
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে তাজিন আক্তার নামে এক গৃহবধূকে হত্যার করে লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ি সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় স্বামী সহ অন্যদের বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে তাজিনের মা, ভাই, বোন সহ এলাকার দুই শতাধিক নারী পুরুষ।
মঙ্গলবার দুপুরে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও প্রেসক্লাব হলরুমে সংবাদ সম্মেলন শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তাজিনের বড়ভাই উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের জাকির হোসেন জানান, চার বছর পূর্বে উপজেলার খেকিডাঙ্গী গ্রামের আকবর আলির ছেলে জুয়েল রানার সাথে তার বোন তাজিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামী, শাশুড়িসহ পরিবারের অন্যান্যরা যৌতুকের জন্য তার বোনকে প্রায়ই মারপিট সহ নির্যাতন করে আসছিল। তার বোনের ২ মাস বয়সী একটি ছেলে ও ৩ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ২৩ আগষ্ট দুপুরে তার বোন তাজিন আক্তারকে তার স্বামী জুয়েল, শাশুড়ি আছিয়া বেগম ও অন্যরা মিলে শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার পর ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করতে তাজিন আক্তারের লাশ শয়ন ঘরের বেলকনিতে লোহার এঙ্গেলের সাথে পড়নের ওড়না দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।
পরে তারা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাজিন আক্তারের মৃত্যুর ব্যাপারে তার স্বামী জুয়েল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি একেক সময় একেক রকমের টালবাহানা করে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তাজিনের ছোট ভাই তোফাজ্জল হোসেন জানান, এ ঘটনায় পীরগঞ্জ থানায় খবর দিলে থানা পুলিশ তার বোনের লাশ উদ্ধার করে।
সে সময়ে লোকজনের উপস্থিতিতে মহিলা পুলিশ কনস্টেবল লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করার সময় তার বোনের দুই পায়ের হাটুর উপরে ও পিঠে ফুলা কালোশিরা জখমের চিহ্ন দেখতে পান। পীরগঞ্জ থানা পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঠাকুরগাঁও মর্গে প্রেরণ করেন কিন্তু হত্যা মামলা না নিয়ে ইউডি মামলা করেন। ময়না তদন্ত শেষে তার বোনের লাশ দাফন কালে শ্বশুরবাড়ির কোন লোকজন অংশ গ্রহণ করেননি।
এতে তার বোনকে হত্যা করার হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এ ঘটনায় তাজিন আক্তারের পরিবারের লোকজন জুয়েল রানা সহ দায়ীদের বিরুদ্ধে গত ২৫ আগষ্ট হত্যা মামলা করার জন্য পীরগঞ্জ থানায় গেলে অফিসার ইনচার্জ মামলাটি গ্রহণ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে। এতে দোষীরা পার পেয়ে যাওয়া সহ তাজিন আক্তারের হত্যার ন্যায় বিচার হতে তারা বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। পরে এলাকাবাসী পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে নিহত গৃহবধূ তাজিন আক্তারের স্বামী জুয়েল রানার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আনাম ডন জানান, মামলা না নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। গৃহবধূ তাজিন আকারের মৃত্যুর ঘটনায় ইউ ডি মামলা করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর