• ঢাকা
  • ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ৩১ মিনিট পূর্বে
আহসান হাবীব
জাবি থেকে
প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:৪৬ বিকাল
bd24live style=

হাসপাতালে নাকি পুলিশি হেফাজতে শামীম মোল্লার মৃত্যু?

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনি আহত ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লাকে পুলিশ ভ্যানে তুলে দেয়া হয় রাত ৮ টা ৩৫ মিনিটে। পুলিশের ভাষ্যমতে, তাকে সরাসরি হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনি নিস্তেজ হয়ে পড়েন। কিন্তু হাসপাতালের ভাষ্যমতে, শামীমকে তারা মৃত অবস্থায় পেয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইসিজি করা হয়েছে রাত ১০ টা ২৮ মিনিটে৷ হাসপাতালে পৌছানোর সময় বাদ দিলে কী ঘটেছিলো এই দেড় ঘন্টায়?

বুধবার রাত প্রায় সাড়ে ১০ টায় শামীম মোল্লার পরিবারকে মৃত্যুর কথা জানান আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. আবু বকর সিদ্দিক। সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। পরে রাত ১২ টায় গণমাধ্যমে তার মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়।  

তবে নিহত শামীম মোল্লাকে প্রথম ধাপে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থানায় নেয়া হয়েছে বলে জানান তার ভাই শাহীন আলম। ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসায়ী শাহীন আলম বলেন, শামীম মোল্লাকে আটকের খবর পেয়ে আমরা থানায় ছুটে যাই। সেখানে আমাদেরকে শামীমের সাথে দেখা করতে দেয়নি। পরে শুনি তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। সেখানেও পুলিশ আমাদের দেখা করতে দেয়নি। পরে রাতে আমাদের জানানো হয় শামীম মারা গেছে। তার সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলেও মনে হয় ভাই আমার বেঁচে যেত। 

শামীম মোল্লার চাচাতো ভাই মো. জুয়েল বলেন, ‘আমার ভাইকে মারা হয়েছে বিভিন্ন ধাপে ধাপে। প্রথমত প্রান্তিক থেকে নিরাপত্তা অফিস নিয়ে যায়। এরপর সেখানে প্রশাসনিক গাফলতির কারণে দীর্ঘ সময় রাখা হয় এবং ছাত্ররা বিরতি দিয়ে মারধর করতে থাকে। পরে সেখান থেকে থানার ২ নম্বর সেলে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুই জায়গাতেই পরিবারের সদস্যদের দেখা করা থেকে পুলিশ বিরত রাখে। এক পর্যায়ে ভেতর থেকে আমাদের আনঅফিসিয়ালি জানানো হয় শামীম মারা গেছে, কিন্তু দেখা করতে দেয়নি। এমনকি তাকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। গভীর রাতে মৃত্যুর খবর জানানো হয়।’

সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালের জরুরী বিভাগের ইনচার্জ মো. জুয়েলুর রহমান জানান, ‘রাত ৯ টায় হাসপাতালে আনার সময় সে অচেতন ছিল। কনফার্ম করার জন্য আমরা ইসিজি করি। রাত সাড়ে ১০ টায় ইসিজি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে রাত সাড়ে ১২টায় ডেডবডি হস্তান্তর করি। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে মারধরের কালো দাগ ছিলো তবে রক্তপাত বা অস্বাভাবিক কিছু  পাইনি।

গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা ডা. শরিফ স্বাক্ষরিত ইসিজি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, ইসিজির নিচে তারিখ ১৯ আগস্ট ২০২৪ এবং সময় ৮ টা ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড। মৃত্যু সনদে লেখা হয়, Brought Dead to Emergency. (হাসপাতালে মৃত আনা হয়েছে)। এখানে পুলিশের ব্যর্থতা ঢাকতে তারিখ ও সময় ইচ্ছাকৃতভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে শামীম মোল্লার পরিবার। 

তবে থানায় নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। আশুলিয়া থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্য বলেন, শামীম মোল্লাকে প্রথমে থানায় নেওয়ার কোন সুযোগ ছিল না। পুলিশ ভ্যানেই সে ঢলে পড়ে। তাছাড়া জাহাঙ্গীরনগর থেকে আশুলিয়ায় ওয়ার্কিং ডে’তে থানায় যেতে ঘণ্টাখানেক লাগে। আমরা হসপিটালে নিয়েছি ৯ টার সময়। তাই ফিজিক্যালি সেটা সম্ভব না। আর পরিবারকে দেখতে না দেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

তবে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, শামীম মোল্লাকে সাড়ে আটটায় যখন পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়, তখন এক পুলিশ সদস্যের সহায়তায় হেঁটে গাড়িতে ওঠেন। এমনকি এই থানায় যাওয়ার পূর্বে পুলিশ সদস্যের সহায়তায় টয়লেটেও যান। টয়লেটে নিজেই তিনি পরিষ্কার হয়ে আসেন। হাসপাতালে নেয়ার পথে এত দ্রুত মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার বিষয়টি অবিশ্বাস্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, 'আমি তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে পুলিশের সাথে যোগাযোগ করি । পরে পুলিশ আসলে আমি ঢাল হয়ে শামীমকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিই। সেসময় আনুমানিক ৮টা বাজে । সেসময় শামীম আমাদের ঘাড়ে ভর দিয়ে হেঁটে হেঁটে গাড়িতে উঠে বসে। পরে রাত ১০টার পর পুলিশ শামীম মোল্লার মৃত্যুর খবর দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালের দূরত্ব তো খুব বেশি নয়। এই দুই ঘণ্টা শামীম কোথায় ছিল সেটা তদন্ত করে দেখা দরকার।'

এর আগে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ক্যাডার শামীম মোল্লা ওরফে শ্যুটার শামীমকে গত বুধবার বিকেলে প্রান্তিক গেইটে আটক করে ছাত্র-জনতা। পরে সেখান থেকে নিরাপত্তা শাখার হাতে তুলে দেয়া হয়। পরে দুই দফায় সেখানে মারধর করা হয়। এসময় সাবেক ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সেখানে দেখা যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হামলায় জড়িত থাকার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মেহেদি ইকবালসহ আরো কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেন। পরে রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শামীমকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। শামীমকে নিতে আসে আশুলিয়া থানার এস আই অলক কুমার দে-সহ কয়েকজন পুলিশ কন্সটেবল। সেসময় এস আই অলক কুমার দে বলেন, শামীমের নামে চারটি মামলা রয়েছে । হত্যা, মাদক,অস্ত্র মামলা রয়েছে। আমরা তাকে চার মামলায় গ্রেফতার দেখাবো। 

প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম আরো বলেন, অফিসে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে আশঙ্কাজনক মনে হয়নি। এমনকি তিনি নিজে হেঁটে পুলিশের গাড়িতে উঠেছেন। এরকম আসামিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যুবরণ করার বিষয়টি রহস্যজনক। 

এ ব্যাপারে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সত্য উদঘাটিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান। সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, 'আমরা পুলিশ ও নিরাপত্তা শাখার বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। আশা করি সত্য উদঘাটিত হবে।' 

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com