• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৮ ঘন্টা পূর্বে
আহমেদ সানি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৮:৩৩ রাত
bd24live style=

কে হচ্ছেন জবির পরবর্তী উপাচার্য 

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে ২০২৩ সালের ৩০ নভেম্বর নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম । তবে তিনি পূর্ণ সময় দায়িত্ব পালন করে যেতে পারেননি। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন।

এ পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকলের এখন একটাই প্রশ্ন— কে হচ্ছেন জবির পরবর্তী উপাচার্য?

জগন্নাথ কলেজ থেকে ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এখন পর্যন্ত ৬ জন উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। বিগত উনিশ বছরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত অগ্রগতি লাভ করেনি। এর অন্যতম কারণ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া। এসব উপাচার্যরা তাদের রুটিন দায়িত্ব পালন করেছেন ঠিকই, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও শিক্ষার্থীদের মৌলিক সমস্যা সমাধানে তাদের ভূমিকা নিয়ে রয়েছে অনেক প্রশ্ন। এমনকি দুর্নীতির অভিযোগ আছে দায়িত্ব পালন করা একাধিক উপাচার্যের বিরুদ্ধে।

জানা যায়, ২০০৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞানের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ. কে. এম. সিরাজুল ইসলাম খান ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রথম উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আবু হোসেন সিদ্দিক ২০০৯ সাল এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ ২০১৩ সাল পর্যন্ত দ্বায়িত্ব পালন করেন। চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে ২০১৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান যোগদান করেন। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নিয়োগ পান।এরপর ২০২১ সালের ১ জুন পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য পদে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইমদাদুল হক। তবে তিনি পূর্ণ সময় দায়িত্ব পালন করে যেতে পারেননি। তার হঠাৎ মৃত্যু হলে ২০২৩ সালের শেষ দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন।

উপাচার্যের দৌড়ে আলোচনায় আছেন যারা-

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থেকে উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম। তিনি ১৯৮৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবেও কাজ করেছেন। ২০০৮ সালে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল রুলস রেগুলেশন তৈরিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

শিক্ষার্থীদের মাঝে আলোচনায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. লুৎফর রহমান। ২০১১ সালে ০২ জানুয়ারি তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী অধ্যাপক পদে যোগদান করেন। ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। পরে ২০২৩ সালের ৮ মার্চে রসায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০২২ সালের ১১ ই জানুয়ারি গ্রেড -২ অধ্যাপক পদে উন্নীত হন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সদস্য, বিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান অনুষদ নির্বাহী কমিটির সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক রুলস এন্ড রেগুলেশন প্রণয়ন কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি প্রণয়ন কমিটির সদস্য সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন।

ড. এ কে এম লুৎফর রহমান জাপানের কিউসু বিশ্ববিদ্যালয় ( জাপানের প্রথম পাঁচটি ইম্পেরিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি) থেকে তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উপর পিএইচডি ও ক্যাটালাইটিক ন্যানো সিনথিসিস এর ( নানো টেকনোলজি) উপর পোস্টডক সম্পন্ন করেন তিনি। এর আগে ২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম সরকারি কলেজ অধ্যাপনা করেছেন। ক্যাম্পাসে তিনি একজন সুবক্তা, স্পষ্টবাদী, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ শিক্ষক হিসেবে পরিচিত। দেশী -বিদেশি জার্নালে তাঁর ৪৮ টির বেশি পিয়ার রিভিউ গবেষণা পত্র প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত ১৭টি শিক্ষা উন্নয়ন ও গবেষণা প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ রসায়ন সমিতি এবং বাংলাদেশ স্টেম ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য হিসেবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ সালের মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশ পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডে সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এছাড়া উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে আলোচনায় তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আছেন, ফিন্যান্স বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু মিছির। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্পোরেট ফাইন্যান্সিয়াল পলিসিস-এ পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন। এর আগে তিনি ঢাবি থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এছাড়া তার দেশও দেশের বাইরের বিভিন্ন জার্নালে গবেষণা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিকট সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ ও উদার হিসেবে পরিচিত তিনি।

এদিকে চতুর্থ ব্যক্তি হিসেবে উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে রাজনৈতিক তদবিরে এগিয়ে আছেন জবি বিএনপিপন্থি সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন। সাদা দলের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও তিনি সারাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ (ইউট্যাব)- এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব। কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রভাবশালী নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রইছ উদ্দিনের সাথে রয়েছে বিএনপির উচ্চ পর্যায়ে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, বিগত উপাচার্যরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের তেমন কোন দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন না করা, আবাসনের ব্যাপারে তেমন কোন উদ্যোগ না নেওয়ার কারণে বাহিরের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের উপাচার্য হিসেবে দেখতে চান না শিক্ষার্থীরা। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থেকে উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে বিগত কিছুদিন একাধারে ক্যাম্পাসে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যতীত অন্য কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যদি কেউ জবির উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে তাকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক থেকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি প্রদান করেন শিক্ষার্থীরা।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক। আমাদের মতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য অনেক যোগ্য ব্যক্তি আছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। আপনারা জানেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে গ্রেড-১ পদমর্যাদায় আছেন ৩৬ জন। তাদের মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।আমাদের চাওয়া এসব শিক্ষকদের মধ্যে থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক।

আইন বিভাগের অপর এক শিক্ষার্থী মাহফুজ হাসান বলেন, আমাদের উপাচার্য হিসেবে যাকেই নিয়োগ দেওয়া হোক তাকে অবশ্যই  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আরেকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, সকল শিক্ষকেরা পাঁচ আগস্টের আগের দিন পর্যন্ত ছাত্র সমাজের আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে, শিক্ষার্থীদেরকে নানান ট্যাগ দিয়ে বিপদে ফেলতে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে তাদের উপাচার্য হওয়ার শত যোগ্যতা থাকলেও তাদের উপাচার্য নিয়োগ দিলে ছাত্রসমাজ কখনোই মেনে নিবে না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যারা প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে সমর্থন দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকেই আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই। 

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com