• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ২৩ মিনিট পূর্বে
শেখ সাদী ভূইয়া
যবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:০৩ বিকাল
bd24live style=

যবিপ্রবি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঢাবি শিক্ষার্থী হত্যাচেষ্টা মামলা 

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কর্মকর্তা সাইফুর রহমানের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের(ঢাবি) তৎকালীন পাঁচ শিক্ষার্থীকে হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত সাইফুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সংস্থাপন প্রশাসন-১ কর্মরত কর্মকর্তা এবং তৎকালীন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক। 

গত ২ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের শাহবাগ থানায় ভুক্তভোগী ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাসরুর, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বাপ্পি মিয়া, মনোবিজ্ঞান বিভাগের ইবরাহীম হোসেন, মেহেদী হাসান এবং আবদুল গাফফারের পক্ষে মাসরুর বাদী হয়ে এ হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।

মামলার আসামীরা হলেন- হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো: জহিরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমানে যবিপ্রবির কর্মকর্তা মো: সাইফুর রহমান, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, একই হলের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয় সম্পাদক এস.এম. খালেদ চৌং, সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ আশিকুর রহমান, সাবেক দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান মিজান, সাবেক সহ সম্পাদক হাসিবুল আলম সৌরভ, সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন, (ওরফে সোহেল), সাবেক পাঠাগার সম্পাদক শেখ আরিফুল ইসলাম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত ইমতিয়াজ (ওরফে ইমতিয়াজ আহমেদ শুভ্র), সাবেক সহ-সম্পাদক নাঈম আহমেদ, সাবেক উপ-ছাত্র ও বৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দিন(সম্প্রতি শাহবাগ থানায় ধর্ষণের অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত আসামি) এবং সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক ইমরান হাসান।

এজহারে মামলার বাদী মাসরুর অভিযোগ করেন, তৎকালীন মুহসীন হল ছাত্রলীগের উল্লিখিত ৪ থেকে ১৩ নং আসামীরা আমাদের নামের লিস্ট করে "শিবির ট্যাগ" দিয়ে তৎকালিন মুহসীন হল ছাত্রলীগ সভাপতি মো: জহিরুল ইসলাম, সেক্রেটারি মেহেদী হাসান সানি ও ঢাবি আইন সম্পাদক মোঃ সাইফুর রহমানের নিকট আমাদের নামের লিস্টটি প্রেরণ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট রাত ১১ টায় এজাহারভুক্ত আসামীরা আমাকে ডাকতে এসে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করে এবং আমাকে টেনেহিঁচড়ে হল সভাপতির রুমে নিয়ে যায়। আমি রুমে ঢুকে বাপ্পী মিয়াকে রক্তাক্ত শরীরে হাত-পা ভাঙ্গা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এবং ব্যথার যন্ত্রণায় আত্মচিৎকার দেখে আমি আঁতকে উঠি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেই রুমে থাকা জহিরুল, সানি ও সাইফুর বলে ওঠে, “এই শুয়োরের বাচ্চা শিবির। দেখ তার মুখে দাড়ি আছে সে মাদ্রাসায়ও পড়েছে” এই বলে তাঁরা আমার ফোন চেক করে। বিভিন্ন ইসলামি পেইজ ও ইসলামিক ব্যক্তিত্বদের প্রোফাইলে লাইক ও কমেন্ট পায়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে পোস্ট করা,ভিডিও শেয়ার করা, ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান, অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দীন খান সহ বিজ্ঞজনদের ছবি ও পোস্টে কমেন্ট পায়। একপর্যায়ে তাঁরা পালাক্রমে রড, লোহা সদৃশ ধাতব বস্তু, জিআই পাইপ ও স্টাম্প দিয়ে আমার হাত, পা, পিঠে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। রগ কাটার জন্য পাশের রুম থেকে ছুরি নিয়ে আসে। চিৎকার যাতে বাইরে না যায় সেজন্য উচ্চশব্দে সাউন্ড বক্স মিউজিক বাজিয়ে দেয়া হয়। আমাকে মারতে মারতে একজন ক্লান্ত হয়ে পড়লে আরেকজন আসে, সে জিরিয়ে নিলে আরেকজন আসে। এভাবে দীর্ঘসময় যাবৎ আমাকে মারতে থাকে। একপর্যায়ে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফেটে গিয়ে রক্ত ফ্লোরে টপ টপ করে পড়তে থাকে। আজরাইল আসন্ন মনে করে আমি কালেমা পড়তে থাকি। 

এজহারে আরো বলা হয়, একসময় আমি এজাহারভুক্ত আসামি সৈয়দ আশিকুর রহমানের পায়ে ধরে প্রাণ ভিক্ষা চাই, তৎক্ষণাৎ সে আমাকে লাথি মেরে ফেলে দেয়। এরপর সবাই এলোপাথাড়িভাবে হাত,পা ও স্টাম্প দিয়ে আমাকে প্রচণ্ড মারধর করে জোরপূর্বক বিভিন্ন স্বীকারোক্তি আদায় করে এবং বলে "একে ছাঁদ থেকে ফেলে দে, এই শিবিরকে জানে মেরে ফেলতে হবে”। এরই মধ্যে সোহেল একটি ছুরি নিয়ে এসে আমার জিহ্বা টেনে বের করে কেটে ফেলতে চায়, জিহ্বায় ছুরি চালায় এতে করে আমার জিহ্বার সামান্য অংশ কেটে গিয়ে রক্ত বের হয়। আমার পায়ের রগ কাটতে উদ্যত হয়। এভাবে নানান মধ্যযুগীয় কায়দায় এজাহারভুক্ত আসামিগণ অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালায়। এরপর আসামীরা আমাদের মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে টেনে হল গেটে ফেলে রাখে। এসময় সাংবাদিকরা আসলে তাদেরকে সঠিক তথ্য নিতে বাঁধার সৃষ্টি করে। আসামি জহির ও সানি পুলিশকে কল দেয়। পুলিশ এসে আমাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। ঢামেকে আমাদের প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। সেখান থেকে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সহযোগিতায় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করি। প্রাণনাশের হুমকির কারণে মুগদা মেডিকেল থেকে সম্পূর্ণ চিকিৎসা সম্পন্ন না করেই বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হই। আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত ও ক্ষতের চিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছি। এই মর্মান্তিক নির্যাতনের ঘটনা আমার জীবনটাকে এলোমেলো করে দিয়েছে। তৎকালীন মুহসিন হল প্রভোস্ট নিজামুল হক ভূঁইয়া, ভিসি মো: আখতারুজ্জামান ও প্রক্টর এ এম আমজাদ আমাদের নির্যাতনের বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

ভুক্তভোগী ও মামলার বাদী মাসরুর বলেন, এই ঘটনার পরপরই আমার বাবা স্ট্রোক করেন। আমি সহ আমার পরিবার আর্থিক,শারীরিক, মানসিক ভাবে প্রচুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। ভার্সিটিতে আমার সাথে কাউকে কথা বলতে দেওয়া হতো না, আমাকে সবার থেকে একদম একা করে দেওয়া হয়েছিলো। আমি এখনো সেরাতের ক্ষত যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছি, আমরা একপ্রকার পঙ্গু হয়ে গেছি। সেদিন রাতে মরে গেলে, আবরার ফাহাদের মৃত্যুর মতো আমার মৃত্যু নিয়েও হয়ত নিউজ হতো, ছাত্র সমাজ সোচ্চার থাকতো। আমাদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চায়।

এ বিষয়ে যবিপ্রবির কর্মকর্তা ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক মো: সাইফুর রহমান বলেন, আমি ২০০৯-১০ সেশনে ঢাবিতে ভর্তি হয়। ২০১৬ সালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি হয় তখন তৎকালিন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাহের হোসেন প্রিন্সের সাথে আমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো থাকায় ২০১৬ সালে আমি ঢাবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক হয়। ২০১৭ সালের যে ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তার সাথে আমার ন্যূনতম সম্পৃক্ততা নেই। আমি সরকারি চাকরি করি বিধায় আমার সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছে।

মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে এস আই সোহেল সিদ্দিক বলেন, আমরা ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি এবং ঘটনার সাক্ষীও রয়েছে। আমরা অভিযুক্তদের কাউকে এখনো আটক করতে পারিনি। তবে দ্রুত আটক করার চেষ্টা চলছে।

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com