জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন তিনি। এসময় শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন উপাচার্য।
উপাাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘একাধিক গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের উপস্থিতিতে শামীম মোল্লাকে মারধর করা হয়েছে। অথচ আমি ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য প্রক্টরকে নির্দেশ দিই। এছাড়া ঘটনার গুরুত্ব উপলদ্ধি করে নিজেই রাত ৭ টা ২০ মিনিটের দিকে প্রক্টর অফিসে উপস্থিত হই। আমি গিয়ে দেখতে পাই, পুলিশ তখনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়নি। তাৎক্ষণিকভাবে আবারও পুলিশের সাথে যোগাযোগ করে তাদের দ্রুত আসার জন্য অনুরোধ করি।’
উপাচার্য বলেন, ‘আমি সেখানে গিয়ে জানতে পারি, শামীম মোল্লাকে মারধরকারী বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিরাপত্তা শাখার কলাপসিবল গেইটে নতুন তালা লাগিয়ে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। আমি কালবিলম্ব না করে তাকে দ্রুত পুলিশের কাছে হস্তান্তর করার জন্য প্রক্টরকে নির্দেশ দিই। এরপর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসি। আমার উপস্থিতিতে মারধরের বিষয়টি সত্য নয়।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে প্রক্টর অফিসে উপস্থিত সাবেক শিক্ষার্থী ও জাবি ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ ভূঁইয়া এবং আমাকে জড়িয়ে যে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। সেদিন প্রক্টর অফিসে গেলে নবনিযুক্ত উপাচার্য হিসেবে আমার সঙ্গে অনেক সাবেক শিক্ষার্থী দেখা করেন। তাদের মধ্যে আবু সাঈদ ভূঁইয়াও ছিল বলে নিশ্চিত হয়েছি। তাদের সঙ্গে শামীম মোল্লাকে মারধরের বিষয় নিয়ে আমার কোনো কথা হয়নি।’
কিছু গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে কামরুল আহসান বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক সংবাদে শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফিলতির কথাটি উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি এ ঘটনায় একটি মহল উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে শোক প্রকাশ করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং প্রাথমিক তদন্তের ভিত্তিতে কয়েকজনকে চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়। পাশাপাশি অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি ওইদিনই প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয় আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় এত তড়িৎ গতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে নজিরবিহীন। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষারোপ করার বিষয়টি দূরভিসন্ধিমূলক।’
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর