• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০২ এপ্রিল, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৬ মিনিট পূর্বে
নজরুল ইসলাম জিসান
ইবি থেকে
প্রকাশিত : ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৩:৩৯ দুপুর
bd24live style=

ইবিতে আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য, হল ছাড়া হলেন শিক্ষার্থী

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে ধাওয়া দিয়ে হল ছাড়া করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১ টায় বিশ্বিবদ্যালয়ের লালন শাহ হলে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের আহসানুল্লাহ অলি ও ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নাফিজ ইকবাল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এদিন সকালে হলের গণরুম বাতিল ঘোষণা করে ও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় হয় প্রশাসন। এ নিয়ে অনাবাসিক ও আগে গণরুমে থাকা শিক্ষার্থীদের নিয়ে টিভি কক্ষে মিটিং ডাকে অলি। সেখানে বিভিন্ন জন তাদের মত প্রকাশ করে। তবে অলি তার বক্তব্য দিতে গিয়ে দাবি করেন ১৭ জুলাই হল বন্ধের পর ক্যাম্পাসে তেমন কোন আন্দোলনই হয়নি। এছাড়া আন্দোলনকারী ও সমন্বয়কদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর নানা মন্তব্য করেন। এতে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হলে হট্টগোল ও বাগবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে অলিকে মারধর করে ধাওয়া দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এতে সে দৌঁড়ে ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যায়। পরে তার বিভাগের জুনিয়র নাফিজ অলির পক্ষ নিলে শিক্ষার্থীরা তাকেও ধাওয়া দেয়  এবং সেও ক্যাম্পাসের বাইরে চলে যায়। পরে সমন্বয়ক প্যানেলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে কথা বলে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন।

হলের শিক্ষার্থীদের বলেন, জুলাই ও আগস্টের পুরো সময় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেছে। কিন্তু অলি তার বক্তব্যে দাবি করে ১৭ জুলাই হল বন্ধের পর ক্যাম্পাসে তেমন কোন আন্দোলনই হয়নি। অলি আগেও ছাত্রলীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল। তবুও হলে বৈধ সিট আছে দাবি করায় সে হলে থাকছে। কিন্তু সে হলে উঠার পর থেকেই সে আন্দোলনকারীদের বিভক্ত করা ও সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে। মিটিং ডেকে সেখানে আন্দোলন নিয়ে যে মন্তব্য করা হয়েছে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের আঘাত করেছে। সে আন্দোলনকে ছোট ও বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। যা কোনোভাবেই মানা যায় না। আন্দোলনে সামনে থাকা শিক্ষার্থীদের হেয় করে সে আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করেছে। এমনকি অলি ও নাফিস হলের মধ্যে গ্রুপিং করে আন্দোলনকে বিতর্কিত করা ও নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছিল।

এ বিষয়ে মন্তব্যকারী আহসানুল্লাহ অলি বলেন, ‘লালন শাহ হলের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হলের টিভি রুমে আলোচনা হচ্ছিল। এসময় আমি আমার বক্তব্যে বলি, বর্তমানে আন্দোলনকারীরা ছাত্রদের ফেইসবুক পোস্টের উপর ভিত্তি করে ছাত্রলীগ ট্যাগ দিয়ে হল থেকে নামিয়ে দেয়। অথচ আন্দোলনকারী হাসানুল বান্না নামের একজনও ফেসবুকের গ্রুপে বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনা, বঙ্গবন্ধু এবং আওয়ামী সরকারকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ১৭ জুলাই বন্ধ হওয়ার পর আন্দোলন ঝিমিয়ে পড়ে এবং আমার বিভাগের শিক্ষক মতিন স্যাররা ২রা আগস্টের পর থেকে একাত্মতা প্রকাশ করলে পুনরায় আন্দোলন বেগবান হয় বলে মন্তব্য করি। তবে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা আমার বক্তব্য ভুল বুঝে আমার ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায়ে আমাকে মারধর করে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। এসময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান তিনি।’

এদিকে শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় ক্যাম্পাস ছাড়া আরেক শিক্ষার্থী নাফিজ ইকবাল বলেন, ‘আমার বিভাগের বড় ভাইয়ের সাথে ঘটনাটি ঘটার পর আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছিলাম। এসময় তারা আমার পরেও চড়াও হয়। এক পর্যায়ে আমাকেও ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। এসময় তিনি আরও বলেন, ইতোপূর্বে যারা হলে থেকেছে একটা সিটের জন্য বাধ্যতামূলক ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম মিছিল মিটিংয়ে অংশ নেয়া লেগেছে। তাই বলে সবাইতো আর মন থেকে ছাত্রলীগ করে নাই।’

এদিকে আহসানুল্লাহ অলির করা অভিযোগ নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না বলেন, ‘জানা-অজানা তথ্য’ নামের আমাদের একটি ফেসবুক গ্রুপ আছে। যেখানে চাকরির প্রস্তুতির লক্ষ্যে সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও প্রকল্পের তথ্য শেয়ার করা হতো। এটিকে সে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের ইতিবাচক প্রচার বলে দাবি করে, যা একদমই হাস্যকর। আমি আন্দোলনের শেষ পর্যন্ত সক্রিয়ভাবে সামনের সারিতে ছিলাম। যা সবাই দেখেছে। সেখানে সে পড়াশুনার ওই বিষয় নিয়ে সবার কাছে আন্দোলনকারী হিসেবে আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে। একইসঙ্গে সে সমন্বয়ক ও ছাত্র আন্দোলন নিয়েও বিতর্কিত মন্তব্য করে। আমার বিষয়ে সে যাই বলুক আন্দোলনকে নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য আমাদের প্রচণ্ড আঘাত করেছে। হলের শিক্ষার্থীরাও এটি মেনে নিতে পারে নাই। কারণ, যারা পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবির সামনে জীবন বাজি রেখে আন্দোলন চলমান রেখেছিল তাদেরকে সে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ফলে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তার ওপর চড়াও হয়।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ‘অলি নামের একজন যে আগে ছাত্রলীগকর্মী ছিল, সে শিক্ষার্থীদের সামনে আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে। ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হলের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে সে হল ছেড়ে পালিয়ে যায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন পরবর্তী প্রশাসন শূন্য ক্যাম্পাসকে আমরা শান্তিপূর্ণ রাখতে চেষ্টা করছি। কিন্তু একটি গ্রুপ ছাত্রলীগের ‘বি’ টিম হয়ে প্রতিনিয়ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা এগুলোকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করব না। বিশেষ করে আন্দোলন ও আন্দোলনের ফলকে কেউ বিতর্কিত করার চেষ্টা করলে এটি কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।’

লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন বলেন, ‘গণরুমে র‌্যাগিংসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনার কারণে আমাদের আগে থেকেই চিন্তা ছিল গণরুম বাতিলের। আমরা নোটিশ দিয়ে গণরুম বাতিল করেছি। আগামীতে আবাসিকতার বাইরে কেউ যেন হলে না থাকে সেজন্যই এটি করা। এ নিয়ে আমার কাছে কেউ কোন কথা বলেনি। এছাড়া রাতে ছাত্রদের মধ্যেও একটি ঘটনা ঘটেছে শুনেছি। এটি নিয়েও কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com