শিল্পাঞ্চল সাভারের আশুলিয়ায় হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বৃদ্ধি, গত মাসের বেতনসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড নামের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা।
রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকায় অবস্থিত ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় এ বিক্ষোভ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভের সময় কারখানায় ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এছাড়া র্যাব ও সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
সরেজমিনে গিয়ে ইউফোরিয়া অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঈদে ছুটি নিলে হাজিরা বোনাস কেটে না নেয়া, চাকরির বয়স ৫ পূর্ণ হলে ৫ টা বেসিকের সমপরিমাণ সার্ভিস বেনিফিট, টিফিন বিল বৃদ্ধিসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন কারখানার শ্রমিকেরা। এ সকল দাবিতে দুইদিন কারখানা বন্ধের পর গত শনিবার কারখানা খুলে দেয়া হলে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেন। দাবি আদায়ে প্রতিটি ফ্লোর থেকে ৪-৫ জনকে নিয়ে ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দল গঠন করা হয়। ওই দলটি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দাবিগুলো নিয়ে কথা বললেও দাবি মানা হয়নি।
তারা আরও বলেন, শুধু টিফিন বিল বাড়ানো হয়। রবিবার একজন প্রতিনিধিকে ডেকে মারধর করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। পরে সে অন্যান্য শ্রমিকদের বিষয়টি জানালে কাজ বন্ধ করে কারখানার নিচে এসে অবস্থান নেন। অন্যান্য দাবির সঙ্গে তাঁরা গতমাসের বেতনের দাবি জানান। দুপুর ১ টায় অ্যাকাউন্টে বেতন ঢুকবে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে শুধু টিফিন বিল ও ওভার টাইমের টাকার মেসেজ পান তারা। বেতন না পাওয়ায় শ্রমিকেরা কারখানায় বিক্ষোভ শুরু করেন।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের উপর চড়াও হন। পরে শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বের হয়ে কারখানা সংলগ্ন দরগারপাড় সড়কে অবস্থান নিলে এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাঁদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
র্যাব জানায়, দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ সদস্যরা চেষ্টা চালায়। বিকেলের দিকে পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। শ্রমিকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হলেও একপর্যায়ে শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠে। তারা র্যাবের একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টাসহ ভাঙচুর করেন। সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়েন।
এ বিষয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, দুষ্কৃতিকারীরা র্যাবের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে। পরে আমরা আগুন নেভাতে সক্ষম হই। এছাড়া তাঁরা সেনাবাহিনীর একটি গাড়িতেও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করেন। আমাদের টিম ছায়া তদন্ত করছে। শিল্পাঞ্চলে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে যেসকল দুষ্কৃতিকারীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর