বৈষম্যবিরাধী আন্দোলনে শতশত ছাত্রছাত্রী মারা যাওয়া দেখে ঘর বসে থাকতে পারল না গার্মেন্টস শ্রমিক নবী হোসেন (২০)। তিনি নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলা বাউসী ইউনিয়নের দউপুর গ্রামের নাসির জামালের ছেলে।
গাজীপুর গত ৪ আগস্ট আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে নিজের শরীর অসংখ্য গুলি নিয়ে দেশের মানুষকে স্বৈরশাসক থেকে মুক্ত করার অংশীদার হয়েছিলেন নবী হোসেন। টাকার অভাবে নবী হোসেন উন্নত চিকিৎসা পাচ্ছেনা । তাই গত কয়েকদিন আগে তার পরিবারের লোকরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে এসেছে। এ পর্যন্ত তার সাথ অনেকেই যোগাযোগ করলেও বাস্তবিক অর্থ কোন সহযোগিতা পাননি তিনি।
বৃহস্পতিবারে বুকের সেলাই খুলতে ও একটু ভালো চিকিৎসা পেতে বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান তিনি। কর্তব্যরত চিকিৎসক রাবী আলম তার শরীর দেখে জানান, নবী হোসেনের শরীর অনেকগুলো গুলি ঢুকেছে। এগুলো এখনো বের করা সম্ভব না। গুলি বের না করল তিনি সুস্থ হবেন না।
গত ৪ আগস্ট বিভীষিকাময় সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে নবী হোসেন বলেন, আমি ছাত্রদের উপর অন্যায় ভাবে গুলি করা হচ্ছে দেখে ঘর বসে থাকতে পারলাম না। আমি তাদের দাবির সাথে একমত হয়ে তাদের সাথে আন্দোলনে যোগ দিই। গাজীপুর এলাকায় আমরা জমায়েত হলে পুলিশ বাহিনী আমার উপর এলোপাথাড়ি গুলি কর। আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে পড়ে যাই। তখন আট- নয়জন পুলিশ মিল আমাকে এলোপাতাড়ি ভাব মারপিট করত থাক। এক পর্যায় আমার হাতর আঙুল ও পায় বুট জুতা দিয়ে আঘাত কর।
একজন পুলিশ আমার বুকের উপর দাঁড়িয়ে মুখ দিয়ে রক্ত বের করে ফেল। এভাবে আমার উপর দেড় ঘণ্টার মত আঘাত করা হয়। এরপর তারা আমাকে মৃত্য ভেবে একটি কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে।
একপর্যায় আমার জ্ঞান ফিরলে আশপাশের মানুষের যাতায়াত অনুমান করে চিৎকার দিলে তারা আমাকে উদ্ধার কর জয়দবপুর হাসপাতাল নিয়ে যায়। সখান তারা আমার চিকিৎসা না কর বিদায় কর দয়। তখন আমার বড় ভাই রাজা হাসন ঢাকা উত্তরা প্রাইভট হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে আমাকে দুইদিন আইসিওতে রাখেন। এই দুইদিন মোটা অংকর বিল পরিশোধ অপারগতা প্রকাশ করলে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ময়মনসিংহ মডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যাই। এই পর্যন্ত আমার প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেছে।
নবী হাোসনের বড় ভাই জামাল হোসেন বলেন, বারহাট্টা হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার পর তারা বলছে রোগীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে।
বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি বলেন, তার পরিবারের কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করনি।
বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মাস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাোগীর অবস্থা খুবই দুর্বল। তার শরীর অনেকগুলো রাবার বুলেট রয়েছে। গুলিগুলো বের করতে ও উনত চিকিৎসার জন্য রোগীকে ময়মনসিংহ মডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর