• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০২ মার্চ, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৬ ঘন্টা পূর্বে
জান্নাতুল বিশ্বাস
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:৩৭ রাত
bd24live style=

স্বামীকে খুন করে ঘরে পুঁতে রাখলেন দ্বিতীয় স্ত্রী

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

স্বামীকে খুন করে ঘরের মধ্যে একটি কাঠের চৌকির নিচে মাটিতে তার লাশ পুঁতে রাখলেন দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে একচালা টিনশেড টিনের বেড়াযুক্ত ছাপরা ঘরের মধ্যে একটি কাঠের চৌকির নিচে মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়েছে যুবকের অর্ধ গলা - পঁচা লাশ। ঘটনাটি নড়াইল সদর থানার কাইচদাহ গ্রামে। নিহতের নাম মো.শিমুল হোসেন গাজী (৩৪)। নিহত শিমুল হোসেন গাজী যশোর জেলার অভয়নগর থানার শ্রীধরপুর গ্রামের মো.আব্দুল্লাহ গাজী ছেলে।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ ওই যুবকের দ্বিতীয় স্ত্রী পলি খাতুনকে গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারকৃত পলি খাতুন (৩৬) নড়াইল সদর থানার কাইচদাহ গ্রামের মো. নূর মোহাম্মদ মোল্যার মেয়ে। পারিবারিক কলহের জেরে তাকে খুন করা হয়েছে বলে আসামি দোষ স্বীকার করে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

পুলিশ জানিয়েছে, পলি খাতুন ২ বছর পূর্বে হতে নড়াইল সদর থানার কাইচদাহ গ্রামে জমি ক্রয় করে বাড়ি-ঘর তৈরি করে তার প্রথম স্বামীর দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়া বসবাস করতে থাকে। শিমুল হোসেন বেশিরভাগ সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রী পলি খাতুনের বাড়িতেই থাকত। মাঝে-মধ্যে শ্রীধরপুর গ্রামে তার নিজ বাড়িতে দুই একদিন থেকে আবার দ্বিতীয় স্ত্রী পলি খাতুনের কাছে চলে আসতেন। গত ৩১ আগস্ট বিকাল চারটার দিকে শিমুল হোসেন শ্রীধরপুরে তাদের বাড়িতে এসে সংসারের বাজারের জন্য ৫০০ টাকা দিয়ে তিনি বাজার করার কথা বলে বাড়ি থেকে চলে যান। পরবর্তীতে গত ৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শিমুলের মোবাইলে তার ছেলে রায়হানের (১৪) মোবাইল থেকে একটি মেসেজ আসে যে তাকে কারা ধরে নিয়ে গেছে। কোথাও আটকে রেখেছে। তার মোবাইল ফোন ও টাকা কেড়ে নিয়েছে। সময় পেলে পরে কথা বলবে। উক্ত মেসেজ পাওয়ার পরে শিমুলের মোবাইল নম্বরে ফোন করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

পরবর্তীতে পলি খাতুনকে ইমরুল ইসলাম ফোন করে তার ভাই শিমুলের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান যে,২ সেপ্টেম্বর রাত্র ১০টার দিকে শিমুল তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে কোথাও চলে গেছে। এরপর থেকে তিনি আর কিছুই জানেন না। ইমরুল ইসলাম তার ভাই শিমুলকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয়টি গত ৭সেপ্টেম্ব যশোর জেলার অভয়নগর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু বাদীর ভাইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাড়ি নড়াইল এবং তার ভাইও নড়াইলে বসবাস করায় অভয়নগর থানা পুলিশ তাদেরকে নড়াইল থানা পুলিশের সহায়তা নিতে বলেন। বাদীর ভাইয়ের মোবাইল নম্বর বন্ধ থাকায় ও পলি খাতুনও কোন তথ্য দিতে না পারায় তিনি তার ভাই শিমুলকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করতে থাকেন। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়  ৯ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে নড়াইল সদর থানার কাইচদাহ গ্রামে শিমুল হোসেনের দ্বিতীয় স্ত্রী পলি খাতুনের বাড়িতে এসে তার ভাই কোথায় আছে জানতে চাইলে পলি খাতুন তাদের উপর উত্তেজিত হয়ে যায়। একপর্যায় আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে গেলে তারা পার্শ্ববর্তী শেখহাটি পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে ঘটনার বিস্তারিত জানালে পুলিশ পলি খাতুনকে ফোন করে ক্যাম্পে ডাকেন। পলি খাতুন ক্যাম্পে আসলে পুলিশ তাকে বাদীর ভাইকে খুঁজে না পাওয়ার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে এলোমেলো কথাবার্তা বলাতে সন্দেহ হয়। তখন পুলিশসহ বাদীপক্ষ পুনরায় পলি খাতুনের বাড়িতে গিয়ে বাড়ি-ঘর সহ আশপাশে খোঁজাখুজি করাকালে আসামির বাড়ির পশ্চিম পোতায় একচালা টিনশেড টিনের বেড়াযুক্ত ছাপড়া ঘরের মধ্যে একটি কাঠের চৌকির নিচে মাটি খোড়ার চিহ্ন ও মাটি একটু উঁচু দেখতে পায়। এছাড়া সেখানে সিমেন্টের বস্তায় বালু ভরে উপর করে রাখা দেখতে পায়। বিষয়টি তাদের কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হলে শেখহাটি ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মো. শফিকুল ইসলাম পলি খাতুনকে গ্রেফতার করেন।

নড়াইল জেলার নবাগত পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীর এর নির্দেশনায় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. দোলন মিয়া এবং নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ আসামি পলি খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় তিনি তার স্বামীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন। আসামি পলি খাতুনের দেখানো মতে তার ছাপড়ার মধ্যে গর্ত থেকে মাটি খুঁড়ে শিমুলের অর্ধ গলা-পঁচা লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মৃতদেহ নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

পলি খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে, গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত্র ১১টার দিকে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে তার স্বামীকে ভাতের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে খাওয়ায়। এতে তার স্বামী ঔষধ মেশানো ভাত খেয়ে অচেতন থাকা অবস্থায় ৩ সেপ্টেম্বর রাত ১টা ৩০ মিনিট থেকে ২টার মধ্যে পলি খাতুন তার স্বামীকে পাজা কোলে করে ঘর থেকে তার বাড়ির উঠানের উপরে শোয়াইয়ে সাদা রঙের লম্বা মোটা রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে উক্ত রশি গলায় প্যাঁচ দিয়ে টেনে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তার স্বামীকে খুন করে লাশ গুম করার জন্য তার বাড়ির পশ্চিম পোতায় একচালা টিনশেড টিনের বেড়াযুক্ত ছাপড়া ঘরের মধ্যে মাটি খুঁড়ে লাশ পুঁতে রাখে ও সিমেন্টের বস্তায় বালু ভরে উপরে রাখে এবং তার উপরে কাঠের চৌকি দিয়ে লাশ গুম করে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com