
শেরপুরে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার বলাইয়েরচর ইউনিয়নের জঙ্গলদী ফতুমুন্সীর মোড়ে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- জঙ্গলদী গ্রামের মৃত কালু খাঁর ছেলে লালু খাঁ (৫৭) ও মৃত নহর খাঁর ছেলে মোগর খাঁ (৬৫)। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের গুরুতর আহত হয়েছেন কমপক্ষে আরো ১০ জন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার বলাইয়েরচর ইউনিয়নের জঙ্গলদী গ্রামের খাঁ বাড়ি ও সুতার বাড়ির মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার দুপুরে জঙ্গলদী ফতু মুন্সির দোকানের মোড়ে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে কয়েকজন গুরুতর আহত হলে তাদের উদ্ধার করে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লালু খাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে গুরুতর আহত দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে পথিমধ্যে মোগর খাঁ মারা যায়।
নিহত লালু খাঁর জামাই দুলাল উদ্দিন বলেন, ওই জমির আরওআর, সিএস ও বিআরএস সব খানেই ওই জমি আমাদের নামে। এরপরও সুতার বাড়ির জামান মাস্টার, সুরুজ, কাইয়ুম, গোলাম রসুল, আনসার, আলম, ছামিদুলরা জোর করে ওই জমি দখল করে রেখেছে। আর আজকে দুইজনকে মেরেও ফেলল। আমরা এই খুনের বিচার চাই।
নিহত লালু খাঁর নাতি মো. কফিল উদ্দিন জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে আজকেও তর্কাতর্কি করার এক পর্যায়ে সুতার বাড়ির লোকজন আমার নানাকে এককাইল্যা দিয়ে আঘাত করে মাইরা ফেলছে। আরও অনেকজনকে আহত করছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সুতার বাড়িরা প্রায় ৫.৬৮ একর জায়গা নিলামে পেয়েছে বলে দখল করে রাখলেও তারা জমির কোন নিলামের কাগজ দেখাতে পারেনি। জমির আরওআর, বিআরএস খাঁ বাড়ির নামেই আছে। এটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছিল। হয়তো কিছুদিনের মধ্যে ফয়সালা হয়ে যেতো। কিন্তু এর আগেই দুটি প্রাণ ঝড়ে গেল।
এদিকে, দুইজন নিহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সেই এলাকার লোকজন অপরপক্ষের ঘরবাড়ি ও দোকানপাটে হামলা ও লুটপাট চালায়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম দুইজন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন সদর হাসপাতালে মারা গেছেন। আরেকজন ময়মনসিংহ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর