• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১০ সেকেন্ড পূর্বে
মো. আশিকুজ্জামান
বাকৃবি থেকে
প্রকাশিত : ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:০১ বিকাল
bd24live style=

সচেতনতার মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: অধ্যাপক বাহানুর

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্যে মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমপক্স এর চেনার উপায়, গঠন, আক্রান্ত ব্যক্তির উপসর্গ, সংক্রমণ, প্রতিরোধে করণীয়, চিকিৎসা ও বাংলাদেশে এমপক্সের ঝুঁকি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ও অণুজীব বিজ্ঞানী ড. মো. বাহানুর রহমান। তিনি আরো বলেছেন, সচেতনতার মাধ্যমে মাঙ্কিপক্স নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

এমপক্স রোগটি মাঙ্কিপক্স ভাইরাস দ্বারা সৃষ্টি হয় যা পক্সভিরিডি পরিবারের অর্থোপক্সভাইরাস গোত্রের একটি ডাবল-স্ট্র্যান্ডেড ডিএনএ ভাইরাস এবং ক্লেড ১ ও ক্লেড ২ এই দুটি ধরণ রয়েছে। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে এটি ডিম্বাকার ইটের আকৃতি প্রদর্শন করে।

এমপক্সের উপসর্গ সম্পর্কে অধ্যাপক জানান, এমপক্স আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে ফুসকুড়ি, জ্বর, গলা ব্যথা, মাথাব্যথা, পেশী ব্যথা, পিঠে ব্যথা, দূর্বলতা, লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণগুলো দেখা যায়। ব্যক্তির দেহে ভাইরাসের লক্ষণ ও উপসর্গ সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যে শুরু হয় এবং প্রায় দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয়। ফুসকুড়ি একটি চ্যাপ্টা ঘা হিসাবে শুরু হয়ে ফোস্কায় পরিণত হয় এবং চুলকানি বা ব্যথা হতে পারে। ক্ষত হাতের তালু, পায়ের তলা, মুখ, গলা, কুঁচকি, যৌনাঙ্গ ও এর আশপাশে এবং মলদ্বারসহ শরীরের যে কোনও জায়গায় হতে পারে। তবে ফুসকুড়ি সেরে যাওয়ার সাথে সাথে ক্ষতস্থানও শুকিয়ে যায়। এছাড়া এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিরা নিউমোনিয়া, কর্নিয়ার সংক্রমণ, ব্যথা বা গিলতে অসুবিধা, বমি, ডায়রিয়া, অপুষ্টি, সেপসিস (শরীরে ব্যাপক প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া সহ রক্তের সংক্রমণ), মস্তিষ্কের প্রদাহ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

এমপক্সের সংক্রমণ সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। এমপক্স ভাইরাস ত্বকের ক্ষত, থুথু, লালা, নাকের পানি ও যৌনাঙ্গের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এমনকি কথা বলা, কাশি বা হাঁচির মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির জামাকাপড়, কম্বল, তোয়ালে, খাবারের পাত্র ব্যবহার করলেও ভাইরাসটি সংক্রমিত হতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন ছোট প্রাণি যেমন ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ সংক্রমিত হলে তাদের কামড় বা আঁচড়ের মাধ্যমে পশুতে ও এমনকি মানুষেও ভাইরাসটির সংক্রমণ ঘটে। এ রোগের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে শিশু, গর্ভবতী নারী, বয়স্কসহ দুর্বল রোগপ্রতিরোধ সম্পন্ন ব্যক্তিরা।

এমপক্স ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, এমপক্সের বিস্তার রোধ করার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকতে হবে। প্রযোজনে বাড়িতে বা হাসপাতালে আইসোলেশন এর ব্যবস্থা করা উচিত। আক্রান্ত প্রাণী যেমন ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকা। সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে বারবার হাত ধোয়া। বিশেষ করে এমপক্স আক্রান্ত ক্ষতস্থান স্পর্শ করার আগে এবং পরে। ক্ষত ঢেকে রাখা এবং মাস্ক ব্যবহার করা। আক্রান্ত ব্যক্তির ত্বক শুষ্ক রাখা। মুখের মধ্যে ঘা হলে নোনা জল দিয়ে ধোয়া। শরীরের ঘা হলে সিটজ বাথ, বেকিং সোডা বা ইপসম সল্ট দিয়ে উষ্ণ স্নান করা। যৌন মিলনের সময় কনডম ব্যবহার করা এমপক্স হওয়ার ঝুঁকি কমায়। ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ঔষধ খেতে হবে।

এমপক্স রোগ নির্ণয় সম্পর্কে অধ্যাপক বাহানুর বলেন,  গবেষণাগারে পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) দ্বারা এমপক্সের ভাইরাল ডিএনএ নমুনা থেকে সনাক্ত করা হয়। নমুনা হিসেবে সরাসরি ক্ষতস্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ক্ষত না থাকলে গলা ও মলদ্বার থেকে নমুনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। সাধারণত এমপক্সের আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয় না। আবার অ্যান্টিবডি সনাক্তকরণ পদ্ধতিগুলিও তেমন কার্যকর নয়।

চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এমপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শের আসলে চার দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত তবে কোন লক্ষণ দেখা না দিলে ১৪ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন দিতে হবে। বেশ কিছু অ্যান্টিভাইরাল যেমন গুটি বসন্তের চিকিৎসায় ব্যবহৃত টেকোভিরিম্যাট এমপক্সের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হচ্ছে। সম্প্রতি আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত ইউরোপ, যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড ও কানাডা জুড়ে 'এমভিএ-বিএন' নামে এমপক্সের কেবল একটি ভ্যাকসিন অনুমোদিত হয়েছে। 'এমভিএ-বিএন' সাধারণত ২৮ দিনের ব্যবধানে দুটি মাত্রায় দেওয়া হয়। তবে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনে আরও ৩টি ভ্যাকসিন রয়েছে।

এগুলো হলো জাপানের এলসি-১৬, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার এসিএএম-২০০০ এবং রাশিয়ার অর্থোপক্সভ্যাক। এগুলোর সবই মূলত প্রস্তুত করা হয়েছিল গুটিবসন্ত ও অর্থোপক্স গোত্রের অন্যান্য ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে। তবে এককভাবে এমপক্সের ভ্যাকসিন এখনও গবেষণাধীন। এছাড়া ‘বিএনটি-১৬৬’ বিশেষভাবে মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের অ্যান্টিজেনের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয় যা কোভিড-১৯ এর জন্য তৈরি ভ্যাকসিনের মতো একটি এমআরএনএ ভ্যাকসিন।

বাংলাদেশে এমপক্সের ঝুঁকি সম্পর্কে অধ্যাপক বলেন, ২০২২ সালে এমপক্সের প্রাদুর্ভাব খুবই দ্রুতই ইউরোপ ও আমেরিকাতে ছড়িয়ে পড়ে। তখন চিকিৎসা বিঞ্জানীরা এর কারণ হিসেবে যৌনকার্যকালাপকে উল্লেখ করেন। এছাড়া ওই বছর সুদান প্রজাতন্ত্রের শরণার্থী শিবিরগুলিতেও এমপক্সের প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত কোন ব্যক্তি শনাক্ত হয়নি। তবে এমপক্স সংক্রমিত দেশগুলো থেকে আগত প্রবাসী ও ভ্রমনকারীদের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। কোভিড-১৯ মহামারীর মতো মাঙ্কিপক্স ভাইরাসের সাম্প্রতিক প্রাদুর্ভাব ব্যাপক শঙ্কা সৃষ্টি করেছে তবে এটি প্রতিরোধ করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা গুরুত্বপূর্ণ। সচেতন থাকলে এই রোগটির নিরাময় সম্ভব।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com