জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ, অবিলম্বে সারাদেশে মব-জাস্টিস বন্ধ এবং ক্যাম্পাসে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের পাদদেশে এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা সারাদেশে মব জাস্টিস বন্ধ ও গতকাল ক্যাম্পাসে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার ও ক্যাম্পাসে সকল ধরনের লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারী রাজনীতি বন্ধের দাবি জানান।
মানববন্ধনে ইতিহাসে বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া জিসান বলেন, আমাদের নতুন স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা কেনো বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড চাই না। আমারা দেখেছি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আবরার ফাহাদ সহ অনেক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে এ সংস্কৃতি বন্ধ হোক। গত কালকের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার করতে হবে। এবং পরবর্তীতে যাতে ক্যাম্পাসে আর এমন গর্হিত কাজ না ঘটে সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আমরা এখানে দাড়িয়েছি বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচারের দাবিতে। গতকাল সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার পর মৃত্যুর গঠনা ঘটে। তার এ মৃত্যুতে কাদের বেশি লাভ হলো এ বিষয়টি ও তদন্তের আওতায় আনতে হবে। ব্যক্তি যত বড় অপরাধী হোক না কেন আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। অপরাধীর বিচার আইনের মাধ্যমে হবে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট সংলগ্ন একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন শামীম মোল্লা। তার অবস্থানের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়।
এক পর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে পুনরায় গণধোলাই দেয়। এরপর তাকে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১১ টায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত শামীম মোল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ ব্যাচের ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের জুয়েল-চঞ্চল কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন৷ শামীম বিশ্ববিদ্যালয় ও এর আশেপাশের এলাকায় মাদক সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ, জমিদখল, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগের চারটি মামলা রয়েছে। গত ১৫ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় সে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর