• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০২ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৭ মিনিট পূর্বে
আখলাকুজ্জামান
গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৩:২৯ দুপুর
bd24live style=

কাজিদের ডুপ্লিকেট রেজিষ্টারে হয় বাল্যবিয়ে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

নাটোরের গুরুদাসপুরে একই বিদ্যালয়ের ২০ জন ছাত্রীর বাল্যবিয়ের ঘটনা এলাকায় উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। পৌর সদরের চাঁচকৈড় শাহীদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওই বাল্যবিয়ের বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন শিক্ষকরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাল্যবিয়ের শিকার ছাত্রীরা ছিল ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। অভিভাবকরা গোপনে তাদের বিয়ে দিয়েছেন। অধিকাংশ বিয়ে হয়েছে মেয়ের নানা, মামা ও আত্মীয়ের বাড়িতে। সমাজের একশ্রেণীর অসাধু লোক ও নিকাহ রেজিস্ট্রার এই বাল্যবিয়ে দিয়ে থাকেন। টাকার লোভে তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে বিয়ে সম্পন্ন করেন। সেক্ষেত্রে ডুপ্লিকেট রেজিষ্টারও মেইনটেইন করেন তারা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে অনেক ছাত্রী অনুপস্থিত। তালিকা করা হলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় গত দুই থেকে তিন মাসে ২০ জন ছাত্রীর বাল্যবিবাহ হয়ে গেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, স্থানীয় পৌরসভা, মহিলা বিষয়ক কার্যালয়, উপজেলা প্রশাসন, এমনকি পাড়া—প্রতিবেশীরাও এসব বিয়ের খবর জানতেন না। তালিকা অনুযায়ী খোঁজ নিতে গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।

অভিভাবকরা বলছেন, এলাকায় বখাটেদের উৎপাত, উত্ত্যক্ত, অপহরণ চেষ্টা এবং প্রেম করে পালিয়ে যাওয়াসহ নানা আতঙ্কে মেয়েদের বাল্যবিয়ে দিয়েছেন।

স্থানীয় সচেতন মহল জানান, কম্পিউটার দ্বারা জন্মসনদে বয়স বাড়িয়ে কতিপয় অসৎ কাজী দিয়ে এসব বাল্যবিয়ের কাবিননামা করা হচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি তদারকি না থাকায় এবং অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণে অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হচ্ছে।

স্থানীয় প্রবীণ সাংবাদিক আলী আক্ধসঢ়;কাছ বলেন, ঝামেলা এড়াতে কাজীরা বাল্যবিয়েতে ডুপ্লিকেট রেজিস্টার ব্যবহার করেন। বয়স পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিকাহ রেজিস্টার দেন না তারা। তিনি মনে করেন, বাল্যবিয়ের হার কমাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে সচেতন হতে হবে।

অষ্টম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জানান, ‘স্কুলে এসে দেখেন তার বান্ধবীরা স্কুলে আসেনি। খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পারেন, তার পাঁচ বান্ধবীসহ স্কুলের ২০ জন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তাকেও বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। অথচ পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছে রয়েছে তার। 

অপর এক ছাত্রীর বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, ‘তিনি ভ্যান চালক। সচ্ছল পরিবার থেকে মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব আসায় তাকে বিয়ে দিয়েছি। তবে এখন মনে হচ্ছে বিয়ে না দিয়ে পড়াশোনা করানোই ভালো ছিল। নবম শ্রেণীতে পড়া আরেক ছাত্রীর বাবা রমিজুল করিম জানান, ‘তিনি তার মেয়েকে বাল্যবিয়ে দিতে চাননি। কিন্তু যুগ জামানা খারাপ। তাছাড়া স্কুলে যাতায়াতের সময় তার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করতো বখাটেরা। নানাদিক ভেবে তিনি অল্প বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।’

স্কুলের প্রধান শিক্ষক নেগার সুলতানা বলেন, ‘বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী সংখ্যা ১৫০ জন। তার মধ্যে গত দুই—তিন মাসে ২০ জনের বিয়ে হয়েছে। এর আগেও অনেক শিক্ষার্থীর বিয়ে হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট মাসিক আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপজেলা প্রশাসনের সকলকে অবহিত করেছেন তিনি। 

প্রধান শিক্ষক আরো জানান, বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে— ৭ম শ্রেণীতে ৪ ছাত্রী, অষ্টম শ্রেণীর ২ ছাত্রী, নবম শ্রেণীর ৬ ছাত্রী, দশম শ্রেণীর ৮ জন ছাত্রী। বর্তমানে স্কুলে উপস্থিতির সংখ্যা খুবই কম। স্কুলে অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করলেও এলাকার অভিভাবকরা আসতে চাননা। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রেখামনি পারভিন জানান, ‘বাল্যবিয়ের খবর তাদের কেউ জানায় না। ওই বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানিয়েছি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, শাহিদা কাশেম পৌর বালিকা বিদ্যালয়ে শিগগিরই অভিভাবক সমাবেশ করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com