কোটা বিরোধী আন্দোলনের পথ ধরে গণ অভ্যুত্থান পরবর্তী চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের লক্ষ্যে আমাদের করণীয় বিষয়ে সংবাদকর্মীদের সাথে মতবিনিময় করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঠাকুরগাঁও জেলার রাণীশংকৈলের নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাণীশংকৈল জামায়াতে ইসলামীর দলীয় কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। উপজেলায় কর্মরত ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা মতবিনিময় সভায় অংশ গ্রহণ করেন। ওই মতবিনিময় সভায় শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিল।
মতবিনিময় সভায় উপজেলা আমীর মাওলানা রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা রজব আলীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা নায়েবে আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রেস ও মিডিয়া সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজালাল জুয়েল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মতিউর রহমান, পৌর আমীর আলহাজ্ব আব্দুল মতিন ও পৌর সাধারণ সম্পাদক মো. মোকাররম হোসেন, রাণীশংকৈল উপজেলার অ্যাসিস্ট্যান্ট সম্পাদক মিন্নাতুল্লাহ পাঠান,উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য রমিজউদ্দিন ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো.রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক বেলাল উদ্দিন বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের চতুর্থ স্তম্ভ। সেই স্তম্ভটা অত্যন্ত মজবুত। কারও চোখের দিকে, মুখের দিকে তাকিয়ে সাংবাদিকতা হয় না। সাংবাদিকতা জিনিসটা একেবারেই ভিন্ন। এখানে তিনটি জিনিস লাগে। একটি হচ্ছে সত্যসন্ধানী মন, দ্বিতীয়টি হচ্ছে সাহস এবং তৃতীয় হচ্ছে যথাযথ সময়ে চেষ্টা। আপনাদের কাছে অনুরোধ আমাকে বা অন্য কাউকে ফেভার বা ডিজফেভার করার প্রয়োজন নেই। আপনাদের কাছে যেটা সত্য সেটাকেই তুলে ধরবেন।
ফ্যাসিবাদ সরকার মুক্ত গণমাধ্যমকে মত প্রকাশে বাধা দিয়ে রেখে ছিল। আজ সাংবাদিকরা ও গণমাধ্যম মুক্ত স্বাধীন। তিনি দল মত নির্বিশেষে সঠিক তথ্য প্রচারের জন্য সকল সাংবাদিকদের আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলাম গত ১৬ বছর তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে। আমরা ভালোবাসা দিয়ে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছাতে পেরেছি।
আসুন ছাত্র শিক্ষক জনতা সাংবাদিক পেশাজীবী, শ্রমিক এক কাতারে এসে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় অগ্রণী হই। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগী হয়ে বাংলাদেশকে শান্তি ও সমৃদ্ধির মডেল হিসেবে উপস্থাপন করি। আমরা সকলে দল মত ভুলে অতীতের বৈষম্যমুলক মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে সকলে মিলে প্রত্যয়ী হই। তাহলে সুফল আসবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন হলেও এর শিকড় রয়ে গেছে।এর উৎপাটন না করা পর্যন্ত আন্দোলনের সুফল ঘরে তোলা সম্ভব হবেনা। এজন্য দেশের সকল স্তরের লোকজনকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তাহলেই সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে পারব। এক্ষেত্রে সংবাদকর্মীদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তারাই পারবে কলমকে শানিত করে মুক্ত লেখনীর মাধ্যমে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে পরাজিত শক্তির অপপ্রচার রোধ করে জাতিকে আশ্বস্ত করতে।
একটি সুশীল, সভ্য, সুস্থ এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে আপনাদের কলম হোক মুক্ত।
বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও তাদের পরামর্শ গ্রহণ এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়সহ নানা ক্ষেত্রে হামলা ও নৈরাজ্য বিষয়ে সৃষ্ট গুজব অপনোদন করে নিরাপত্তার আশ্বাস প্রদানের লক্ষ্যে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে অপরদিকে রাণীশংকৈল খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সকলের সাথে শান্তা কমিউনিটি সেন্টার বিকালে আরেকটি মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দরা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর