ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারনে পাটলাই নদীর উপর নির্মাণাধীন পাটলাই সেতুটির কাজ দুই বছরের মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও সেই কাজ গত ছয় বছরেও শেষ করতে পারেনি। যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দাসহ সর্বমহলে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদীর ওপর ডাম্পের বাজার থেকে নতুন বাজার সেতুর কাজ চলছে গত ৬ বছর ধরে। পর্যটন স্পষ্ট টাঙ্গুয়ার হাওর, শহীদ সিরাজ লেক,লাকমা ছড়া,বারেকটিলা, যাদুকাটা নদী ও শিমুলবাগানে পর্যটকসহ স্থানীয়দের চলাচল সহজ করতে এই সেতুর নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়।
স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ,পরিবেশ অনুকূলে থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নানান অজুহাতে অনেক সময় কাজ বন্ধ রেখেছিল। শুধু তাই নয় শুরু থেকেই কাজে ধীরগতি ছিল। সেতুটি সম্পূর্ণ না হওয়ায় বর্ষায় ও শুষ্ক মৌসুমে নৌকা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে স্কুল,কলেজের শিক্ষার্থীসহ নানান বয়সে মানুষ জনকে। এতে করে সময় ও টাকা দুটোই নষ্ট হচ্ছে। সেতুটি চালু হলে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেত।
এদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে,সেতুটির কাজ পুরোপুরি কাজ শেষ করতে কম হলেও আরো ছয় মাস সময় লাগবে। অন্যদিকে সচেতন মহল বলছেন,ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে গাফিলতি,কাজের ধীরগতি ও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি না রাখায় এখনও শেষ হয়নি সেতুর কাজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের(এলজিইডি) আওতাধীন ডাম্পের বাজার থেকে নতুন বাজার সেতুর কাজ পায় ২০১৮ সালে তমা কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি অনুযায়ী সাড়ে চারশ মিটার এই সেতুর কাজ ৪৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৮ হাজার ৫৭৯ টাকা ব্যয়ে শেষ করার কথা ২০২১সালের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে জানা গেছে,সেতুর ওপরের দুই পাশের রেলিংয়ের কাজ শেষ হয়নি। দুই পাশের চারশ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ বাকি আছে। এখনও সেতুর ওপরের একটি স্ল্যাবের কাজ বাকি রয়েছে। সেতুতে নয়টি স্ল্যাবের আটটি শেষ হলেও প্রতিটির শুরু ও শেষ অংশ সমান হয়নি। সেতুর কাজ শেষ করতে আরও সময় লাগবে।
এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী বলছে,সেতুটিতে যে কাজ বাকি রয়েছে তা শেষ করতে শুষ্ক মৌসুম লাগবে। এটি শেষ হলে এই এলাকায় পর্যটন স্পষ্ট গুলোতে গতি বাড়বে,কমবে পর্যটকদের ভোগান্তি। অন্যদিকে বাড়বে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকদের আগমনের সংখ্যা।
উত্তর শ্রীপুর গ্রামের বাসিন্দা জামিল মিয়া বলেন,দীর্ঘ দিনের স্বপ্নের সেতুটির কাজ ধীরগতির কারণে যে স্বপ্ন দেখেছিলাম ধীরগতির কারণে তা থমকেও গেছে। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ হয়নি এ কারনে বেড়েছে আমাদের ভোগান্তি। সেতুটি চালু হলে পর্যটন খাতসহ এলাকার ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশনের ইঞ্জিনিয়ার শাখাওয়াত হোসেন বলেন,বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে সেতুর কাজের গতি কিছুটা কমেছে। এছাড়াও প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় সেতু নির্মাণের কাঁচামাল পরিবহনে জটিলতা ছিল। এ ছাড়াও কাজ শুরুর পরে কাঁচামালের দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। আশা করি,দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ হবে।
সুনামগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন,সেতুটি কাজ করতে গিয়ে বছরে তিন থেকে চার মাসের বেশি সময় কাজ করাই যায় না। এ কারণে সময় বেশি লাগছে। বর্তমানে একটি স্ল্যাব ও দুই পাশের অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ বাকি। তবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করে মানুষের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর