• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৪ ঘন্টা পূর্বে
শাহীন মাহমুদ রাসেল
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:৪৯ রাত
bd24live style=

তার হাতেই টেকনাফের মাদক সাম্রাজ্য 

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কক্সবাজার জেলায় ভয়ংকর ভাবে বেড়েছে ইয়াবা পাচার। সরকার পরিবর্তনের অধ্যায় শেষ হতে না হতেই বের হয়ে আসতে শুরু করেছে এক সময়ের শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ীদের চেহারাগুলো। 

আইন প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কিংবা ম্যানেজ করে যে সকল ব্যবসায়ীরা অতীতে নিরবে নিবৃত্তে চালিয়েছিলো ইয়াবা ব্যবসা তারা এখন অনেকটাই ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে নেমে পড়েছে। তার মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত নুরুল হুদা মেম্বার, নুরুল কবির ও নুরুল আবসার। তারা তিন ভাই প্রশাসনের সৎ মনোভাবকে দুর্বলতা ভেবে ইয়াবা পাচারে দ্বিগুণ বেপরোয়া ভাব নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে এসব চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর তৎপরতার মুখে ছোটো খাটো ইয়াবা ব্যবসায়ীরা অধিকাংশই থেমে যেতে বাধ্য হলেও ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা পেয়ে সাম্প্রতিক কালে সবচেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে টেকনাফের ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। জনপ্রতিনিধি ও ভদ্রতার মুখোশ পরিধান করে থাকা এসব ইয়াবা ব্যবসায়ী এতটাই চতুর যে বাহির থেকে এদের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে জানার কোনো সুযোগ রাখেনি। ফলে সমাজের সচেতন মহল থেকে শুর- করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্য সবার চোখে ধুলো দিয়ে প্রতিদিন কোটি টাকার ইয়াবা পাচার করে রাতারাতি বনে যাচ্ছে একেকজন বিশাল বিশাল শিল্পপতি। এমনই যাদুরকাটি তাদের হাতে আছে রীতিমতো বেকুব বনে যান পুলিশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর কর্মকর্তারাও। পান না ইয়াবা পাচারের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতা।

এমনকি সর্বশেষ গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর রাতে টেকনাফের ধুরুমখালী এলাকায় শীর্ষ ইয়াবা কারবারি নুর হুদা মেম্বারের মালিকানাধীন একটি পোল্ট্রি ফার্মের গাড়ি থেকে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করে র‍্যাব। এসময় গাড়িতে থাকা নুরুল ইসলাম ও ফারুক নামের দুজনকে আটক করা হয়। স্থানীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, মাদক বহনের গাড়িসহ ইয়াবার চালানটি ছিল নুরুল হুদা মেম্বারের। সেদিন মাদক বহনের গাড়িটির আগে পিছে নুরুল হুদা মেম্বার ও তার ভাই নুরুল কবির মোটরসাইকেলযোগে প্রটোকল দিয়ে পাচারের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে র‍্যাবের অবস্থান টের পেয়ে নুরুল হুদা ও তার ভাই নুরুল কবির সটকে পড়ে। আভিযোগ আছে, নানা দেন দরবার করে ওই মামলা থেকেও রক্ষা পেয়ে যান তারা। তবে গাড়ি ও ইয়াবার মূল মালিককে আসামি না করায় অনেকটা হতাশ হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আত্মস্বীকৃত ১০২ জন ইয়াবা কারবারির অন্যতম নুরুল হুদা। যিনি ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৩ ডজনের বেশি মামলা। এরমধ্যে  ঢাকায় রুজু হওয়া একটি মাদক মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যার নং ৫২৩/১৩। গেলো ২০২০ সালের ২ মার্চ সম্পদ বিবরণী দাখিল না করা এবং ২,৭১,২৫,৩৩৭ টাকার জ্ঞাত বহির্ভূত সম্পদ অর্জনপূর্বক ভোগ দখলের অপরাধে নুরুল হুদার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মহানগর দায়রা জজ ও চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আজ আদালতে মামলাটি করেন দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর। যার মামলা নং-৪/২০২০।

অনুসন্ধানে জানা যায়, সারা দেশব্যাপী একটি মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলেন নুরুল হুদা। আত্মসমর্পণ কালে ওই সিন্ডিকেটের হাতে পুরো নেটওয়ার্কের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে নির্বিঘ্নে ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যান। ফলে কারাগারে থাকাকালীন প্রতিদিন লাখ টাকা খচর করতেন তিনি। কালো টাকার জোগান থাকায় জামিনে বের হতেও বেগ পেতে হয়নি তার। কারাগার থেকে বের হয়ে কিছুদিন লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নেন। রীতিমতো বনে যান জনপ্রতিনিধিও। নুরুল হুদার সাথে আত্মসমর্পণকারী অনেক মাদক ব্যবসায়ী জামিনে বের হয়েছে। যারা পুনরায় মাদক পাচার করতে গিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ইয়াবা ও আইসসহ আবারও আটক হয়েছে। ফলে মাদকের বিস্তার ভয়াবহভাবে বেড়েছে। নির্বিঘ্নে চলতে থাকা এই মাদককারবারে কেউ বাঁধা হয়ে দাঁড়ালে বিদেশী অস্ত্রসহ প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে দেখা যায় বলেও জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা।

সূত্র থেকে জানা যায়, নুরুল হুদার রয়েছে দুটি রোহিঙ্গা মাদক পাচারকারী দল। তারাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও উখিয়ার সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পালংখালী থেকে বিপুল সংখ্যক মাদক প্রবেশ করায়। পরবর্তীতে নুরুল হুদা মাদকগুলো তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের হাতে সুকৌশলে পৌঁছে দেন।

মাদকগুলো বহন করার কাজে বিলাসী চাহিদা সম্পন্ন উঠতি বয়সী যুবক-যুবতী, এনজিও কর্মী ও বেকারদের সহ কমপক্ষে শতাধিক লোকজনকে তার এই কাজে সহযোগী হিসেবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মাঝেমধ্যে ওই পাচারকারী দলের কেউ আটক হলেও বরাবরেই অধরা থেকে যান নুরুল হুদা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নুরুল হুদা এক সময় গাড়ির হেলপার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিলেন নুরা বলে। অপর পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে ছোট দুজনকে নিয়ে নাফ নদীতে জাল ফেলতেন তাদের বাবা। তিনজন পরের জমিতে লবণ শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু যাদের জমিতে চাষ দিতেন, কয়েক বছরের মাথায় ইয়াবা ব্যবসার বদৌলতে সেই জমিই কিনে নেন নুরুল হুদা। মহাসড়কের ধারে গড়ে তোলেন দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। তার পর একেক ভাইয়ের জন্য বানান একেকটি প্রাসাদ। ওঠাবসা ছিল অনেক প্রভাবশালীদের সাথে। পরে ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার পদে নির্বাচন করেন। বনে যান নেতা। টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদ ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হন নুরুল হুদা।

সূত্র মতে, নুরুল হুদা টেকনাফের হ্নীলা ৮নং ওয়ার্ডের ২ বারের নির্বাচিত মেম্বার। গেলো নির্বাচনের ভোটের মাঠে জয়ী হতে প্রচুর কালো টাকা বিনিয়োগ করে নির্বাচনেও বিজয়ী হন।

জানা গেছে, লেদা পশ্চিম পাড়ার মৃত আবুল কাশেমের ছেলে নুরুল হুদা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানাসহ দেশের বিভিন্ন আদালতে ইয়াবা, অস্ত্র, হত্যা মামলাসহ নানা অপরাধে ৫০টিরও বেশি মামলা রয়েছে। যা বিচারাধীন আছে। এমন একজন চি‎চিহ্নিত রাষ্ট্রদ্রোহী, চোরাকারবারি, সরকারের আত্মস্বীকৃত ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছে যা ন্যাক্কারজনক ও নিন্দনীয় বলে অভিযোগ তুলেছেন সচেতন মহল।

বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এককালের সেই হেলপার নুরা আজ শতকোটি টাকার মালিক। হ্নীলার টেকনাফ-কক্সবাজার সড়কের পাশেই তাদের ছয় ভাইয়ের নামে ৬টি নান্দনিক বাড়ি নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে তাদের বাড়ির সংখ্যা ১৪। টেকনাফের হোছ্যারখালের উত্তর পাশে, হ্নীলা আলীখালী, লেদাবাজার এলাকায় হুদার নিজেরই তিনটি বাড়ি। নিজে বসবাস করেন পুরান লেদায়। ফ্ল্যাট আছে চট্টগ্রামে। তবে হ্নীলার দমদমিয়া বিজিবি চেকপোস্ট ঘেঁষে সবচেয়ে ব্যয়বহুল পাঁচতলা বাড়ি নির্মাণ করেন ছোট ভাই নূর মোহাম্মদ। ২০১৪ সালে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নূর মোহাম্মদ।

এছাড়া হ্নীলা লেদায় শত একর জমি কিনে নিয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসায়ীরা। পুলিশের খাতায় ৩ ডজন মামলার মোস্ট ওয়ান্টেড নুরুল হুদা। অথচ টেকনাফ থানার ওসি জুবাইর সৈয়দ দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকার বিষয়টি তিনি জানেন না। যদিওবা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হ্নীলার জাদিমুড়া থেকে খারাংখালী এলাকা পর্যন্ত নাফ নদীর দুই পাশে ইয়াবার সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন নুরুল হুদা। জাদিমোড়া, নয়াপাড়া, মোচনী, লেদা, রঙ্গীখালী, নাটমোড়া পাড়া, হ্নীলা সদর, ওয়াব্রাং ও খারাংখালী পয়েন্ট হয়ে প্রতিদিন মিয়ানমার থেকে তার নামে ইয়াবার চালান আসত। সন্ধ্যার পর এসব খোলা বিলে লোকজনের উপস্থিতি না থাকায় ইয়াবা চোরাচালানের একটি অন্যতম রুটে পরিণত হয়। বর্তমানে নুরুল হুদার একাই প্রায় শতকোটি টাকার মালিক বনে আছেন। তিনি একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, নুরুল হুদা হ্নীলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র সরওয়ার কামাল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তিনি ও তার সব ভাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নতুন-পুরনো সবকটি তালিকাভুক্ত ইয়াবা পাচারকারী। ২০১৪ সালে আত্মগোপনে থেকে মেম্বার নির্বাচিত হলেও শপথ নিতে পারেননি। পুলিশ জানায়, এরা পারিবারিকভাবে ইয়াবা ব্যবসায়ী। দ্বিতীয় ভাই শামসুল হুদা যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন। নুরুল কবির, সরওয়ারসহ অন্য ভাইরাও ফেরারী।

একজন চিহ্নিত মাদক কারবারী কিভাবে বীরদর্পে চলাফেলা করে; নির্বাচনে জিতে, তা নিয়ে উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন কক্সবাজার আদালতের আইনজীবী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নুরুল হুদা আত্মস্বীকৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী। অবৈধ উপায়ে সম্পদ উপার্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। অনেক আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারী কারামুক্ত হয়ে বেপরোয়া জীবন যাপন করছে। মাদক কারবারে জড়িয়েছে। জনগণ তাদের ভোট কেন দেয়, বুঝি না। আত্মস্বীকৃত অপরাধীদের সামাজিকভাবে বয়কট করা উচিত।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনরা জানান, নূরুল হুদা’র জীবন বদলে যেতে শুরু করে ২০০৮ সালে। সে বছরে তার বড়ভাই নূর মোহাম্মদ নামেন ইয়াবা ব্যবসায়। এরপর নূর তার তিন ভাই- শামসুল হুদা, নূরুল আফসার এবং নূরুল কবিরকে নামান এই ব্যবসায়। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাদের সম্পদ। কয়েক বছরের মধ্যে নূর নিজেই তৈরি করেন তিনটি ‘বিলাসবহুল’ বাড়ি। সেগুলো রয়েছে টেকনাফের দামদামিয়া, নাইট্যংপাড়া এবং গুদারবিলে। ২০১৪ সালে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নূর মারা যাওয়ার পর থেকে সেই বাড়িগুলোতে এখন আর কেউ থাকেন না।

মাস পাঁচেক আগে লেদায় রোহিঙ্গা শিবিরের কাছে তাদের আরেক ভাই শামসুল হুদা নিহত হন অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের গুলিতে। আর নূরুল আফসার একটি মাদক মামলায় পাঁচ বছরের কারাভোগ করছেন। গত বছর মে মাসে মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর নূরুল হুদা এবং তার ছোটভাই নূরুল কবির আত্মগোপন করেন। আত্মসমর্পণ কর্মসূচির খবর পেয়ে তারা চলে আসেন প্রকাশ্যে।

এ বিষয়ে মন্তব্য করার জন্যে তাদের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। টেকনাফের ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূরুল বাশার নওশাদের উত্থানের পেছনেও রয়েছে বেশ জাদুকরী গল্প। এক সময় তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন। এখন তিনি টেকনাফের কুলাল পাড়ায় একটি ডুপ্লেক্স বাড়ির মালিক।

স্থানীয়দের অভিমত, শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হাজী সাইফুল করিমের ভাগ্নিকে বিয়ে করার পর তিনি অনেক ক্ষমতার মালিক হয়ে উঠে।

সূত্র জানায়, বিয়ের কয়েকদিন পর নওশাদ এই মাদকব্যবসায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। শুরু করেন নতুন জীবন। ২০১৫ সালের পৌর নির্বাচনে নওশাদ তার চাচা মোহাম্মদ আমিন বুলু’কে পরাজিত করে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। অভিযোগ রয়েছে- নওশাদ ইয়াবা বিক্রির টাকা দিয়ে ভোট কিনেছিলেন। নির্বাচনে বিজয়ের পর তিনি মিয়ানমারের অধিবাসী এক নারীকে বিয়ে করেন। খবরে প্রকাশ, সেই নারী একজন শীর্ষ ইয়াবা প্রস্তুত ও সরবরাহকারী। নওশাদের ছোটভাই মিজান-ও ইয়াবা ব্যবসায় নিয়োজিত বলে জানায় পুলিশের বিভিন্ন সূত্র।

তবে বাবা মোহাম্মদ ইউনুসের দাবি- তার ছেলেরা নির্দোষ। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি তালিকায় তাদের নাম দিয়েছেন। পুলিশ ও র‌্যাবের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ইঙ্গিত দিয়ে ইউনুস বলেন, “এখন আমি তাদেরকে ‘নিরাপদ নিবাসে’ পাঠিয়ে দিয়েছি যাতে তারা বাঁচতে পারে।” গত বছরের মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮৫ ‘মাদক ব্যবসায়ী’ কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।

স্থানীয়দের বক্তব্য, বদি’র ভাগ্নে ৩১ বছর বয়সী নিপু আগে চট্টগ্রামে বসবাস করতেন। কিন্তু, ২০০৮ সালে বদি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার পর তিনি প্রচারণার কাজে যোগ দিতে কক্সবাজার আসেন। নিপু’র বাবা আব্দুর রহমান পুলিশের একজন পরিদর্শক হিসেবে অবসরে যান।

নির্বাচনের পর বদি’র প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে নিপু ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং (সিএনএফ) ব্যবসা শুরু করেন। এরপর জড়িত হন ইয়াবা ব্যবসায়। এক সময় শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসায়ী হয়ে উঠা এই ব্যক্তির নিজের ‘বিলাসবহুল’ বাড়ি রয়েছে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নে। নিপু’কে কখনো আটক করা হয়নি। মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর তিনি মালয়েশিয়ায় চলে গিয়েছিলেন বলে জানান অনেকে। গত সপ্তাহ দুয়েক আগে তিনি দেশে এসে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।

নিপু’র চাচাতো ভাই আক্তার কামালও একজন তালিকাভুক্ত মাদকব্যবসায়ী। গত বছর অক্টোবরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কামাল নিহত হন। নিপু’র আরেক চাচাতো ভাই ও তালিকাভুক্ত মাদকব্যবসায়ী শহীদ কামাল এখন তার সঙ্গে সেই ‘নিরাপদ নিবাসে’ রয়েছেন।

সূত্র মতে, বদি’র সৎভাই আব্দুল আমিন ২০০৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় থাকতেন। বদি নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে তিনি কক্সবাজারে ফিরে এসে টেকনাফ বন্দরে সিএনএফ-এর ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ নেন। দেশের বিভিন্ন অংশে মাদক সরবরাহ করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

স্থানীয়রা জানান, যদিও আমিনের বেশ কয়েকটি গাড়ি রয়েছে তথাপি তিনি নিজে সিএনজি-চালিত অটোরিকশা ব্যবহার করেন। তার নিজের অন্তত ডজনখানেক অটোরিকশা রয়েছে যেগুলো ইয়াবা সরবরাহের কাজে ব্যবহার করা হয়। বদি’র ভাই ফয়সাল রহমানেরও একই সংখ্যক অটোরিকশা রয়েছে। সেগুলোও এই কাজে ব্যবহার করা হয় বলে জানায় বিভিন্ন সূত্র। ফয়সালের মা একজন রোহিঙ্গা। ফয়সাল তার সৎভাইদের মাধ্যমে ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত হন বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।

এ বিষয়ে জানতে নুরুল হুদা মেম্বারের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টাও তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওসমান গণি বলেন, তাকে ধরতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com