জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ১৮ সেপ্টেম্বর গণপিটুনিতে সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লার মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও এর সাথে জড়িত সকলের যৌক্তিক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর ৫ দফা সম্বলিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকাল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেন তারা। পরবর্তীতে সেখান থেকে লং মার্চ নিয়ে রেজিস্ট্রার ভবনে উপাচার্য বরাবর পাঁচ দফা দাবির একটি স্বারক লিপি প্রদান করেন তারা।
তাদের দাবি গুলো হলো- সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের মাত্রা অনুযায়ী নিরপেক্ষভাবে শাস্তি নিশ্চিত করা, পুলিশের কাছে হস্তান্তর থেকে শামীম মোল্লার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঘটনার গভীর তদন্ত নিশ্চিত করা, প্রধান নিরাপত্তা কর্মী সুদীপ্ত শাহীনের বিতর্কিত কর্মকান্ড এবং উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মীদের বহিষ্কার, জুলাই গণহত্যার অভিযুক্ত সুদীপ্ত শাহীনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে নতুন মামলা দায়ের করা, জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতনে জড়িত শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বহিষ্কার করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী নাদিয়া রহমান অন্বেষা বলেন, আমাদের প্রধান দাবি হলো শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে তাদের প্রাপ্য শাস্তিটুকু যেন নিশ্চিত করা হয়। এখানে লঘুদণ্ডে গুরু শাস্তি কেউ পাক সেটা আমরা চাই না।
তিনি আরো বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রক্টর অফিসে যখন মারা হয় তখন প্রক্টরিয়াল বডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তার নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করতে পারেনি সেই প্রশ্ন আমাদের প্রশাসনের কাছে থেকে যায়। সুদীপ্ত শাহীন নিজে একজন হত্যা মামলার আসামি হয়ে কিভাবে হত্যা মামলা করে এবং স্ব-পদে বহাল থাকে এটিও প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রশ্ন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম বলেন, আমরা লক্ষ্য করি শামীম মোল্লাকে কয়েক দফায় গণপিটুনি দেয়া হয়। তারমধ্যে প্রথম দফায় প্রান্তিক গেইটে গণপিটুনি দিয়ে একদল তাকে প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে করে হস্তান্তর করে। এরপর অন্য একটি দল উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রক্টর অফিসের নিরাপত্তা সেলের কলাপসিবল গেইটের তালা ভেঙ্গে তাকে কয়েক দফা বেধড়ক মারধর করে। তাহলে কিভাবে সবার শাস্তি একই হয়।আমরা চাই অতিসত্বর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মাত্রা বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হোক।
এসময় উপাচার্য সুষ্ঠু তদন্তের নিশ্চিতের ব্যাপারে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন।
উল্লেখ্য, শামীম হত্যা মামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাদী হয়ে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেন সুদীপ্ত শাহীন। সেখানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারী আহসান লাবীবকে ৮ নাম্বার আসামী এবং ইংলিশ বিভাগে শিক্ষার্থী রায়হানকে ৩ নাম্বার আসামী করে গ্রেফতার করা হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর