর্মী রূহুল আমিন অভিযোগ করেন, আঞ্জুমনোয়ারা এবং তিনি একসঙ্গেই চাকরি নিয়েছেন। কিন্তু তিনি নিয়মিতই মাদরাসায় দায়িত্ব পালন করলেও আয়া অনুপস্থিত থাকেন, শুধু মাস শেষে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন তুলে নেন। আয়ার কাজগুলোও অন্য কর্মচারীদেরই করতে হয়। অর্থের লোভে নির্লজ্জভাবে তিনি শিক্ষকের স্ত্রী হয়েও আয়া পদের চাকরি করছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

অফিস সহকারী সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আয়া ও তার স্বামীর অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করা যায় না। কিছু বললেই সুপারকে দিয়ে শো-কজ ও চাকরিচ্যুতির হুমকি, বহিরাগত ক্যাডার এনে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখান। এমনকি ইতঃপূর্বে রমজান আলী তাকে একাধিকবার মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে পুলিশকে দিয়ে হয়রানি এবং জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন।

এ ব্যাপারে শিক্ষক রমজান আলী ও তার স্ত্রী আয়া আঞ্জুমনোয়ারার বক্তব্য জানতে চাইলেও তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

মাদরাসার সুপারিনটেডেন্ট আইয়ুব আলী বলেন, আমি নিরুপায়। তবুও আয়াকে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে ১৩ আগস্ট সতর্কীকরণ নোটিশ দিয়েছি।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক জানান, শিক্ষক রমজান আলী দলীয় দাপট দেখিয়ে এবং লোকজন দিয়ে সুপারিশ করিয়ে পার পেতে চান। ইতঃপূর্বে মাদ্রাসা পরিদর্শনে আয়ার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি মৌখিকভাবে সতর্ক করা হলেও কোনো কাজ না হওয়ায় ১১ আগস্ট সুপারকে পত্র মারফত সতর্ক করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com