নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গড়ে তোলা ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহার করেন না কেউ। ২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রিজটি এখন এলাকার শোভা বর্ধন ব্যতীত কোনো কাজেই আসছেনা।
যানজট নিরসনসহ দুর্ঘটনা এড়াতে সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ব্রিজটি নির্মাণ করেন। তিনি সিংড়া উপজেলাকে মিনি সিঙ্গাপুরের আদলে গড়ে তোলার লক্ষে ব্রিজটি নির্মাণ করেন।
দেশের অন্যতম দুর্ঘটনাপ্রবণ নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া বাজার এলাকায় জেলার প্রথম ৩৪.২৬৯ মিটার দৈর্ঘ্যের ফুট ওভারব্রিজ উদ্বোধন করা হয়েছে গত ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে। ব্রিজটি নির্মান করতে সরকারের ব্যায় দুই কোটি ৬৯ লাখ টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, নাটোর।
প্রায় ৩কোটি টাকার এই ফুটওভার ব্রিজটি প্রয়োজনীয় মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবসহ নানা অব্যবস্থাপনায় বেহাল দশা নাটোরের সিংড়া বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত ফুটওভার ব্রিজের। পথচারীদের অভিযোগ, ফুটওভার ব্রিজে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ আর কিছু স্থান ভেঙে যাওয়ায় এগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
রাতে ফুটওভার ব্রিজ মাদকাসক্ত ও ছিনতাইকারী চক্রের অবাধ বিচরণ। এসব কারণে ফুটপাত ব্যবহারে অনীহা পথচারীদের। ফলে যত্রতত্র সড়ক পারাপারে ঘটছে নানা দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ। নির্মাণশৈলী আর নানা অব্যবস্থাপনার কারণেই এ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে খুব একটা উৎসাহী নন পথচারীরা। মাঝে মধ্যে দুই-একজন পথচারীর দেখা মিললেও অনেকটা বিরক্তি নিয়েই ফুটওভার ব্রিজ পার হচ্ছেন তারা।
ফুটওভার ব্রিজের পুরো শরীরজুড়ে রয়েছে ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি। দোকানীদের দখলে রয়েছে ফুটওভার ব্রিজের বেশির ভাগ অংশ। যেটুকু খালি রয়েছে সেটি দিয়ে পথচারীদের পারাপার অনেকটা দুঃসাধ্য। বিশেষ করে নারী পথচারীদের পড়তে হয় বেশি বিড়ম্বনায়। এ ফুটওভার ব্রিজের বেশ কয়েকটি সিঁড়ি এবং ব্রিজের মূল কাঠামোর কয়েকটি স্থান ভেঙে পথচারী চলাচল না করায় মরিচা পড়ে গেছে ব্রিজটিতে। ফলে জরাজীর্ণ এবং ভঙ্গুর এ ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহারে দিন দিন আগ্রহ হারাচ্ছেন পথচারীরা।
ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহারে প্রতিনিয়তই নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় বলে অভিযোগ পথচারীদের। ফলে ব্রিজ ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা পার হচ্ছেন তারা পথচারীরা জানান, ওভার ব্রিজের কোথাও কোথাও পড়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা, সিগারেটের প্যাকেট, মোতা ও মানুষের মল। সিঁড়িতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই বাতাসে উড়ে আসে ধুলোবালি। এছাড়া দোকান পাট থাকায় হাঁটা চলা দায় সবাই মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
সচেতন মহলের মতে, যত্রতত্র রাস্তা পারাপার এবং ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করার ফলে বাড়ছে দুর্ঘটনা। সাধারণ মানুষকে ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহারে সচেতন করাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি, পৌরসভারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা উচিত।
বিক্ষুব্ধ একজন পথচারী বৃদ্ধা জানান, ব্রিজটি করেছে আমাদের সবার পারাপারের জন্য কিন্তু ব্রিজে উঠলে পায়ে হাঁটার মত অবস্থা থাকেনা নোংরার ভাগাড়ে পরিনত হয়েছে ব্রিজে উঠার দুপাশে প্রচুর দোকান তিনি বলেন এই ফুটওভার ব্রিজ করার ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট হয়ে কেননা আমরা এই ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে পারিনা।
ফুটওভার ব্রিজের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে নাটোর সওজ, সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুল হাসান সরকার বলেন, সিংড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার ফুটওভার ব্রিজের মেরামত কাজ করা হয়েছে। এছাড়া ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদে বিভিন্ন সময় জেলা প্রশাসন ও পৌরসভা অভিযান পরিচালনা করে। তবে কয়েক দিন পরই এগুলো আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। দোকানীরা অধিকাংশ গরিব মানুষ হওয়ায় মানবিক দিকও দেখতে হয় বলে জানান তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর