পাবনার ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করার অভিযোগে গ্রেফতার ঈশ্বরদী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পক্ষে রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতে শুনানি করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার। এ নিয়ে জেলাব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইছে। এদিকে পাবনা জেলা বিএনপির এই সদস্য সচিব ২০০৭ দুদকের আইনজীবী হয়েছিলেন এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা কারাদণ্ড দেওয়া বিচারক আখতারুজ্জামানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।
ঈশ্বরদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করার অভিযোগে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগ নেতা ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইউসুফ আলী খানকে গ্রেফতার করে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ। পরেরদিন মঙ্গলবার পাবনার আমলী-২ আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। রিমান্ডের বিরোধিতা করে আদালতে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুকুল বিশ্বাস এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান তাদের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা (জিআরও) মো. ইউসুফ আলী এবং পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন শাহিন।
স্বৈরাচারের দোসর ও ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণকারীর পক্ষে মাসুদ খন্দকারের শুনানির বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। কেউ কেউ তার বহিষ্কার দাবি করেন। মন্তব্যকারীরা বলছেন- ‘এটা নৈতিকতার প্রশ্ন! দীর্ঘদিন ধরে যেই আদর্শ নিয়ে আপনি শীর্ষ পদে থেকে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে লড়াই করলেন, ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করলেন। ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিচারের বাণী শোনাচ্ছেন আবার ফ্যাসিবাদের পক্ষে আদালতে লড়াই করছেন? এটা তামাশা নয়?’
পাবনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন শাহিন বলেন, ‘বিষয়টি শতভাগ সত্য। এখনো রাস্তায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ছাত্র-জনতার রক্তের দাগ শুকায়নি, একটা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হয়ে এরকম একটা মামলায় আইনি প্রটেকশন দিলে নীতি বিমর্জিত মানসিকতা বলে মনে করি।’
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার বলেন, ‘এটা ভিত্তিহীন অভিযোগ। এর কোনো প্রমাণ নেই। এখন যারা আমার ভালো চায় না তারা এবং একটি চক্র দলের মধ্যে এবং দলের বাইরে যারা অন্যের ভালো চায় না তারা এগুলো বলছে।’
এ বিষয়ে নিউজ না করতে নিষেধ করে পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘এটা মিথ্যা কথা। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। সে বলেছে এটা মিথ্যা কথা। এখন যারা এইসব নিয়ে ফেসবুকে লিখছে তাদের বিরুদ্ধেই আমরা ব্যবস্থা নেব।’
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর