
বর্ষার শেষলগ্নে কক্সবাজারে প্রবল বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী পরিবার পানিবন্দি হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলার শতাধিক গ্রামে পানি প্রবেশ করে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার কারণে ফের বন্যার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে আতঙ্ক বাড়ছে নিম্নাঞ্চলের মানুষের।
প্রবল বৃষ্টির কারণে পর্যটন এলাকা কলাতলী, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ড, চকরিয়া পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাও, কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চলের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন করে বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেত। ইতিমধ্যে ৮ উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাঁক খালি এবং মাতামুহরী নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জানা গেছে, পানির বাঁকখালী-মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকেছে। এতে ডুবে গেছে অনেক রাস্তাঘাট। পানিতে তলিয়ে গেছে ধানের বীজতলা ও সবজি ক্ষেত।
ঝিলংজার পূর্ব মুক্তারকুল এলাকার বাসিন্দা আমিনুল হক আমিন বলেন, ১০ দিন আগে বীজতলায় সবজির বীজ ছিটিয়েছেন। ভারী বর্ষণে বীজতলা ডুবে গেছে। বীজগুলোতে অঙ্কুরোদ্গমের আগেই পচন ধরেছে। আবারও বীজ কিনে চাষাবাদ করার সামর্থ্য তাঁর নেই। তিনি জানেন না, কী করবেন।
দক্ষিণ মিঠাছড়ির উমখালীর বাসিন্দা মো. কালু জানান, সকাল থেকে যাতায়াতের রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে আছে। বাড়ি থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানি তাদের জনজীবন স্থবির করে দিয়েছে।
রামুর রাজারকুলের গ্রামের বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন আগে হওয়া বন্যায় আমরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি। আগের বন্যার পানি এখনও নামেনি, আবারো পানি বাড়ছে। এ যেন ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বন্যার পানি আমাদের সর্বস্বান্ত করেছে। এভাবে যদি আবারও বন্যার পানি বাড়তে থাকে। তাহলে আমাদের দুর্দশার কোন শেষ হবে না।
টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেন, টেকনাফে ২ দিনের ভারি বর্ষণে ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অর্ধলাখ মানুষ। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় থেকে টানা বৃষ্টিতে টেকনাফের হোয়াইক্যং, হ্নীলা, টেকনাফ সদর , বাহারছড়া শামলাপুর, সাবরাং ইউনিয়নের অনেক বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, আজ সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ৮৮ থেকে ৮৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সাথে পাহাড়ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আজ দুপুর থেকে কক্সবাজারে অতি ভারী বর্ষণ শুরু হয়।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর