• ঢাকা
  • ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৫৩ সেকেন্ড পূর্বে
রাশেদুল ইসলাম রাশেদ
গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০১:৫৫ দুপুর
bd24live style=

এইচবিবির ৮৫ লাখ টাকার কাজ, শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ধস

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

গাইবান্ধা সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কার্যালয়ের প্রায় ৮৫ লাখ টাকার হেরিং বোন বন্ড রাস্তা নির্মাণের একটি কাজ শেষ হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ধসে পড়েছে। ভেঙ্গে গেছে সাইড ওয়াল, দেবে গেছে রাস্তা, রাস্তায় বিছানো ইটগুলো নড়বড়ে অবস্থা। স্থানীয়দের অভিযোগ রাস্তা নির্মাণে কাজ হয়েছে দায়সারা ভাবে। এছাড়া রাস্তার এই বেহাল অবস্থা সৃষ্টির পর থেকেই একাধিক মাধ্যমে কয়েক দফায় যোগাযোগ করা হলেও মেরামতে আজও কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট পিআইও অফিস।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় (পিআইও) সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের ৮৪ লাখ ৯৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ১০০০ মিটার হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) রাস্তা নির্মাণ কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়। যার মধ্যে "বল্লমঝাড় ইউনিয়নের আশরাফের মোড় থেকে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পাকা রাস্তা সংলগ্ন সদরুলের দোকান পর্যন্ত" ৭০০ মিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ করা হয়। অপর ৩০০ মিটার রাস্তা "খোলাহাটি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের চৌধুরীপাড়া জামে মসজিদ থেকে শহিদুল হক সরকারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করা হয়। যার কাজের দায়িত্ব পায় 'মেসার্স পলক এন্ড পায়েল' নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। 

সরেজমিনে বুধবার দেখা যায়, "বল্লমঝাড় ইউনিয়নের আশরাফের মোড় থেকে রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পাকা রাস্তা সংলগ্ন সদরুলের দোকান পর্যন্ত" ৭০০ মিটার ওই রাস্তার বেহাল অবস্থা ও নির্মাণ কাজে নানা অসঙ্গতির চিত্র দৃশ্যমান। রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় ইট ধসে পড়েছে এবং অনেক স্থানে গভীর ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তাটির আশরাফের দোকানের সামনের দিক থেকে ফরিদের বাড়ি সংলগ্ন রাস্তার পশ্চিম অংশে ইট রক্ষার সাইড ওয়াল অন্তত ২০ থেকে ২৫ ফুট পুরোপুরি ধসে ভেঙ্গে গেছে পুকুরে। ওই স্থানের আরো কিছুটা দক্ষিণে প্রায় ১০০ ফুট রাস্তা অন্তত ৬ ইঞ্চি পরিমাণ দেবে গেছে। এছাড়া পুরো রাস্তার ছোট-বড় আকারে অন্তত ৬টি স্থানে ধসে গেছে। আবার ছোট ছোট আকারে কোথাও রাস্তার একপাশে, কোথাও রাস্তার উভয় পার্শ্বেই দেবে গেছে। এছাড়া বালু না থাকায় বেশিরভাগ জায়গায় ইটগুলো নড়বড়ে করছে। কিছু স্থানে মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। 

এলাকাবাসীরা জানান, নির্মাণ কাজে রাস্তা খননের পর দায়সারাভাবে বালু ও পানি ব্যবহারের ফলে রাস্তা দেবে গেছে। এছাড়া ইট বিছানোর পর কিছু অংশে বালু দিলেও বেশির ভাগ অংশে বালু দেওয়া হয়নি। ফলে ইট নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। দ্রুত মেরামত না করে গেলে রাস্তাটি খুব সম্প্রতি চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তাদের অভিযোগ, নির্মাণ কাজ নিম্নমানের এবং তড়িঘড়ি করে কাজ সম্পন্নের ফলে রাস্তার এই দুরবস্থা তৈরি হয়েছে। এছাড়া রাস্তার কাজের এই বেহাল অবস্থা হওয়ার পর পরই মেরামতের জন্য পিআইও অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদকে  কয়েকবার জানানো হয়। তিনি ঠিকাদারসহ রাস্তাটি পরিদর্শন করে মেরামতের আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেরামত তো দূরের কথা পরিদর্শন করতেও আসেন নি। এতে ক্ষুব্ধ তারা।

আকন্দ পাড়ার নূর আলম বলেন, "রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরেই বৃষ্টি হয়। তাতেই রাস্তাটির কয়েক স্থানে দেবে যায়। কোথাও একপাশে আবার কোথাও মাঝখানে ঠিক থেকে উভয় পাশেই দেবে গেছে। এছাড়া ৪/৫ স্থানে ধসে গেছে এবং গভীর ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। 

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এমন অবস্থা সৃষ্টির পরদিনই বিষয়টি পিআইও অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদকে জানিয়েছিলাম। কোনো কাজ হয়নি। পরে একাধিক মাধ্যমে কয়েকবার বলার পর তিনি ঠিকাদারসহ রাস্তাটি পরিদর্শন করে মেরামতের আশ্বাস দিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত আসেন নি। আমি এসব বিষয় নিয়ে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করবো।

স্থানীয় সচেতন নাগরিক খুরশিদ বলেন, ইট বিছানোর পর রাস্তার ওপরে মাত্র দুই কাঁকড়া বালু ছিটানো হয়েছে। ঠিকাদারের পক্ষ থেকে পরে দেওয়ার কথা বলা হলেও সাত মাসেও আজও দেয়নি। রাস্তায় বসানো ইটগুলো নড়বড়ে অবস্থা। মোটরসাইকেল চালানোর সময় মনে হয় ভূমিকম্প হচ্ছে। রাস্তাটি এখনি মেরামত করা না হলে রাস্তাটি চূড়ান্তভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। 

একই গ্রামের বেসরকারি চাকরিজীবী হাবিব মিয়া বলেন, নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই রাস্তাটির বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাস্তাটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানান তিনি।

এসব ব্যাপারে জানতে চেয়ে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়েও পাওয়া যায়নি পিআইও রিয়াজুল ইসলামকে। এছাড়া একই সময় একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

তবে, ওই কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী জোবায়ের আহমেদ জানান, ওই রাস্তার অভিযোগের বিষয়ে আমাকে জানানো হয়েছিল। গত বৃহস্পতিবার আমি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। শিগগিরই ঠিকাদারকে দিয়ে রাস্তাটির মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।

এসময় কাজ শেষ করার পরেই রাস্তাটি ধসে যায়। মেরামত না করেই চূড়ান্ত বিল ছাড় করা প্রশ্নে কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।

এ ব্যাপারে ওই কাজের ঠিকাদার শুক্কুর আলী মোবাইল ফোনে বলেন, 'রাস্তাটির ব্যাপারে আমাকে জানানো হয়েছে। ওখানে তো গাড়ি ঘোড়া চলে না, পায়ে হাঁটার রাস্তা। এই মাসটা যাক, ঠিকঠাক করে দেওয়া হবে। তবে এর মধ্যেই আমি রাস্তাটি দেখতে যাবো। এসময় কাজের মান খারাপ এবং পরিমাণ মতো বালু না দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহমুদ আল হাসান বলেন, ' এইচবিবি ওই রাস্তার এমন দুরাবস্থার বিষয়টি এর আগে আমাকে জানানো হয়নি। রাস্তাটির খোঁজ নিয়ে এবং এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শাকিল/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com