সরকারি রিজার্ভের গাছ উজাড়, অসংখ্য বন মামলার আসামি, অবৈধ গরু ব্যবসায়ী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী-বন বিভাগের নামধারী কথিত সোর্স ও চাঁদাবাজ ‘ওমর ফারুক বেচু’ এর নিয়মিত চাঁদাবাজি ও গাছ ব্যবসায়ীদের নামে-বেনামে অভিযোগ করে হয়রানির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে লামার গাছ ব্যবসায়ীরা। রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় লামা প্রেস ক্লাব হলরুমে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জোত মালিক সমিতির নেতা সুলতান আকবর মোমিন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা লামা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গাছ ব্যবসায়ী, বাগান মালিক ও গাছ-বাঁশের জড়িত শ্রমিক। আমরা বাগান মালিকরা দীর্ঘদিন ধরে কষ্ট করে বাগান সৃজন করে বিক্রি করি, কেউ ক্রয় করেন এবং হাজার হাজার শ্রমিকরা এ কাজে শ্রম দিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। লামা উপজেলায় শ্রমজীবী মানুষের গাছ-বাঁশ ছাড়া তেমন কোন পেশা নেই। হাজার মানুষের জীবিকা যেখানে জড়িত সেই সেক্টরটি আজ কতিপয় চাঁদাবাজের দ্বারা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সম্প্রতি সময়ে দেশে যখন পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে সেই সুযোগে মো. ওমর ফারুক প্রকাশ (বেচু), পিতা- মো. দুলাল, সাং- লাইনঝিরি, ৮নং ওয়ার্ড, লামা পৌরসভা কর্তৃক বিভিন্ন সময় লামা বন বিভাগের তৈন রিজার্ভ হতে ফরেস্টার মোজাম্মেল হক এর সহযোগিতায় বিভিন্ন সময় রাতে ও দিনে একদল গাছ কর্তনকারী লেবার এর মাধ্যমে প্রায় ৫০০ গাছ কর্তন করে নিয়ে আসে। যার প্রমাণ স্বরূপ লেবার এর জবানবন্দি আছে। বন বিভাগ কর্তৃক ওমর ফারুক এর বিরুদ্ধে ৬/৭টি বন মামলা করে। বর্তমানে ওমর ফারুক বন মামলা হতে জামিনে আছে। প্রকৃতপক্ষে ওমর ফারুক একজন রিজার্ভ এর গাছ পাচারকারী, ওমর ফারুক প্রতিনিয়ত রিজার্ভের গাছ কর্তন করে বর্তমানে আঙুল ফুলে কলাগাছ এ রুপান্তর হয়েছে। ওমর ফারুক বেচু কিছু দুষ্কৃতকারী লোকজনের সহযোগিতায় বিভিন্ন দপ্তরের মোবাইল নাম্বার, ই-মেইল নাম্বার ও বিভিন্ন কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে, লামা বন বিভাগের বিভিন্ন জোত পারমিট এর তথ্য সংগ্রহ করে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য প্রদান করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যবসায়ী হতে নগদ অর্থ চাঁদা দাবি করেন ও হুমকি প্রদান করিতেছেন। সে বলে যে, আপনারা আমাকে নগদ অর্থ প্রদান না করিলে আমি আপনাদের জোত পারমিট এর বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সিএফ, সিসিএফ এর বরাবরে অভিযোগ করিব। এসব বলে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অভিযোগও করেন এবং নগদ অর্থ প্রদান করিলে তাহা প্রত্যাহার করেন।
বর্তমানে ওমর ফারুক হতে লামা বন বিভাগ এর আওতাধীন বিভিন্ন ব্যবসায়ীর নিকট হতে মাসিক চাঁদা দাবি করে আসছেন আর বলছেন আমি একজন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও লামা বন বিভাগ এর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সোর্স হিসাবে কাজ করি। আমার কথা না মানলে আপনাদের বিরুদ্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তথ্য প্রদান করিব। আজ বিভিন্ন ব্যবসায়ী ওমর ফারুক দ্বারা অতিষ্ঠ হয়ে ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় গৃহহারা। যারা গাছ এর কাজ করেন লেবার হতে শুর করে মানবেতর জীবন যাপন করে আসছেন। আরোও উল্লেখ্য যে, লামা বন বিভাগ এর বিভিন্ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ও অভিযোগ করিয়া নগদ অর্থ গ্রহণ করিয়াছেন যাহার সাক্ষী ও আছে। আজ ওমর ফারুক প্রকাশ্য চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারণ ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকরা নিরুপায়। ওমর ফারুক একজন রিজার্ভ এর গাছ চোর। গাছ চুরি করে চকরিয়া, ডুলহাজারা, ও কক্সবাজার সহ বিভিন্ন রিসোর্টে গাছ প্রদান করে আজ কোটি টাকার মালিক। এই গাছ চোর ও চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা সাংবাদিক সমাজের মাধ্যমে সহযোগিতা কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলন লামা জোত মালিক সমিতির সভাপতি মো. সেলিম, সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশীদ, গাছ ব্যবসায়ী সামশুল ইসলাম, সুলতান আকবর মোমিন, আব্দুল্লাহ আলম মামুন, মো. বাবুল, সাখাওয়াত হোসেন খোকন, ফতেহ আলী, মাহবুবুর রহমান, নেজাম উদ্দিন সহ শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বিকেল ৩টায় গাছ ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সমূহ মিথ্যা উল্লেখ করে একই স্থানে পালটা সংবাদ সম্মেলন করেন ওমর ফারুক বেচু। তিনি বলেন, আমাকে সামাজিক ভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে গাছ ব্যবসায়ীরা এমনটা করেছে। শনিবার আমি ও আমার সন্তানের উপর হামলা করেছে ব্যবসায়ীরা।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর