ক্ষমতার দাপটে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল, জাল সনদে চাকুরি, বিদ্যালয়ে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যকরণ, বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন অনুপস্থিতি ও বিদ্যালয়ের নামে সরকারি অনুদান টিআর, কাবিখা প্রকল্প নিয়ে অর্থ আত্মসাতের নানা অভিযোগে চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
সাইদুল ইসলাম চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের পবাখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় চাটমোহর উপজেলা গেট সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টা ব্যাপী এ মানববন্ধন করা হয়। এসময় মানববন্ধন কারীরা শিক্ষক সাইদুলের বিচার দাবি করে নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
মানববন্ধনকারীরা জানান, ফৈলজানা ইউনিয়নের পবাখালী গ্রামে ও এর আশে পাশে কোন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় না থাকায় এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে এলাকার সচেতন মানুষ ও শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় সরকারি সকল বিধি বিধান মেনে ১৯৯৬ সালে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন এলাকার শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব আফসার আলী ও সভাপতি হিসেবে ছিলেন আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন (দানু)। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পরে এলাকার প্রায় সকল অভিভাবক তাদের সন্তানকে এই স্কুলে ভর্তি করান। প্রয়োজন মতো বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। ভালই চলছিল বিদ্যালয়টি।
এরপর ২০০৯ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সুযোগে চাটমোহর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে হঠাৎ একদিন বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ে এসে প্রধান শিক্ষকের চেয়ার থেকে প্রধান শিক্ষক আফসার আলীকে টেনে হিচড়ে চেয়ার থেকে তাকে তুলে দিয়ে সে চেয়ারে বসে ঘোষণা দেন, আজ থেকে এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমি। এরপর বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্রাদি আলমারি ভেঙ্গে তার আয়ত্বে নিয়ে নেয় সে। স্কুল কর্তৃপক্ষ সে সময় তার সন্ত্রাসী বাহিনী ও পুলিশি হয়রানির ভয়ে কোনো প্রতিবাদ না করে বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যায়।
এ বিষয়ে পবাখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. সাইদুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ২০০৭ সালে আফছার আলী অবসরে যাওয়ার পর প্রায় তিন বছর স্কুল বন্ধ ছিল। পরে এলাকার লোকজন এবং স্কুল সংশ্লিষ্টরা আমাকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। ২০২২ সালে স্কুলটি এমপিও ভুক্ত হলেও আমার এখনও বেতন হয়নি। আর শিক্ষক নিয়োগ তো ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দপ্তর দেয়। এছাড়া স্কুলের কোনো আয়ও নেই। তাহলে দুর্নীতি করলাম কীভাবে? বরং ব্যক্তিগত টাকা খরচ করে স্কুল চালিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মুনতাসির/সাএ