সম্প্রতি ফেনীর বন্যায় পানিতে তলিয়ে গেছে ৬৪ হাজার ১৬১টি গবাদিপশু ও ২৩ লাখ ৪ হাজার ৪১০টি হাঁস-মুরগি। এতে প্রাণিসম্পদ খাতে প্রায় ৩৯১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছেন।তবে বন্যার ফলে আয় ও পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন দুই হাজারেরও বেশি খামারি।
সাম্প্রতিক সময়ে অতি ভারি বৃষ্টি ও ভারতীয় উজানের ঢলের কারণে ফেনী জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বন্যায় পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার মানুষজন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পরবর্তীতে ফেনী সদর, সোনাগাজী ও দাগনভূঞা উপজেলা আক্রান্ত হয়।এতে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ দুর্যোগের শিকার হয়েছে। তন্মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। অবশিষ্ট লোকজন বিভিন্ন উপজেলায় উঁচু ভবনসমূহে ও ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন।বন্যায় বেশিরভাগ বাড়িঘর, দোকানপাট ডুবে গেছে।এমনকি পানির নিচে একতলা পর্যন্ত পাকা বাড়ি তলিয়ে গেছে। স্রোতের তোড়ে শত শত গরু ছাগল হাস মুরগির খামার পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।মরে ও পচে পানিতে ভেসে উঠেছে এসব পশু।গন্ধে মানুষকেও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সূত্রে জানা গেছে, ফেনীর ৬টি উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫ টি ইউনিয়নে ৩৮ হাজার ৭৩১টি গরু, ১২৯টি মহিষ, ১৫ হাজার ৬০৪টি ছাগল ও ৩৫৬টি ভেড়া মারা গেছে। এ ছাড়া ১৭ লাখ ৩১ হাজার ৮১০টি মুরগি ও এক লাখ ৯৬ হাজার ৪৭২টি হাঁস মারা গেছে। সবমিলিয়ে মৃত পশু পাখির মোট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩০২ কোটি ৬৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা।সূত্র আরও জানান, ২৯ লাখ ১৩ হাজার ৩১৩টি গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এ ছাড়াও এক হাজার ৯৯২টি গবাদিপশুর খামারের ১৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার এবং এক হাজার ৬২৩টি হাঁস-মুরগির খামারের ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়াও তিন হাজার ৯৫০ টন পশু-পাখির খাবার বিনষ্ট হয়েছে, যার বাজারমূল্য ২৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা। তাছাড়া দুই হাজার ৫৫০ টন খড়, এক লাখ ৮৪ হাজার ২১০ টন ঘাস বিনষ্ট হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে ২৮৫ একর চারণভূমি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, বন্যায় জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসও ডুবে গেছে। এছাড়া জেলা ব্যাপী বিভিন্ন শ্রেণির পশু পানিতে তলিয়ে ৩৯১ কোটি ১১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩০ টাকার ক্ষতি হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর