
পর্দা নিয়ে সংবেদনশীল মন্তব্য ও তাচ্ছিল্যমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে শিল্পকলা একাডেমির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক জামিল আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় জাবির কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে মূল গেট পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল করে আবার শহিদ মিনারে এসে সমাবেশ শেষ হয়। মানববন্ধনে প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী বনি আমিনের সঞ্চালনায় শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞানের (৪৭ব্যাচ) শিক্ষার্থী ওসামা বলেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর এরকম প্রকাশ্যে ইসলামবিদ্বেষী বক্তব্য শিল্প কলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে বসে তিনি কিভাবে দিতে পারেন? তাঁর এই সাহস কিভাবে আসে? তাঁর সাহসের যোগানদাতা কে বা কারা? আমরা চাই তিনি প্রকাশ্যে তাওবা করবেন এবং পদত্যাগ করবেন।
ফার্মেসি বিভাগের (৪৭ ব্যাচ) শিক্ষার্থী আহসান হাবিব বলেন, এ দেশের সব মানুষই ধর্মপ্রাণ। বাংলাদেশ ৯০% মুসলিমের দেশ। এই দেশে ইসলামের বিপক্ষে আঘাত আসলে আমরা সহ্য করবো না। তাদের অন্য কোনো পোশাকে সমস্যা নাই কিন্তু বোরকা ও দাঁড়ি টুপিতেই তাদের সমস্যা। এরকম ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে আমরা সবসময় প্রতিবাদ করে যাবো।
প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী নাদিম মাহিমুদ বলেন, ওয়াজ মাহফিলের বিরুদ্ধে নাটক গল্প তৈরির কথা বলে তিনি শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দিতে চান। নাটক সিনেমার মাধ্যমে মেয়েরা অশ্লীল পোশাক পড়বে তার মাধ্যমে তিনি এবং তার মতো ইসলামবিদ্বেষীরা ইসলামের সৌন্দর্য নষ্ট করবেন।
মানববন্ধন শেষে সঞ্চালক বনি আমিন কঠিন হুঁশিয়ারি দেন এবং জামিল আহমেদের পদত্যাগ দাবি করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় বেইলী রোডের মহিলা সমিতি মিলনায়তনে বক্তব্য দেন শিল্পকলা অ্যাকাডেমির নবনিযুক্ত মহাপরিচালক জামিল আহমেদ। ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ’ নামে ওই প্লাটফর্ম আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় সমসাময়িক থিয়েটারচর্চা নিয়ে নানা কথা বলেন জামিল ।
এ সময় ওয়াজ-মাহফিলের বিরুদ্ধে নাট্যকর্মীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘আমরা কীভাবে ওয়াজ-মাহফিলের বিরুদ্ধে আমাদের নাটকটাকে আরও জোরদার করতে পারি। এই কাজগুলো করতে হবে আমাদের। আমাদের অভিনয়ের মান, প্রযোজনার মান বাড়াতে। এই জায়গাগুলো যদি আমাদের ঠিক থাকে, দর্শক যদি আসে বাদবাকি জায়গাগুলো আমরা রাষ্ট্রের কাছে চাইলে, জনবান্ধব রাষ্ট্র আছে আমাদের কাছে, ভয় পাওয়ার দরকার নেই। আমাদের বলার দরকার যে, এই জায়গাগুলো আমাদের দরকার।’
তিনি আরো বলেন, কেন ২০২৪ সালেও মেয়েদের বোরকা পরতে হবে? তারা আমাদেরকে কনভিন্সড করবে যে কেন ২০২৪ সালে শরীয়তি রাষ্ট্রব্যবস্থা দরকার? কোরআনে তো আমাদের দৃষ্টিকে সংযত করার কথা বলা আছে। আমি যদি দৃষ্টিকে সংযত করি, তাহলে নারীকে কেন মাথায় বোরকা দিতে হবে।’’
জানা যায়, সেখানে সবার মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলেন তিনি। এই দেশ যেন বহুমতের মানুষের হয়, সেই প্রত্যাশা তুলে ধরেন এই নাট্যব্যক্তিত্ব।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর