শিল্পাঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় সকাল থেকে বেশিরভাগ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন শ্রমিকরা। তবে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ ও সেসব সুরাহা না হওয়ায় পরবর্তীতে অন্তত ৭৯টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। তবে বেশিরভাগ কারখানা সচল রয়েছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ও বাড়ানো হয়েছে নজরদারি।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম। এর আগে, রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে যথাসময়ে কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকরা।
তবে বেলা বাড়তেই কিছু কারখানায় বিভিন্ন দাবিতে শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করলে কারখানাগুলোতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্য কারখানাও ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া বেশিরভাগ কারখানা সচল রয়েছে বলে জানা যায়। গত কয়েকদিনে যে-সকল এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভের ঘটনা ঘটছে সেসকল এলাকায় আজও নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকার পার্ল গার্মেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের সামনের মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী, শিল্প পুলিশ ও এপিবিএন সদস্যরা।
এছাড়া আশুলিয়ার বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়কের নরসিংহপুর এলাকায় বিভিন্ন কারখানার সামনে সেনাবাহিনী, এপিবিএন ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যরা।
এদিকে মালিক, শ্রমিক ও খাত সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে গার্মেন্টস শিল্পের বর্তমান পরিস্থিতি নিরসন করা সম্ভব বলে মনে করছেন অনেকে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, আশুলিয়ার মোট কারখানার শতকরা ২ শতাংশের কম কারখানায় সমস্যা হচ্ছে। গিল্ডান, নাসা গ্রুপসহ যে-সব কারখানার মালিক আন্তরিক ছিল সেগুলোর সমাধান হয়ে গেছে। মালিকপক্ষ একটু আন্তরিক হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কারখানার আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, তাদের অধিকাংশ দাবিগুলোর বিষয়ে শ্রম আইনেই বলা আছে। সেক্ষেত্রে মালিকপক্ষ শুধু শ্রমিকদের শ্রম আইন অনুসারে কারখানা পরিচালিত হবে এবং এর বাইরে হাজিরা বোনাসের বিষয়টি উভয়পক্ষ আলোচনা করে ঠিক করে নিলেই সমস্যার সম্ভব।
পোশাক খাতে অস্থিরতায় জড়িতদের শনাক্তে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে র্যাব ৪ সিপিসি ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর জালিস মাহমুদ খান বলেন, আমাদের বর্তমানে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা ছায়া তদন্ত করছি। আমাদের গোয়েন্দা কাজ করছে। আমরা নির্দিষ্ট করতে সক্ষম হচ্ছি, কারা এর পেছনে মদদদাতা ও কারা এই তৈরি পোশাক খাতকে অস্থিতিশীল করতে কাজ করছে। আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেব। যারা এ ধরনের দুষ্কৃতীমূলক কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব। বাংলাদেশ এই তৈরি পোশাক খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। এই খাতকে সচল রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর