বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে পূর্ণিমার জোয়ারের অতিরিক্ত পানিতে পৌরশহর সহ ২০ গ্রাম সহ পৌরশহর প্লাবিত হয়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়ছে রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেড়িবাঁধসহ বেশ কিছু বাড়িঘর। এ নিয়ে এই অঞ্চল পরপর দুবার প্লাবনের কবলে পড়লো। তাই শহর রক্ষা বাঁধসহ সন্ন্যাসী হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত নদীর দু’পাড়ের স্থায়ী বেড়িবাঁধ দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সরজমিনে দেখা গেছে, উপকূলীয় অঞ্চল উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় গত দুই দিন ধরে পূর্ণিমার জোয়ারে অতিরিক্ত পানিতে পানগুছি নদীর তীরবর্তী মোরেলগঞ্জ পৌর শহরের ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকা, বারইখালীর কাশ্মীর, শ্রেণীখালী, ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী, মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের নতুন করে আধা কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা ধসে গেছে।
বদনীভাঙ্গা, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, খাউলিয়া বাজারের ব্রিজসহ হুমকির মুখে এসিলাহা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, বদনীভাঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮০নং বি পাঠামারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বহরবুনিয়ার এসবি মাধ্যমিক বিদ্যালয় নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ ওই সকল গ্রাম।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পানগুছি নদী অব্যাহত ভাঙনের ফলে ফসলি জমি, বাড়িঘর গাছপালা বিলীন হয়ে নদীগর্ভে চলে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার।
পৌর শহরের কাপুড়িয়া পট্টি কাঁচা বাজার কলেজ রোড, কেজি স্কুল সড়ক, উপজেলা প্রশাসনিক চত্বর পানিতে তলিয়ে গিয়ে শহরের দোকানিদের ক্রয়-বিক্রয় দিনে প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা বন্ধ হয়ে পড়েছে।রাতেও ঠিক একই সময় পানিতে তলিয়ে যায় সব এলাকা। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।
শ্রেনীখালী গ্রামের ময়না বেগম, ছালমা বেগম জানান, জোয়ারের পানি ঢুকে ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। চুলায় পানি উঠায় দুপুরের রান্না করতে পারছিনা।
মোরেলগঞ্জ শহরের ফল ব্যবসায়ী মিজান শেখ, কসমেটিকস ব্যবসায়ী হারুন মোল্লা, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী পলাশ শিকদার বলেন, দুপুর ১২টা থেকেই বাজারের রাস্তায় পানির চাপ বেড়ে যায় দোকানে ঢুকে পড়ে পানি। ৪/৫ ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। গ্রাম থেকে আশা ক্রেতারা চলে যায় তড়িঘড়ি করে। এ ভোগান্তি থেকে কবে আমাদের মুক্তি মিলবে তাও জানা নেই।
স্থানীয়রা জানান,গত দুদিনের পানির চাপে নদীর তীরবর্তী তাদের ইউনিয়নগুলোর অনেক কাঁচা পাকা রাস্তা ভেঙে পড়েছে।এভাবে এক সপ্তাহ পানির চাপ থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে আর অনেক পরিবার।
বাগেরহাট জেলা পানিউন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, মোরেলগঞ্জ শহর সংলগ্ন রামপাল-মোংলা হয়ে ঘষিয়াখালী পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের জন্য সম্ভাব্যতা সমীক্ষার জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । এ ছাড়াও ইতোমধ্যে পানগুছি নদীর ভাঙন হতে বাগেরহাট জেলা সদর সংলগ্ন এলাকা সংরক্ষণ এবং বিষখালী নদী পুনঃখনন শীর্ষক প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।এ সকল কাজ শেষ হলে আশা করছি এ সকল সমস্যার সমাধান হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর