• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ১৭ মিনিট পূর্বে
মোঃ শাহিন আলম
কু.বি. প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:২৯ বিকাল
bd24live style=

কুবি উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে যারা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ড. এ.এফএম আব্দুল মঈনও গা-ঢাকা দিয়ে এক পর্যায়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। একইসঙ্গে উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডিসহ প্রশাসনের অনেকেই পদত্যাগ করেছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে শীর্ষ পদটিতে কে নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা।

গত এক মাসের বেশি সময় ধরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যসহ শীর্ষ প্রশাসনিক পদগুলো শূন্য। এখনও কোনো উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ায় তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক বিশৃঙ্খলা। তবে এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেতে দৌড়ে এগিয়ে আছেন যারা।

উপাচার্য হিসেবে আলোচনায় যারা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থেকে উপাচার্য হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম শরীফুল করীম। তিনি ২০০৭ সাল থেকে ইংরেজি বিভাগের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি এই বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ অনার্স ও এমএ করেন। অধ্যাপক শরিফুল মালয়েশিয়ার ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজি সাহিত্যে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি ১৯৯৯ সালে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যোগদান করেছিলেন।  তিনি এর আগে সিন্ডিকেট সদস্য ও ডিন হয়েছিলেন।

উপাচার্য হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কী করবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আন্দোলনের সময় অ্যাকাডেমিক যে সমস্যাগুলো হয়েছে সেইগুলো শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে বসে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম দ্রুত শেষ করব। প্রয়োজন হলে শনিবারেও ক্লাস চালু রাখা ব্যবস্থা করা হবে। আর আবাসিক হলগুলোতে অবৈধ যারা রয়েছে তাদের সিট বাতিল ও মেধার ভিত্তিতে সিট বণ্টন করব। আর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষক যারা এতদিন বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে সেইগুলো সেতুবন্ধন তৈরি করে সমাধান করব। পাশাপাশি সরকারের সাথে আলোচনা করে অবকাঠামোগত উন্নয়ন করার চেষ্টা করব।

আলোচনায় শীর্ষে আছেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল। তিনিও বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে লোক প্রশাসন বিভাগের প্রতিষ্ঠাকালীন বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগ থেকে বিএসএস, এমএসএস এবং পিএইচডি ডিগ্রি এবং ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল ডিগ্রি লাভ করেন। অধ্যাপক মাসুদা কামাল প্রশাসনিক বিভিন্ন পদে প্রায় ১৭ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার মধ্যে বিভাগের চেয়ারম্যান হিসাবে প্রায় ১২ বছর, ভর্তি পরীক্ষার কমিটির আহ্বায়ক,  নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী হলের প্রভোস্ট  ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং সম্মেলন এবং নেটওয়ার্কিং আয়োজন ও পরিচালনায় অভিজ্ঞতা রয়েছে। এছাড়া, দেশি বিদেশি বিভিন্ন জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণা ও বই রয়েছেন।

এছাড়াও আলোচনায় রয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। তিনি ২০০৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ (সম্মান) সহ স্নাতক হন এবং ২০০৫ সালে এমবিএ অর্জন করেন। এছাড়া, তিনি ২০১৭ সালে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া পার্লিস (UNIMAP) থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। গবেষণায় তার বেশ সুনাম রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে, অধ্যাপক সোলাইমানের ২৫টিরও বেশি গবেষণা নিবন্ধ স্থানীয় এবং স্কোপাস লিস্টেড আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তিনি এর আগে ১১ বছরেরও বেশি প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিভাগের চেয়ারম্যান, নিজ বিভাগের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, এমবিএ ইভিনিং প্রোগ্রাম, ছাত্র উপদেষ্টা, নিজ বিভাগের OBE (উদ্দেশ্য ভিত্তিক শিক্ষা) কারিকুলামের চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, এবং নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী আবাসিক হলে হাউস টিউটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

এই বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক হিসেবে আমাদের উপর গুরুদায়িত্ব  অর্পিত হয় তাহলে আমরা বলতে পারি ছাত্রদের কল্যাণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মান উন্নয়নে কাজ করব।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর কে হবে  এটার একটা অথরিটি আছে অথরিটি মূল্যায়ন করবে অ্যাকাডেমিক কোয়ালিটি, রিসার্চ, অতীতের ছাত্রদের কল্যাণে কি কাজ করছে বিবেচনা করে যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে  উপাচার্যকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

আলোচনায় রয়েছেন একই বিভাগের আরেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো: আমজাদ হোসাইন সরকার। যিনি বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক প্রশাসনিক ও অ্যাকাডেমিক দায়িত্ব পালন করেছেন। দুই মেয়াদে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন, সহকারী প্রক্টর,  ১২ বছরেরও বেশি সময় বিভাগীয় প্রধান ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন জার্নালে তাঁর গবেষণা প্রবন্ধ রয়েছে প্রায় ৩০ টি। উপাচার্য হতে পারলে ছাত্র, শিক্ষক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের নিয়ে এগিয়ে যাবেন বলে জানান তিনি।

এছাড়া তিনি আরও বলেন,  বিশ্ব-দরবারে কীভাবে কুবির র‍্যাংকিং বাড়ানো যায় আমি সে চেষ্টা করবো। শিক্ষার্থীদের সব অ্যাকাডেমিক সাপোর্ট দিব। শিক্ষার্থীরা যাতে সারা বিশ্বে ভালো করতে পারে আমি সেই চেষ্টা করবো। আমি মনে করে  এতেই কুবির সুনাম উজ্জ্বল হবে।

উপাচার্য দৌড়ে আরেক শিক্ষক গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল হাকিম । তিনি বিএসসি ও এমএসসি শেষ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। উপাচার্য  হতে পারলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসন ও গবেষণা নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান তিনি। আরও বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তার ও কর্মচারীদের প্রাধান্য দিব। পাশাপাশি বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য শিক্ষার্থীদের যোগ্য করে তুলার চেষ্টা করবো।

আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান প্রশাসক ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম. জাকির সাদুল্লাহ খান। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস ও এমএসএস, জার্মানির কনস্টাঞ্জ ইউনিভার্সিটি থেকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ইকোনমিক্সে এমএ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন। তিনি এর আগে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান এবং একই প্রতিষ্ঠানের কাজী নজরুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট হিসাবে ছিলেন। এছাড়া গবেষণায় বেশ সুনাম অর্জন রয়েছেন।

শিক্ষার্থী হিসেবে কেমন উপাচার্য চান? এই প্রশ্নে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত রশ্নি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিকভাবে কিছু মৌলিক চাহিদা রয়েছে, যা পূরণ না হলে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এবং শেখার সক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। মৌলিক চাহিদাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো তাদের খাবার ও পুষ্টি বিষয়ক সচেতনতা। হল ও ক্যাফেটেরিয়ায় শিক্ষার্থীরা যে-সব খাদ্য গ্রহণ করে তার বেশিরভাগই অস্বাস্থ্যকর এবং মূল্য বেশি। তাই হল ও ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মান উন্নয়নে উপাচার্যকে ভাবতে হবে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে বিগত সময়ে কোন উপাচার্যই শিক্ষার্থীদের মৌলিক এই চাহিদার বিষয়টি অনুধাবন করার চেষ্টা করেননি।

একজন একাডেমিশিয়ান ও যোগ্যতাসম্পন্ন উপাচার্য চেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা আন্দোলন করেছি যাতে অযোগ্য কেউ দায়িত্ব না আসতে পারে। আগের মতো দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব আর লবিংয়ের জোরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বসতে না পারে। সেই জায়গা থেকে একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা একজন দক্ষ প্রশাসক  ও যোগ্যতাসম্পন্ন ভিসি প্রত্যাশা করি। যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যাগুলো সমাধার করে আরও সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

তবে অনেকে মনে করছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদটিতে অভ্যন্তরীণ শিক্ষকদের মধ্য থেকে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে না। ফলে এই উচ্চ শিক্ষালয়ের উপাচার্য হিসেবে কে আসছেন সেটি নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করছেন সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দিকে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com