দৃষ্টিজয়ী মানুষের প্রতি শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে সকল বৈষম্যের প্রতিকারের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী দৃষ্টিজয়ী ছাত্র আন্দোলন। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন প্রধান সমন্বয়ক নাজিম হোসেন।
এ সময় সংগঠনের সহ-সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা পপি, তরিকুল ইসলাম নাজিম ও আউয়াল হোসাইন আরাফাত উপস্থিত ছিল।
স্মারকলিপিতে তারা শিক্ষা ও কর্মসংস্থান এই দুই ধাপে বৈষম্যের নিরসন দাবি করেন। শিক্ষায় বৈষম্য নিরসনের জন্য প্রদত্ত দাবিগুলো হলো-স্কুল-কলেজের গণিত ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে দৃষ্টিজয়ী শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষায়িত ব্যবস্থা করা, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় জ্যামিতি ও চিত্রসংবলিত প্রশ্নের পরিবর্তে অন্য কোন বিষয়ে পরীক্ষা গ্রহণ ইত্যাদি৷
কর্মসংস্থানে বৈষম্য নিরসনের জন্য প্রদত্ত দাবিগুলো হলো- সরকারি চাকরিতে সকল প্রতিবন্ধীদের প্রদত্ত এক শতাংশ কোটাকে সকল প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সম বণ্টন করা। শ্রেণি অনুযায়ী সরকারি চাকুরিতে কোটার সুষ্ঠু এবং যৌক্তিক বণ্টন নিশ্চিত করা; সরকারি চাকরিতে বিশেষ নিয়োগ; সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষা কার্যক্রমের প্রধান রিসোর্স শিক্ষক নিয়োগ করা; চাকুরীর কিছু বিশেষ ক্ষেত্রকে দৃষ্টিজয়ী চাকরি প্রার্থীদের জন্য নির্দিষ্ট করা; বেসরকারি তথা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে শতকরা হারে কর মওকুফ করে দৃষ্টি জয়ী শিক্ষার্থীদের নিয়োগে উৎসাহিত করা প্রভৃতি।
এছাড়া শ্রুতি লেখক নীতিমালা ও পরীক্ষা পদ্ধতির সংশোধনী সমূহ হলো সরকারি বা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে শ্রুতি লেখক নিয়োগ; বিসিএসসহ অন্যান্য চাকুরির পরীক্ষাগুলোতে গণিত বিষয়ক প্রশ্নকে অন্য কোন বিষয়ের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন; বিসিএস পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি পর্যায়ে কাট মার্কসে কোটা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
এছাড়া তাদের আরো কিছু দাবি হলো প্রতিবন্ধী ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা থেকে উন্নীত করে তিন হাজার টাকা করা, শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো এবং একই সাথে একজন দৃষ্টিজয়ী শিক্ষার্থী যেন দুটো সুবিধা ই পেতে পারে সেই ব্যবস্থা করা, দেশের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্রেইল কর্নার স্থাপন করা, দূরপাল্লার যানবাহন তথা বাস, রেল, দেশের আভ্যন্তরীণ বিমানগুলোতে অর্ধেক ভাড়া প্রচলন করা, দুরারোগ্য ব্যাধির ক্ষেত্রে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালের ব্যয় ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনা, প্রত্যেকটি জেলায় হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ ও কারখানা নির্মাণ করে সেখানে দৃষ্টিজয়ী মানুষের জীবিকার সুযোগ করে দেওয়া, বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য নির্দিষ্ট একটি অংশ বরাদ্দ করা ইত্যাদি।
প্রধান সমন্বয়ক নাজিম হোসেন বলেন, শিক্ষা, চাকুরি, পুনর্বাসন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে বিগত সরকারগুলোর অবহেলা এবং উদাসীনতাই আমাদের পিছিয়ে পড়া এবং দারিদ্রের মূল কারণ। ছাত্রজনতার এই গৌরবময় অভ্যুত্থানের পর একটি বৈষম্যমূলক বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে প্রধান উপদেষ্টার সুদৃষ্টি কামনা করছি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর