বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী ১৪৪৬ পালিত হয়েছে। সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবসটি উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে প্রশাসনিক ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারীতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জীবনীর উপর কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। পরে সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর জীবন, কর্ম, শিক্ষা, ইসলামে শান্তির বাণী বিষয়ে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
কুইজ প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন মো. আল হাদিস; যৌথভাবে দ্বিতীয় হন এসএম আব্দুল্লাহ আল আমিন এবং রায়হান উদ্দিন; তৃতীয় বাদল মুরশিদ। মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেন নাহদামুল হাসানা ; দ্বিতীয় সাহানা আক্তার এবং তৃতীয় মেহনাজ মোহনা।
এ সময় আলোচনা রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের খতিব মাওলানা ড. মাহমুদুল হাসান ইউসুফ। আলোচনায় তিনি বলেন, ইসলামকে নিয়ে সমাজে কিছু ভুল ধারণা আছে। সে সমস্যাগুলো ধরে অন্যরা নানা প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে৷ তারা ভার্সিটিতে ছাত্রদের কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়ে মনে দ্বিধা সৃষ্টি করে। বিদায় হজ্জের ভাশজণে রাসূল (সা) সাম্য, মানবতা, নারী অধিকারের স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন। কিয়ামত পর্যন্ত কোরআনের বিধান প্রাসঙ্গিক। কুরআন ও হাদীদের মূল উৎস থেকে জ্ঞান আহরণ করলে সকল ধরনের বিভ্রান্তি দূর করা সম্ভব।
প্রধান বক্তার আলোচনায় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লা হেল বাকী বলেন, আমরা ইসলামের সুমহান বাণী সম্পর্কে তাদের কেন আকৃষ্ট করতে পারিনি। কারণ আমরা তাদের কাছে ভাল উদাহরণ হতে পারিনি। আমরা যদি সবাই মূর্খতার অন্ধকার থেকে বের হয়ে জ্ঞানের সুমহান আলোয় আলোকিত হতে পারি, তাহলে অন্যদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে। লোভ, অবৈধ আয়, অবৈধ জীবনব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসলেই মুক্তি সম্ভব। কোরানের বাণীকে বিশ্লেষণ করে ত্যাগের উপর ভিত্তি করে সমাজ গড়তে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, মহানবী (সা) সকলের জন্য এক উত্তম আদর্শ ছিলেন। আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ভুলে এগিয়ে যেতে হবে। ধর্মীয় জ্ঞানের প্রচারের মাধ্যমে সবার জন্য ভ্রাতৃত্ব ভালোবাসা নিয়ে একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব৷ অন্যের মত প্রকাশের প্রতি সম্মানবোধ থাকতে হবে। আমি নিজেও একজন একটা প্র্যাকটিসিং মুসলিম। আমি নিজেকে এই পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি মনে করি, ধর্মীয় জ্ঞানের বেলায় নিজের উপলব্ধি সবার আগে প্রয়োজন। সমাজে ভিন্নমত প্রকাশের জন্য কেউ যেন অনিরাপদ না থাকে৷ এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) আজিজুর রহমান মুকুল, বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকমণ্ডলী ও সহস্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর