জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে আয়োজিত এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান ও পদক্ষেপের বিষয়ে বিস্তারিত অবহিত করেন প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম।
এসময় তিনি দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রক্টরিয়াল বডিকে জড়িয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে। প্রতিবেদনগুলোতে প্রক্টরিয়াল বডির গাফিলতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বস্তুত এগুলো সত্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে নিজের নেয়া পদক্ষেপের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘সেদিন উপাচার্যের নির্দেশের পরপরই আশুলিয়া থানা পুলিশকে অবহিত করা হয় এবং শামীম মোল্লাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার জন্য দ্রুত পুলিশের টিম পাঠানোর জন্য অনুরোধ করি। নিরাপত্তার স্বার্থে শামীম মোল্লাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার কলাপসিবল গেইটে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এরপর আমি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কলাপসিবল গেইটের সামনে নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায় রেখে নিজের অফিসে ফিরে আসি । এরমধ্যে কতিপয় বিক্ষুদ্ধ ব্যক্তি গেইটের তালা ভেঙ্গে শামীম মোল্লাকে মারধর শুরু করেন বলে খবর আসে। তৎক্ষণাৎ আমি নিরাপত্তা শাখায় গিয়ে বিক্ষুদ্ধদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াই এবং সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দেই। এরপর শামীম মোল্লার নিরাপত্তার স্বার্থে আবারও নিরাপত্তা শাখার কলাপসিবল গেইটে নতুন তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।’
শামীম মোল্লাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘রাত আনুমানিক সাড়ে ৭টার সময় পুলিশের টিম প্রক্টর অফিসে আসে। এরপর রাত আনুমানিক আটটার দিকে আমি এবং নিরাপত্তাকর্মীরা শামীম মোল্লাকে ঢালস্বরূপ নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিই।’
থানায় মামলা দায়েরের বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘এঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে মামলা করা হয়েছে। তবে মামলার এজহারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রেরিত অভিযুক্তদের ক্রমের সঙ্গে আসামীদের ক্রমের অমিল পরিলক্ষিত হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে মামলায় আসামীদের ক্রম সংশোধন করা হয়েছে।’
আসামীদের ক্রম পরিবর্তনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে মামলার বাদী হন প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশিত নিয়মেই তাকে মামলা করতে হবে। ক্রম পরিবর্তনের সঙ্গে মামলার বাদী প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা জড়িত আছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে উপাচার্য ও আমাকে জড়িয়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার বক্তব্য প্রদানের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। একটি তদন্তাধীন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে তার এরূপ মন্তব্যের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর