
বগুড়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগর তালুকদার ওরফে টোকাই সাগর ও তার সহযোগী স্বপন হোসেন খুনের ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের চারদিন পর বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিহত সাগরের বোন রুখসানা আকতার বর্ষা বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আশেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা হযরত আলীকে প্রধান আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ১০জনকে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়াদুদ আলম। এর আগে, গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের সাবরুল ছোটমন্ডলপাড়ায় একটু পোল্ট্রি ফার্মের সামনে রাস্তার পাশ থেকে শাবরুল এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী স্বেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী সাগর বাহিনীর প্রধান সাগর তালুকদার ও তার সহযোগী স্বপন হোসেনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় অপর এক সহযোগীর কাটা হাতও উদ্ধার করা হয়।
নিহত সাগর তালুকদার শাবরুল হাটখোলাপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে এবং নিহত স্বপন হোসেন একই গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। নিহত সাগর হোসেনের নামে ২টি হত্যাসহ ১৭টিরও বেশি মামলা রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,সাগর তালুকদার ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ে। ২৫/৩০জন সদস্য নিয়ে গঠন করে সন্ত্রাসী বাহিনী। যা সাগর বাহিনী নামে পরিচিতি লাভ করে। জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতার ছত্রছায়ায় শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম ও কাহালু উপজেলার আশপাশে ৩০ গ্রামে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন সাগর তালুকদার। সাবরুল বাজারে সাগরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান মামা-ভাগনে এন্টারপ্রাইজ কার্যত সন্ত্রাসীদের আখড়া। এক দশক ধরে ওই দোকানে বসে নানা অপকর্মে জড়িয়েছেন তিনি। বাড়ি নির্মাণ, জমি কেনা থেকে ব্যবসা সবকিছুতেই চাঁদা দিতে হতো সাগরকে। অর্ধশতাধিক সদস্য নিয়ে গড়ে তোলেন সাগর বাহিনী। মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে চলাফেরা করতেন সাগর। সড়কে মাছের গাড়ি, যানবাহন থেকে শুরু করে জমি চাষের পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর থেকেও চাঁদাবাজি করতেন তাঁরা।
স্থানীয়রা আরো জানান, সন্ত্রাসী সাগর বাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনে এলাকাবাসি দীর্ঘদিন ধরে অতিষ্ঠ হয়ে ছিল। এর আগে শাবরুল এলাকার মাছ ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন বাবু ও প্রভাষক পারভেজ হত্যার মাস্টার মাইন্ড ছিল সাগর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সাগরের আধিপত্য, চাঁদাবাজি, ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ওই এলাকার অন্য গ্রুপ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল। পথের কাটা দূর করতেই কয়েকটি গ্রুপ একসাথে পরিকল্পনা করে সাগরকে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়াদুদ আলম জানান, সাগর ও স্বপন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আশেকপুর ইউপি চেয়ারম্যান হযরত আলীসহ মোট ১৯জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। আসামীদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর