
তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে জনসংখ্যানুপাতে সদস্য নিয়োগ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে বাঙালি চেয়ারম্যান নিয়োগের দাবিতে এবং অর্ন্তবর্তিকালীন সরকারের পার্বত্য উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমার বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ নামে একটি আঞ্চলিক সংগঠন।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সকালে রাঙ্গামাটি শহরের বনরূপায় একটি রেস্টুরেন্টের সম্মেলন কক্ষে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বাঙালি জনগোষ্ঠীর বসবাস। একই আলো বাতাসে ও প্রতিকূল পরিবেশে বসবাস করার পরও পার্বত্য বাঙালিরা শিক্ষা, চাকুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভূমি ও রাজনৈতিকভাবে চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছে। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে এ বৈষম্য রাষ্ট্রের জন্য চরম লজ্জাজনক ও নাগরিক হিসেবে চরম হতাশার।
আরো উল্লেখ করা হয়, সরকার ইতোমধ্যে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এ চেয়ারম্যান নিয়োগের উদ্যোগ নিচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিশেষ আইনে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে উপজাতীয় ব্যক্তি চেয়ারম্যান নিয়োগ পাবেন,একই কারণে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদেও উপজাতীয় চেয়ারম্যান নিয়োগপ্রাপ্ত আছেন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টাও একজন উপজাতি এবং বাকি রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদ। যেখানে একজন বাঙালি চেয়ারম্যান নিয়োগ দিতে আইনের কোন বাধা নেই। এ ছয়টি পদের মধ্যে ৫টি পদ উপজাতীয়দের জন্য সংরক্ষিত থাকায় পাহাড়ের অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙালি প্রতিনিধি শূন্য হয়ে রাজনৈতিকভাবে চরম বৈষম্যেও শিকার হয়ে আসছে। এ বৈষম্যের মাঝে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডেও চেয়ারম্যান পদে একজন বাঙালি নিয়োগ দিয়ে ন্যূনতম ভারসাম্য রক্ষা করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। একই সাথে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদেও সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর আনুপাতিক হারে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান তারা। তা না হলে এ বৈষম্যের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন নেতাকর্মীরা।
এছাড়াও সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, বর্তমানে অর্ন্তবর্তিকালীন সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বৈষম্যমূলক ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন। তিনি বিভিন্ন সভা সেমিনারে আদিবাসী শব্দ উল্লেখ করে আদিবাসী স্বীকৃতির দাবির ষড়যন্ত্র উসকে দিচ্ছেন। এছাড়াও তিনি গত ২৪ আগস্ট সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময় সভায় পতিত সরকারের সুবিধাভোগী ও তাদেও নেতা এবং একপেশীয় উপজাতীয় নেতৃবৃন্দেও সাথে আলোচনা করেছেন। এ সভায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র প্রতিনিধিদের সুযোগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় মহাসচিব আলমগীর কবির, রাঙামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহমেদ, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি লোকমান হোসেন ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুজ্জামান ডালিম উপস্থিত ছিলেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর