গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পরে সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামালের দখলে থাকা প্রায় ২০ বিঘা পৈত্রিক সম্পত্তি উদ্ধারের দাবি করেন রফিক, জসিম উদ্দিন ও তার পরিবার। অপরদিকে ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করে ন্যায় বিচার কামনা করেন ওই জেলা পরিষদের সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়া এলাকায়।
সূত্রে জানা যায়, জামিরদিয়া মৌজা সিএস খতিয়ান নং- ১১৮, আর ও আর খতিয়ান নং-২৩০ এর ২০৭,১০৬,২০৮, ২০৯ এবং ২১০ নং দাগে সর্বমোট ১১.৭৭ একর জমি থেকে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আ’লীগ সরকারের পতনের পর রফিক ও জসিম উদ্দিন গং তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবি করে ২০ বিঘা জমি দখল নেয়। পরে এ ঘটনায় ওই জমির ক্রয়সূত্রে মালিকানা দাবি করে প্রশাসনের কাছে আইনি সহায়তা চেয়েছেন সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল।
মো. রফিক মিয়া বলেন, উক্ত জমি হিসাবদি শেখের ৩০/০৮/১৯৩২ সনে নিলাম হয়। পরে হিসাবদি শেখের ২য় পুত্র জুবেদ আলী ও তার পুত্র আফাজ উদ্দিন (রফিকের নানা) ২৪/৬/১৯৩৫ সনে জমিদারের কাছ থেকে সম্পাদিত ও রেজিস্ট্রিকৃত ৭৪৭ নং বর্গা কবুলিয়ত গ্রহণ করে। পরে বর্গা কবুলিয়ত ও পাট্টামুলে খাজনা পরিশোধ করে ৫.৭৪ একর ও পিতা, মাতা ও অন্যত্র থেকে ক্রয় করে মোট ৭.৯১ একর ভূমি মালিক হয় পরে আফাজ উদ্দিন ০.৭৪ একর ভূমি অন্যত্র বিক্রি করে বাকি ৭.১৭ ভূমি ওয়ারিশদের জন্য রেখে মৃত্যু বরণ করে। এই দাগের মধ্যে ১.৬২ একর ভূমি মালিক মোস্তফা কামাল এর পিতা। কিন্তু প্রভাব খাটিয়ে আফাজ উদ্দিন গংদের পুরো জমিই সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং বেআইনি ভাবে জবরদখল করে রাখে।
সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তফা কামাল জানান, হিসাবদি শেখের মৃত্যুর পর আমার দাদারা তিন ভাইয়ের এক জনের জমি ঋণের দায়ে জমিদার নিলাম করেন। বাকি সম্পত্তি পরবর্তীতে বৈধভাবে আর ও আরে লিপিবদ্ধ হয়। ২০৭নং দাগের জমি আমার চাচাগণ ১৯৮০/৮২ সনে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। আমি তাদের কাছ থেকে ২০০৪ সালে ক্রয় করে শান্তিপূর্ণ ভোগ দখলে ছিলাম। যারা পূর্বে বিক্রি করেছে তারাই পুনঃ জবর দখল করে। মডেল থানা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেও কোন বিচার পাইনি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আলীনূর খান জানান, উপজেলার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের জামিরদিয়ায় সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মোস্তফা কামাল গং ও রফিক গংদের পৃথক বিষয়টি নিয়ে সকল কাগজপত্র দেখে শুনানি করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দ জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ, সেনা বাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দুই পক্ষই। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে আমরা সেভাবেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিবো।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর