জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনার প্রেক্ষাপটে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে সকল প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ সহ তিন দফা বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের পর বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকে।
এরপর দুপুর ৩ টায় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়।
এ সময় তাদের ‘ডান বামের রাজনীতি, চাই না কারো উপস্থিতি’; ‘রাজনীতির কালো হাত, এই জাবি তে নিপাত যাক’; ‘সব জাবিয়ান ভাই ভাই, রাজনীতির ঠাঁই নাই’; ‘রাজনীতির অংশীদার, এই মুহূর্তে জাবি ছাড়’; ‘এক দফা এক দাবি,চাই না কোনো রাজনীতি’ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ সময় তারা উপাচার্যের কাছে তিনটি দাবি পেশ করেন এবং আগামী আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যে দাবিগুলো বাস্তবায়নের আল্টিমেটাম দেন। দাবিগুলো হলো- সকল প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জাবি ছাত্র সংসদ জাকসু নির্বাচন দিতে হবে। ১৪ থেকে ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে হামলাকারী ও মদদ দাতা সকলকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় আইনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নাইমুর ইসলাম বলেন, ক্যাম্পাসের প্রায় নব্বই শতাংশ শিক্ষার্থী রাজনীতি চায় না। আমরা ফ্যাসিস্ট আমলের ছাত্র সংগঠনের মতো কোন সংগঠনকে আর ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে দেব না। আমরা উপাচার্য স্যারের কাছে দাবি জানিয়েছি অবিলম্বে ক্যাম্পাস থেকে সকল প্রকার ছাত্র শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি চাই না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতিদ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে ক্যাম্পাসে সকল প্রকার দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র-শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ চালু করে সুষ্ঠু ছাত্ররাজনীতি চালু রাখতে হবে।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, হঠাৎ করে আন্দোলনের মুখে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা মব জাস্টিসের মতোই এবং বিরাজনীতিকরণেরই নামান্তর। তাই অংশী-জন সবার মতামতের ভিত্তিতে এটা নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য খুব শিগগিরই প্রশাসনিক বডিকে নিয়ে বসবো, এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সিন্ডিকেট-ও ডাকবো। এ জন্য প্রশাসনকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর