
নড়াইলে রাতভর ভারী বৃষ্টিতে জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ভারী বৃষ্টিতে সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতে পানি উঠে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শহরবাসী। বিশেষ করে নিচু এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। অধিকাংশ রাস্তায় গোড়ালি, আবার কোথাও হাঁটুপানি জমেছে।
শহরবাসী বলছেন, পর্যাপ্ত নালা ব্যবস্থা না থাকা। যা আছে তা অচল এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে একটু বৃষ্টি হলেই পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সকালে সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিতে পৌরসভার ভাদুলিডাঙ্গা, বউবাজার, গোহাটখোলা, ভওয়াখালি, দুর্গাপুর, আলাদাতপুর, মহিষখোলাসহ পৌরসভার অধিকাংশ এলাকায় ঘরবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় পানি জমেছে। জলাবদ্ধতায় অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় অনেকেই আবার গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। কারো কারো রান্নাঘর-টিউবওয়েলও পানির নিচে। ফলে ভীষণ বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে ২৮.৫০ বর্গকিলোমিটার নিয়ে গঠিত হয় নড়াইল পৌরসভা। ১৯৯৯ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। এই শহরের জন্য প্রয়োজন ৫৫ কিলোমিটার নালার ব্যবস্থা,কিন্তু আছে মাত্র ৩ কিলোমিটার। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই সামান্য।
শহরের আলাদাতপুর এলাকায় ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িতে পানি উঠেছে বলে জানান বাসিন্দা আশিকুর রহমান সৌরাভ। তিনি বলেন, আমাদের বাড়ির নিচতলায় হাঁটুপানি জমেছে। টিউবওয়েলর কিছু অংশ পানিতে ডুবেছে। এতে বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছি আমরা। এদিকে রান্নাঘর পানির নিচে হওয়ায় সকালের রান্নাও বন্ধ।
ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা তাজিমুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি নেমেছে, এরপর গতকাল রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমাদের ঘরে পানি উঠে গেছে। বাড়ির চারপাশে হাঁটুপানি জমেছে।
ইসরাত জাহান নামে এক গৃহবধূ বলেন, পৌরসভায় তেমন কোনো নালা নেই। একটু বৃষ্টি হলেই পানি আটকে থাকে, বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। একরাতের বৃষ্টিতে শহরের সবখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ সমস্যা প্রতিবছরই হয়। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌরসভার উদ্যোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সোমবার সকালে পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা ওহাবুল আলম বলেন, প্রতিবছর পৌরসভার জলাবদ্ধতা নিরাসনে কাজ করা হয়। এ বছরও বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে পানি সরাতে কাজ করছেন। তবে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫৫ কিলোমিটার নালা নির্মাণ। যার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পৌরসভার নেই। তবে তাঁরা চেষ্টা করছেন, বড় কোন ফান্ডিং পেলে নালা নির্মাণের মাধ্যমে এ সমস্যার অনেকটাই সমাধান হয়ে যাবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর